বিজেপি শিশিরকে ‘সম্মানজনক পুনর্বাসন’ দিতে চায় বলে খবর।
প্রবীণ রাজনীতিক তথা সাংসদ শিশির অধিকারীকে রাজ্যপাল করার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে এই খবর মিলেছে। সূত্রের খবর, দেশের পূর্বাঞ্চলে পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া দু’টি রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের ভাবনায় রয়েছে। শিশির নিজে ওই বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানেন না। তবে তাঁর কাছে রাজ্যপাল হওয়ার প্রস্তাব এলে তিনি তা ফেরাবেন না বলেই তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রের বক্তব্য।
শিশিরের বয়স ৮০ পেরিয়েছে। কিন্তু শারীরিক ভাবে তিনি এখনও যথেষ্ট শক্তসমর্থ। পাশাপাশিই, রাজনৈতিক ভাবেও তিনি সক্রিয়। মেজো পুত্র শুভেন্দু বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে শিশিরের দূরত্ব বাড়ছিল। কিছুদিন আগেই কাঁথিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায় গিয়ে সেই দূরত্ব অনতিক্রম্য করে ফেলেছেন শিশির। অর্থাৎ, তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর সংশ্রব পাকাপাকি ভাবে ছিন্ন হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শিশির সাংসদ রয়েছেন বটে। কিন্তু রাজ্যে বিধানসভা ভোট মিটলে তৃণমূল তাঁর সাংসদপদ খারিজের জন্য লোকসভার স্পিকারের কাছে আবেদন জানাবে— এমন আলোচনাও শুরু হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে বিজেপি শিশিরকে ‘সম্মানজনক পুনর্বাসন’ দিতে চায় বলেই সূত্রের খবর। সেই কারণেই তাঁকে রাজ্যপাল করার ভাবনা। ঘটনাচক্রে, এই ভাবনা এখন নয়, অনেক আগেই শুরু হয়েছিল। এমনও ঠিক ছিল যে, আগামী অগস্টে পূর্বাঞ্চলের একটি রাজ্যের রাজ্যপালের মেয়াদ শেষ হলে শিশিরকে সেখানেই রাজ্যপাল করে পাঠানো হবে। বিজেপি-র এক কেন্দ্রীয় নেতার বক্তব্য, ‘‘ওঁর বয়স হয়েছে। এই অবস্থায় ওঁকে আর কোনও রাজনৈতিক বিড়ম্বনায় পড়তে হোক, সেটা আমরা চাই না। এমন প্রবীণ এবং অভিজ্ঞ রাজনীতিক যে রাজ্যের রাজ্যপাল হবেন, সেই রাজ্যই তাঁর প্রজ্ঞা থেকে লাভবান হবে। আমরা সেই পথেই এগোচ্ছি।’’ এই বক্তব্যের একপিঠে যেমন রয়েছে শিশিরের সম্মানজনক পুরনর্বাসন, তেমনই অন্যপিঠে রয়েছে কাঁথি আসনটি সরকারি ভাবে বিজেপি-র খাতায় নিয়ে আসা।
শিশিরকে যদি শেষপর্যন্ত রাজ্যপাল করা হয়, তা হলে তাঁকে কাঁথির সাংসদের পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় যে প্রশ্নটি রাজনৈতিক মহলে ঘুরপাক খেতে শুরু করবে— কাঁথি আসনে যে উপনির্বাচন হবে, তাতে বিজেপি-র হয়ে কে দাঁড়াবেন। এই প্রশ্নের জবাবে বিজেপি-র নেতারা আনুষ্ঠানিক ভাবে বলছেন, ‘‘দল যাঁকে কাঁথি আসনে মনোননয় দেবে, তিনিই সেখানে সাংসদ হওয়ার ভোটে লড়বেন।’’ কিন্তু একান্ত আলোচনায় তাঁদের একাংশ জানাচ্ছে, ওই আসনে লড়তে পারেন শিশিরের ছোটপুত্র সৌম্যেন্দু। যিনি এই সেদিন পর্যন্তও কাঁথি পুরসভার প্রধান প্রশাসক ছিলেন। শুভেন্দু বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর যাঁকে ওই পদ থেকে সরকারি নির্দেশে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং তার অব্যবহিত পরেই তিনি বিজেপি-তে যোগ দেন।
ফলে সৌম্যেন্দুকেও ‘পুনর্বাসন’ দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সেদিক দিয়ে কাঁথির সাংসদপদের চেয়ে তাঁর পক্ষে ভাল আর কিছু হতে পারে না। কারণ, সৌম্যেন্দু জিতলে একদিকে আসনটি যেমন অধিকারী পরিবারের হাতেই থাকবে, তেমনই অন্যদিকে বিজেপি-রও রাজ্যে ‘সরকারি ভাবে’ একটি আসন বাড়বে। শিশির কাঁথি আসন ছেড়ে দিয়ে রাজ্যপাল হলে সেখানে সৌম্যেন্দু দাঁড়াবেন কি না, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তবে কাঁথি আসনে অধিকারী পরিবাবের যে ‘প্রভাব’ রয়েছে, তা-ও বিজেপি-র পক্ষে অস্বীকার করা সম্ভব নয়। বরং সেটি তাঁরা কাজে লাগাতেই চাইবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy