মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শিশির অধিকারী ও শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র
নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রার্থী হওয়া মেনে নিতে পারছে না কাঁথির ‘শান্তিকুঞ্জ’। শনিবার বিজেপি নেত্রী তথা হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সামনে তা নিয়ে আক্ষেপ করেছেন প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর বাবা। শিশিরের দাবি, মমতা শুভেন্দুকে ‘রাজনৈতিক ভাবে শেষ করে’ দিতে চান। সে কারণেই তিনি কলকাতার গণ্ডি ছাড়িয়ে সটান নন্দীগ্রামে প্রার্থী হয়েছেন।
শনিবার ‘মোদীর দূত’ হিসেবে শুভেন্দুর বাড়ি ‘শান্তিকুঞ্জ’-এ গিয়েছিলেন লকেট। সেখানে আধ ঘণ্টা ছিলেন তিনি। তার মধ্যে সারেন মধ্যাহ্নভোজও। হুগলির বিজেপি সাংসদের দাবি, ৩০ মিনিটের মধ্যে কিছুটা সময় গল্পগুজব বাদ দিলে বাকি সময়টা না কি চলে গিয়েছে খাওয়াদাওয়ায়। সেই ‘গল্পগুজব’-এর একটি আংশিক ভিডিয়ো আনন্দবাজার ডিজিটালের হাতে এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, লকেট মধ্যাহ্নভোজ সারছেন। সামনে বসে ‘শান্তিকুঞ্জ’-এর গৃহকর্তা শিশির। খাওয়ার সময় মমতার কথা টেনে এনে লকেট শিশিরকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘উনি ডিশিসনটা নিলেন কেন নন্দীগ্রামে দাঁড়ানোর?’’ লকেটের প্রশ্ন শুনে কালক্ষেপ না করে কিছুটা হতাশার সুরেই শিশির জবাব দেন, ‘‘শুভেন্দুকে শেষ করা! আমি বেঁচে থেকে ওকে শেষ করে দিতে চাই! ও আমার অভিষেককে শেষ করবে!’’ এর পর আশপাশের শব্দে কয়েক মুহূর্তের জন্য চাপা পড়ে যায় দু’জনের কথোপকথন। পরে লকেটের উদ্দেশে শিশির আরও বলেন, ‘‘সম্পর্ক কেমন ছিল জান তো। খুব ভাল করেই জান। যেটা করেছে ওটা...ভয় দেখাচ্ছিল।...ভয় দেখাচ্ছিল। শুভেন্দু যাতে সরে পালিয়ে যায়...।’’
শনিবার শিশিরের সঙ্গে সাক্ষাতে রাজনীতির কথা উঠেছিল কি না, সে প্রশ্নের জবাবে লকেট বলেছেন, ‘‘রাজনীতির কথা তো বলতে যাইনি। কোনও দিন শান্তিকুঞ্জে যাইনি। প্রথমবার গেলাম। আমার খুব ভাল লেগেছে। বাড়ির সবাই খুবই আন্তরিক। শুভেন্দু’দা ছাড়া সবাই ছিলেন। ছোটরাও সবাই ছিল। আমার সঙ্গে সবাই মিলে গ্রুপ ছবিও তুলেছে।’’ কিন্তু লকেটের ‘শান্তিুকুঞ্জ’ সফরের যে ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে শিশিরের বক্তব্য খুব কম করে বললেও ‘চাঞ্চল্যকর’। শিশিরের এই বক্তব্যের পর তৃণমূল তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কঠোর ব্যবস্থা নেয় কি না, নাকি বিষয়টি উপেক্ষা করে, সেটাই এখন দেখার।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ জানুয়ারি তেখালির জনসভা থেকে তৃণমূলনেত্রী মমতা নন্দীগ্রাম থেকে তাঁর প্রার্থী হওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। কলকাতার গণ্ডি ছাড়িয়ে বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হওয়ার পিছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রথমত, নন্দীগ্রাম তৃণমূলের জমি আন্দোলনের অন্যতম ধাত্রীভূমি। দ্বিতীয়ত, বিজেপি নেতা শুভেন্দুর ‘গড়’ থেকে প্রার্থী হয়ে বিরোধীদের বার্তা দেওয়া। তৃতীয়ত, নন্দীগ্রামের মতো কেন্দ্র বেছে নিয়ে বিধানসভা ভোটের লড়াইয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার বার্তা দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া। তৃণমূলের দাবি, ওই সিদ্ধান্ত মমতার ‘মাস্ট্রারস্ট্রোক’। কিন্তু শিশিরের কথায় স্পষ্ট, মমতা-শুভেন্দু দ্বৈরথকে তিনি কী চোখে দেখছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy