দিল্লিতে বিজেপি-র জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে আলোচনার বিষয়বস্তু বাংলাই।
মন্ত্রী-সেপাই সব জড়ো করে ফেলেছেন। বাকি শুধু ঘুঁটি সাজানো। তার আগে এক মুহূর্তও বিরাম নেই। রাত গড়ালেই রাজ্যে পা রাখতে চলেছেন তিনি। তার আগে দিল্লিতেও দিনভর পশ্চিমবঙ্গ নিয়েই ব্যস্ত থাকছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার রাজধানীতে বিজেপি-র জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে যোগ দিয়েছেন তিনি। তবে সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনার বদলে, এ বারে বৈঠক জুড়ে থাকছে পশ্চিমবঙ্গ, অশম, তামিলনাড়ু, কেরল এবং পুদুচ্চেরি, এই ৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গই আলোচনার সিংহভাগ জুড়ে থাকছে। দিনভর এই বৈঠক চলবে। পশ্চিমবঙ্গে দলের রণকৌশল কী হওয়া উচিত, তা নিয়ে বিশদে আলোচনা হবে। সেখানে নিজের মতামতও জানাবেন মোদী।
রবিবারের বৈঠকে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা-সহ কেন্দ্রীয় নেতারা তো বটেই, সব রাজ্যের পর্যবেক্ষক, সভাপতি এবং উচ্চপদস্থ নেতারা হাজির থাকছেন। পশ্চিমবঙ্গকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে সেখানে। তার জন্য বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল এ রাজ্যে বিজেপি-র সভাপতি দিলীপ ঘোষকেও। কিন্তু হুগলির সাহাগঞ্জে মোদীর সফরের প্রস্তুতি দেখতে এই মুহূর্তে ব্যস্ত তিনি। তা ছাড়া নির্বাচনী দায়-দায়িত্বও রয়েছে। সে কারণে বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি তিনি। তাঁর বদলে রাজ্য বিজেপি-র হয়ে বৈঠকে প্রতিনিধিত্ব করার কথা পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর।
তবে যোগ দিতে না গেলেও রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের কান থাকবে মোদীর বৈঠকে। দিলীপ নিজেও প্রতি মুহূর্তের খবর রাখছেন। আনন্দবাজার ডিজিটালকে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের ভোট পরিস্থিতি নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি। তাই বৈঠকে যেতে পারিনি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছ থেকে সেই মর্মে অনুমতিও নিয়েছি। বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে দিক নির্দেশ করবেন নরেন্দ্র মোদী। ওঁর কথা মেনে চলাই কাজ আমাদের। আগামী দিনেও ওঁর কথামতোই চলব।’’
২০১৪-য় কেন্দ্রে ক্ষমতাদখলের পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গের উপর নজর আটকে বিজেপি নেতৃত্বের। ২০১৬-য় রাজ্যে দলের ভিত মজবুত করে সেই লক্ষ্যে খানিকটা এগোলেও, ক্ষমতাদখলের স্বপ্ন অধরাই থেকে গিয়েছিল। কিন্তু ’২১-এর আগে নীলবাড়ি দখলের লক্ষ্যে জমি অনেকটাই শক্ত করে ফেলতে পেরেছেন তাঁরা। তার জন্য তৃণমূল ভাঙিয়ে দলভারি করতেও দ্বিধা করেননি। কিন্তু তাতেও স্বস্তি পাচ্ছেন না মোদী-শাহ। ক’দিন অন্তরই দু’জনের রাজ্যসফরই তার সাক্ষীবহ।
সম্প্রতি কলকাতায় এসে যা নিয়ে অকপট ছিলেন শাহ নিজেও। সাফ জবাব ছিল তাঁর, পশ্চিমবঙ্গ শুধু উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বারই নয়, এ রাজ্যে একাধিক আন্তর্জাতিক সীমান্তরেখাও রয়েছে। যে কারণে পশ্চিমবঙ্গকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন তাঁরা। দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠককে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের নীল নকশা তৈরির কাজে লাগিয়ে, মোদী-শাহ দলের রাজ্য নেতৃত্বকেও সেই গুরুত্ব বোঝাতে চাইছেন বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞজদের।
পশ্চিমবঙ্গের মতো এ বার অসমও গুরুত্বপূর্ণ বিজেপি-র কাছে। জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)-র খসড়া থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষের নাম বাদ যাওয়ায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে সেখানে। তাদের টেক্কা দিতে রাতারাতি অনেক আঞ্চলিক দলও গজিয়ে উঠেছে। তাই অসমের নির্বাচন এ বারে বিজেপি-র সম্মান বাঁচানোর লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy