ভাস্কর ভট্টাচার্য এবং কেশবপ্রসাদ মৌর্য । নিজস্ব চিত্র
মেদিনীপুরের ‘রোড শো’-তে যোগ দিতে এসে মঙ্গলবার অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, প্রার্থী নিয়ে দলের অন্দরে কোথাও কোনও ক্ষোভ থাকলে তিনি সামলে নেবেন। বুধবার সেই ‘সামলে নেওয়ার’ কাজ শুরু করল বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। হুগলির টিকিট না পাওয়া বিজেপি নেতা ভাস্কর ভট্টাচার্যেরর মান ভাঙাতে তাঁর বাড়িতে হাজির হলেন উত্তরপ্রদেশের বিজেপি উপমুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য।
বিজেপি প্রার্থী না করায় অভিমানে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন রাজ্য কমিটির সদস্য তথা উত্তর শহরতলীর পর্যবেক্ষেক ভাস্কর। গত ১৬ মার্চ রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে চিঠি লিখে পদত্যাগের কথা জানান। চিঠিতে লেখেন, ‘চাঁপদানী বা শ্রীরামপুরে আমাকে এ বার দল টিকিট দেবে এমনটা ভেবেছিলাম। কিন্তু এমনটা যেটা কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারিনি।’’ প্রসঙ্গত, ভাস্করকে টিকিট না দিয়ে বিজেপি শ্রীরামপুরে প্রার্থী করে কবীরশঙ্কর বসুকে। চাঁপদানীতে প্রার্থী করে দিলীপ সিংকে। দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, তাঁর মূল ক্ষোভ এখানেই।
ভাস্কর চিঠিতে জানান, ২১ বছর ধরে বিজেপি করে এ বার বিধানসভা ভোটে প্রার্থী না হতে পারা তাঁর কাছে খুব দুর্ভাগ্যের। যাঁদের প্রার্থী করা হল তাঁদের থেকে যোগ্যতায় অনেক এগিয়ে থাকলেও দল তাংকে বিমুখ করেছে। তাই তিনি দল ছাড়লেন। প্রার্থী ঘোষণার পর বিভিন্ন জায়গায় ক্ষোভ দেখা যায় দলের পুরোনো কর্মী-নেতাদের। সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়ে টিকিট পেয়েছেন উত্তরপাড়ার প্রবীর ঘোষাল, সিঙ্গুরের রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সপ্তগ্রামের দেবব্রত বিশ্বাসরা। ফলে বিভিন্ন জায়গায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ মারাত্মক আকার নেয়। কেউ কেউ নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।
এই ক্ষোভ ভোটের আগে হাওয়া ‘বিপরীত’ দিকে ঘোরাতে পারে, বুঝতে পেরেই ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতারা। বুধবার বিকেলে শ্রীরামপুরে ভাস্কর ভট্টাচার্যের ফ্ল্যাটে যান উত্তরপ্রদেশ বিজেপি- প্রাক্তন সভাপতি কেশব। সঙ্গে ছিলেন, দলের জেলা সভাপতি শ্যামল বসু। প্রায় এক ঘন্টা আলোচনার পর কেশব বলেন, ‘‘ভাস্করদা আমাদের পুরোনো নেতা। অনেক সময় এমন হয়, যা চাওয়া হয় তা সময়ে মেলে না। বিজেপি-তে সাংসদ-বিধায়ক না হতে পারলেও অন্য কিছু হওয়ার রাস্তা বন্ধ হয় না। মান অভিমান থাকতে পারে পুরোনো নেতা-কর্মীদের। অনেক সময় আমরা লোকসভা-বিধানসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অপেক্ষা করি। সব সময় তা হয় না। কিন্তু দলের নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের উপর ভরসা করি। তাঁরা যা করবেন, সেটা ভালোর জন্যই।’’
ভাস্কর বলেন, ‘‘কেশবজির মত নেতা আমার বাড়িতে এসে যখন বললেন, আমি তাঁদের সঙ্গেই আছি তখন আর কী বলার থাকতে পারে! সাময়িক একটা অভিমান হয়েছিল।’’ ভাস্করের দাবি, দলের প্রার্থী না করা নিয়ে তাঁর ক্ষোভ সঠিক ছিল বলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মেনে নিয়েছে। কেশব বেরিয়ে যাওয়ার পর জেলা সভাপতি শ্যামলের সঙ্গে দলের কাজে বেরিয়ে যান ভাস্কর।
মানভঞ্জনের এই ঘটনা প্রসঙ্গে শ্রীরামপুর শহর তৃণমূলের সহ-সভাপতি সন্তোষ সিংহ বলেন, ‘‘ওঁর দল উনি ছেড়েছিলেন। আবার আজ বিজেপি নেতারা ওনাকে মানাতে এসেছেন। তবে শুনলাম মন থেকে ভাস্করদা দলে ফেরেননি। সকলে বুঝে গিয়েছেন বিজেপি এ বার হেরে ভূত হবে। তাই অনেক নেতাই ধরি মাছ না ছুঁই পানি করে দলে থাকছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy