এই ফলাফল আর বদলাবে বলে মনে হয় না। তৃণমূলের ভোট ৪৮ শতাংশের আশপাশে থাকবে। এর মানে অবশ্যই তারা ২০০ পার করছে এবং বিজেপি ৮০-র আশেপাশে। খুব হাওয়া ঘুরলেও বিজেপি-র ১০০ পেরোনো শক্ত, অর্থাৎ প্রশান্ত কিশোর বাজিমাত করলেন। আর দিদি এই নির্বাচনের বাজিগর। তিনি হারলেন কী জিতলেন তাতে কিচ্ছু আসে যায় না। বরং তিনি যে লড়াইটা সামনে থেকে লড়লেন তাতে আগামী লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর বিরোধী মুখ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ল তাঁর।
গোটা দেশে পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে বিজেপি-র ফলাফল মোটেই আশাব্যঞ্জক নয়। সামনে পঞ্জাব বিধানসভায় তাঁদের ফল ভাল হওয়ার সম্ভাবনা কম। তারপর উত্তরপ্রদেশে বিজেপির আসল লড়াই। যে দলটাকে গোটা দেশে অপ্রতিরোধ্য মনে হচ্ছিল, তারা কিন্তু ২০২১ সালের মাঝামাঝি বেশ অস্বস্তিতে। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, ছোট্ট রাজ্য পদুচেরিও বুঝিয়ে দিয়েছে অন্য দলের লোক ভাঙিয়ে ক্ষমতায় আসা সংসদীয় রাজনীতির মূল অস্ত্র নয়। পুরনো বিজেপি এবং আরএসএস কর্মীদের গুরুত্ব কমা বিশ্বের সর্ববৃহৎ দলের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করছে তা বলাই বাহুল্য। তবে তাঁরা সংগঠিত দল, নিজেদের সমস্যা নিশ্চয় নিজেরা বুঝবেন। তার জন্যে নিরপেক্ষ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের জ্ঞান দেওয়ার দরকার নেই।
শেষ করতে হবে বামপন্থী যুবক যুবতীদের কথা উল্লেখ করে। এই নির্বাচনে খুব খেটেছেন তাঁরা। আসন বা ভোট শতাংশের ফলাফল আসেনি। এতে হতাশ হলে সংসদীয় রাজনীতির সবটুকুই তো পাটিগণিত হয়ে যাবে, রসায়ন আর থাকবে না। তাই মনে রাখতে হবে, কোভিড পরিস্থিতিতে প্রচুর মানুষের ভালবাসা অর্জন করেছেন এই অল্পবয়সী ছেলেমেয়েগুলো। নির্বাচনী জয় পরাজয় নিয়ে আলোচনা পরে হবে। শ্রমজীবী ক্যান্টিন থেকে কোভিড যোদ্ধা হিসেবে আপনাদের লড়াই সাধারণ মানুষ নজর রাখছেন।
শুধু বাংলার সিপিএম কত আসন জিতছে তা দিয়ে তো আর বামপন্থীদের বিচার হবে না, সেখানে প্রেক্ষিত অনেক বড়। আজকে পশ্চিমবঙ্গীয় বামপন্থীদের জায়গা নিয়েছে তৃণমূল, আর কেরলে পরপর দু’বার জিতে ইতিহাস সৃষ্টি করতে চলেছে বামফ্রন্ট। তাই তৃণমূলের যে সমর্থক এবং নেতানেত্রীরা আবিরে মাতছেন, তাঁদের আরও একবার মনে করিয়ে দেওয়া যাক, সামনের সময় ভীষণ কঠিন। মানুষ যে দাবি নিয়ে আপনাদের জিতিয়েছেন, তার গভীরতা কম নয়। তাই দায়িত্ব অনেক বাড়ল আপনাদের। আপাতত ভোটফল মলাট দিয়ে রাজ্যের মানুষকে কোভিডমুক্ত করার লড়াইয়ে নামুক রাজ্যের শাসক দল। আপনাদের জনমুখী কাজে অক্সিজেন যেন কম না পড়ে। তার জন্যে প্রয়োজনে লাল স্বেচ্ছাসেবকদের সাথী হোন অতিমারি মোকাবিলায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy