Advertisement
২১ নভেম্বর ২০২৪
CPM

Bengal elections: লোকসভা থেকে বিধানসভা, দেশের আইনসভায় শূন্যে চলে গেল বাংলার সিপিএম

সাড়ে তিন দশকের রাজপাট কি তবে ইতিহাস হয়ে যাবে বাংলায়, আত্মসমীক্ষা করেও কি সামাল দেওয়া যাবে ভরাডুবি, উত্তর খুঁজছেন অনেকেই।

২০২১-এ সাফ সিপিএম।

২০২১-এ সাফ সিপিএম।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২১ ১৪:৩৫
Share: Save:

লাল পতাকায় ছেয়ে যাওয়া ব্রিগেড, বুদ্ধ-সঞ্জীবনী, কোনও কিছুই কাজে এল না। নীলবাড়ির লড়াইয়ে শূন্য হাতেই ফিরতে হল সিপিএম-কে। ভোটপ্রাপ্তিতে এক দিকে যখন উপচে পড়ছে তৃণমূলের ঝুলি, বলতে গেলে ‘উড়ে এসে জুড়ে বসে’ ৭০-এর বেশি আসন নিয়ে যখন প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকায় বিজেপি, সেই সময় রাজ্য বিধানসভায় জায়গাই পেল না সিপিএম। শুধু রাজ্য বিধানসভা নয় লোকসভা, রাজ্যসভা-সহ কেন্দ্রীয় আইনসভাতেও এই মুহূর্তে অস্তিত্বহীন বাংলার সিপিএম।

১০ বছর আগে লাল দুর্গ ভেঙে পড়ার পর ২০১৬-র নির্বাচনে সাকুল্যে ২৬টি আসন পেয়ে বিরোধী দলের শিরোপাও হারায় সিপিএম। ৪৪টি আসন পেয়ে তাদের টপকে যায় কংগ্রেস। ২০১৮-য় শাসকদলের বিরুদ্ধে গায়ের জোরে ভোট করানোর অভিযোগ উঠলেও, সে বার সিপিএম এবং কংগ্রেসকে টপকে দু’নম্বরে উঠে আসে বিজেপি। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনেও শূন্য আসন পায় সিপিএম। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেন, বরং তাদের ভোট ভাঙিয়েই রাজ্যে ১৮টি আসন জেতে বিজেপি। কোনও বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়েও থাকতে পারেনি তারা। সেই সময় খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটবাক্স ‘ঘর’ সামলানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন সিপিএম-কে।

কিন্তু তাতেও যে বোধোদয় হয়নি, রবিবার ভোটের ফলাফলেই তা স্পষ্ট। কংগ্রেস এবং আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর সঙ্গে জোট বেঁধে যখন ফেব্রুয়ারি মাসে ব্রিগেডে লাল আবেগে ভাসছেন দলের নেতারা, তখনই পই পই করে তাঁদের সতর্ক করেছিলেন দলের শুভাকাঙ্খীরা। আইএসএফ-এর সঙ্গে হাত মেলানো নিয়ে দলের অন্দরেও দ্বিমত ছিল। কিন্তু তা কানে তোলার বদলে কংগ্রেস এবং আইএসএফ-এর মধ্যে মধ্যস্থতায় বেশি তৎপর ছিলেন দলীয় নেতৃত্ব।

তাই বাম শরিক দলগুলি থেকে মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, ঐশী ঘোষ এবং শতরূপ সান্যালের মতো তরুণ মুখ সামনে আনাটাও খানিকটা সমালোচনা সামাল দেওয়ার চেষ্টা বলেই মনে হতে শুরু করে। কিন্তু সমালোচনা শেষ পর্যন্ত সামাল দেওয়া গেল কি? নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারীর মতো ওজনদার প্রার্থীদের বিরুদ্ধে মাত্র ৬ হাজার ভোট পেয়েছে মিনাক্ষী। দিল্লির ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করলেও, বাংলার রাজনীতিতে আনকোরা ঐশীও জামুড়িয়ায় পরাজিত হয়েছেন। তাতে দিনের শেষে সিপিএম-এর ভাঁড়ার শূন্যই রয়ে গিয়েছে। তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার মাত্র ৪.৭২ শতাংশ। বাম শরিক সিপিআই মাত্র ০.২০ শতাংশ ভোট পেয়েছে।

অথচ যে সময় বাংলার রাজনীতি থেকে নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে সিপিএম, রবিবার সেখানে সম্পূর্ণ অন্য ছবি ধরা পড়েছে। সেখানে কেরলে দ্বিতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন পিনারাই বিজয়ন। তাঁর নেতৃত্বে ৬২টি আসন পেয়েছে সিপিএম। সিপিআই পেয়েছে ১৭টি আসন। বঙ্গে বিপর্যয়ের জন্য যদিও মেরুকরণের রাজনীতিকেই দুষছেন দলের নেতারা। তাঁদের অভিযোগ, তৃণমূল, বিজেপি, দুই দলই মেরুকরণের রাজনীতি করে। তার মধ্যে মন্দের ভালকে বেছে নিয়েছেন সাধারণ মানুষ। বিজেপি-কে আটকাতেই তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন সকলে। ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর বিবিৃতি প্রকাশ করে আত্মসমীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছেন বিমান বসু। কিন্তু তাতেও কি হৃত গৌরব উদ্ধার করা যাবে, সন্দিহান সমাজের একটা বড় অংশের মানুষ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy