কাজের খোঁজে: ভিড়ে দূরত্ব-বিধি নেই। মুখে মাস্কও নেই অনেকের। মঙ্গলবার। রণজিৎ নন্দী
রাজ্যে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকা সংক্রমণের মধ্যে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন বেসরকারি ক্ষেত্রের পরিবহণকর্মীরা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান, ভোটকর্মী ও পুলিশ-সহ নির্বাচনের কাজে যুক্ত লোকজনকে নিয়ে তাঁদের ছুটতে হচ্ছে নানা জায়গায়। পরিস্থিতি এখন এমনই যে, উপযুক্ত বিশ্রাম তো দূর, ভোটের কাজে নেওয়া বাস, মিনিবাস ও বিভিন্ন ছোট যানবাহনের চালক এবং কর্মীদের অনেককে গাড়িতেই থাকতে হচ্ছে। অভিযোগ, দৈনিক খাওয়ার খরচ বাবদ প্রাপ্য ১৭০ টাকাও নিয়মিত জুটছে না অনেকের। এ নিয়ে সার্ভে বিল্ডিং এবং আলিপুরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের দফতরে একাধিক বার বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বেসরকারি বাস ও ছোট গাড়ির চালকেরা। যদিও পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের দাবি, ভোটের কাজে বাস বা গাড়ি অধিগ্রহণ করার পরে চালক ও বাসকর্মীদের টাকা কখনও এক লপ্তে, কখনও বা কয়েক দিন পরে মেটানো হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন থেকে বরাদ্দ এলেই বকেয়া মেটানো হচ্ছে।
বাস ও বেসরকারি পরিবহণ-মালিকদের সংগঠনগুলি ভোটের কাজে যোগ দেওয়া চালক ও পরিবহণকর্মীদের প্রথম সারির কর্মী হিসেবে বিবেচনা করে প্রতিষেধক দেওয়ার দাবি তুলেছে। পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা সমস্যার কথা মেনে নিলেও প্রতিষেধক দেওয়ার ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাননি।
বাবুঘাট লাগোয়া মাঠে ২০ দিন ধরে আছেন ক্যানিংয়ের এক মিনিবাস চালক। কাজের প্রয়োজনে কখন বেরোতে হবে, জানেন না তিনি। মাঝে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নির্বাচনের সময়ে দিন তিনেক কাজ জুটেছিল। তার পরে দিন দুয়েক আগে থেকে পুলিশকর্মীদের পরিবহণের কাজ করছেন। কাজ না থাকলে রাতে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি মিললেও ফের ভোরে আসতে হয়। এ দিকে, খোরাকির ১৭০ টাকা প্রতিদিন মিলছে না। তাঁর কথায়, ‘‘ভাড়ার টাকা গুনে বাড়ি থেকে আসা-যাওয়া সম্ভব নয়। তার উপরে ট্রেনে যাতায়াতে সংক্রমণের ভয় আছে।’’
তাঁর মতো আরও অন্তত শ’পাঁচেক বাসকর্মী এবং ছোট গাড়ির চালকের এ ভাবেই দিন কাটছে। কাজের ডাক পেতে ময়দানে নির্বাচন দফতরের অস্থায়ী তাঁবুতে অপেক্ষা করতে হয়। পানীয় জল বা শৌচালয়ের ব্যবস্থা নেই। জেলার অনেক প্রান্তেও একই রকম দুরবস্থার মুখে পড়েছেন পরিবহণকর্মীরা। অনেকেই বাড়ি ফিরে সংক্রমিত হচ্ছেন।
‘অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চালকদের বকেয়া মেটানো নিয়ে সমস্যা আছে। অভিযোগ জানিয়েও ফল মেলেনি।’’ প্রায় একই বক্তব্য ‘বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসুর এবং ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’-এর সম্পাদকের। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ড’-এর সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁদের সংগঠন থেকে ৫০টি গাড়ি দেওয়া হয়েছে ভোটের কাজে। চালকদের প্রাপ্য নিয়ে ক্ষোভের কথা স্বীকার করেছেন তিনিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy