Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
Rajib Banerjee

Bengal Polls: সকাল থেকে ‘চেনা মাটি’ চষে ফেললেন রাজীব

শাসকদলে থাকার সময়ে পাকুড়িয়ার একটি বাড়িতে অফিস ছিল রাজীবের। দলত্যাগের পরে ত্যাগ করতে হয়েছে সেই বাড়িও।

নজরে: দলীয় কার্যালয়ে বসে ভোটের খোঁজখবর নিচ্ছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার, ডোমজুড়ে।

নজরে: দলীয় কার্যালয়ে বসে ভোটের খোঁজখবর নিচ্ছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার, ডোমজুড়ে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।

শান্তনু ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৩২
Share: Save:

দীর্ঘ দশ বছরে বিভিন্ন ভোটের দিন কার্যত কন্ট্রোল রুমে বসেই তাঁর সময় কেটেছে। কিন্তু এ বার শিবির পরিবর্তনের সঙ্গে বদলেছে সেই পরিস্থিতিও। ‘ডোমজুড় পরিবার’-এর মন বুঝতে তাই নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গায় ছুটলেন পদ্ম শিবিরের রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। মাঝের কিছু ক্ষণ অবশ্য কাটালেন ‘ওয়ার রুম’-এ।

শাসকদলে থাকার সময়ে পাকুড়িয়ার একটি বাড়িতে অফিস ছিল রাজীবের। দলত্যাগের পরে ত্যাগ করতে হয়েছে সেই বাড়িও। কিন্তু মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে নেমে ডোমজুড় যেমন তিনি ছাড়েননি, তেমনই অফিসও রেখেছেন পাকুড়িয়াতেই। তা-ও আবার অতীতের অফিসের ঠিক উল্টো দিকে। শনিবার সকাল ৯টা নাগাদ সেখানে এসেই রাজীব বললেন, ‘‘এখানকার মাটি আমি চিনি। তাই ডোমজুড়ে আমার প্রত্যাবর্তন এবং সরকারের পরিবর্তন হবে।’’ ওয়ার-রুমে বসেই নাগাড়ে ফোনে খবর নিলেন বিভিন্ন এলাকার। মাঝে মুড়ি-চানাচুরে সারলেন জলখাবার। তার ফাঁকে বললেন, ‘‘বাঁকড়া, সলপের কয়েকটি বুথে এজেন্টদের বসতে দিচ্ছে না, মারধর করছে। ছাপ্পার চেষ্টা চলছে।’’

সকালের দিকে রাজীব অফিসে বসে থাকায় তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘এ বার একেবারে বাড়ি চলে যাবে। যেমনটা ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটে আমার সঙ্গে করেছিল।’’ বেলা সাড়ে ১১টার পরে অবশ্য রাজীব আর অফিসে থাকেননি। পাকুড়িয়া থেকে বেরিয়ে বাঁকড়া নয়াবাজ, শরৎপল্লি, রাজীবপল্লিতে যান। সেখানে গিয়ে কর্মীদের পাশাপাশি কথা বলেন বাসিন্দাদের সঙ্গেও। তাঁদের বলেন, ‘‘সকলে ভোট দিতে যাবেন। মার খেলেও এজেন্টরা যেন বুথ না ছাড়েন।’’ এ দিনও কিছু জায়গায় রাজীবকে দেখে এগিয়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। যূথিকা ব্রহ্ম নামে এক বৃদ্ধা তাঁকে জড়িয়ে ধরে বলেন, ‘‘তুমি ভাল ছেলে। তোমার ভাল হবে।’’

সলপ ঘুরে পৌনে তিনটে নাগাদ ফের পাকুড়িয়ায় আসেন রাজীব। ফোনে কথা বলেন হাওড়ার বিজেপি প্রার্থীদের সঙ্গে। শুভেন্দু অধিকারীও ফোন করে খবর নেন সতীর্থের। কিছু ক্ষণের বিরতির পরে বিকেলে ফের বেরোন রাজীব। এ বার এমন চরকিপাক কেন? কোনও চাপ? ‘‘গত বার সংখ্যালঘু ভোট পুরো ছিল। এ বারে ততটা নয়। সেটা মাইনাস ধরেই লড়াই চালাতে চাপ তো একটা আছেই,’’ মন্তব্য রাজীবের।

সারা দিন ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণ হলেও বাঁকড়ার দু’টি বুথ ‘রাজীব-বাহিনী’ দখল করেছে বলে অভিযোগ তোলেন কল্যাণ। তিনি আরও বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনীকে উনি প্রভাবিত করেছেন। উত্তর নিবড়ার প্রিয়ময়ী প্রাথমিক বিদ্যালয় দখল করতে গিয়ে বাধা পেয়ে আমাদের কর্মীদের মারধর ও বাড়ি ভাঙচুর করেছে।’’ এ দিন সকাল সাতটায় নিজের ভোট দেওয়ার পরেই ডোমজুড়ের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে যান কল্যাণ। বললেন, ‘‘আমি কোথাও বসে থাকিনি। কারণ, তা হলে উনি (রাজীব) সাধারণের গণতন্ত্র লুট করতেন।’’

তৃণমূলের লোকজন গণতন্ত্র লুটের চেষ্টা চালাচ্ছে বলেই এ দিন পড়ন্ত বিকেলে বেলুড়ের সিপিএম কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে অভিযোগ করলেন বালির সিপিএম প্রার্থী দীপ্সিতা ধর। কিছু ক্ষণ আগেই তাঁদের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। একই ভাবে ভোটারদের ভয় দেখানো এবং বুথ দখলের অভিযোগ তুলে বিজেপি-র বৈশালী ডালমিয়ার দাবি, ‘‘মানুষকে ভয় দেখিয়েও ওরা সুবিধা করতে পারবে না।’’ সকলের অভিযোগ শুনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বসে জোড়া ফুলের রানা চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘বহু দিন ধরেই রাজনৈতিক নাটক দেখতে অভ্যস্ত। ছোটখাটো বিষয় ছাড়া ভোট কিন্তু শান্তিপূর্ণ হয়েছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy