চন্দননগর মহকুমাশাসকের দফতরে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। —নিজস্ব চিত্র।
প্রার্থী হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই ক্ষোভ শুরু হয়েছিল দলের অন্দরে। তবে সে সব এখন অতীত! অবশেষে সিঙ্গুর বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য গেরুয়া শিবিরের হয়ে মনোনয়ন জমা দিলেন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। সোমবার চন্দননগর মহকুমাশাসকের দফতরে গিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন দলের সেই ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতা-কর্মীরা, যাঁরা তাঁর প্রার্থী হওয়া নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন।
সিঙ্গুর বিধানসভা কেন্দ্রে গত ৪ বারের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথের মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল, তা কেটে যেতেই লড়াইয়ের প্রস্ততি জোরদার করেছে বিজেপি।
জমি আন্দোলনের অন্যতম ভরকেন্দ্র বলে পরিচিত সিঙ্গুরে প্রার্থীপদ নিয়ে যে এমন প্রতিরোধের মুখে পড়তে হবে, তা বোধ হয় ভাবতেও পারেননি বিজেপি নেতৃত্ব। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রিয় ‘মাস্টারমশাই’ এলাকারও অত্যন্ত জনপ্রিয় মুখ। তৃণমূলে কয়েক জন স্থানীয় নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলেও রবীন্দ্রনাথের ভাবমূর্তি বরাবরই তার বিপরীত মেরুর। সেই ‘মাস্টারমশাই’-কে এ বার বয়সজনিত কারণে সিঙ্গুরের প্রার্থী না করে বেচারাম মান্নাকে টিকিট দেন তৃণমূল নেত্রী মমতা। ওই প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পরই ৬ মার্চ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেন রবীন্দ্রনাথ। নতুন দলে যাওয়ামাত্র পরিচিত আসনেই টিকিট পান তিনি। ফলে জমি আন্দোলনের সময় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করা ‘গুরু-শিষ্য’ বলে পরিচিত রবীন্দ্রনাথ এবং বেচারাম এ বার নীলবাড়ির লড়াইতে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। কার পাল্লা ভারী, কে এগিয়ে, কে-ই বা পিছিয়ে— তা নিয়ে আপাতত রাজনৈতিক শিবিরের পাশাপাশি চর্চা শুরু সিঙ্গুরেও।
তবে বিজেপি-তে তাঁর প্রার্থীপদ নিয়ে কম বাধার মুখে পড়তে হয়নি রবীন্দ্রনাথকে। বিজেপি-র প্রার্থিতালিকা ঘোষণা হওয়ার পর দলীয় নেতাদের একাংশ ‘বিদ্রোহ’ করেন। তৃণমূল-ত্যাগী রবীন্দ্রনাথকে মানতে চাননি তাঁরা। বিক্ষোভ দেখানো ছাড়াও আপত্তির কথা লিখিত ভাবে দলের রাজ্য নেতৃত্বকেও জানিয়েছিলেন। প্রার্থী বদলের দাবিও তুলেছিলেন। কিন্তু সে দাবি মানা হয়নি। গত বৃহস্পতিবার থেকে বুড়োশান্তি মাঠে মঞ্চ বেঁধে অনশন শুরু করেন ‘বিদ্রোহী’ নেতারা। রবীন্দ্রনাথের কাছে গিয়েও তাঁকে ভোটের লড়াই থেকে সরে দাঁড়াতে অনুরোধ করেন।
কী করে দলের ‘বিদ্রোহী’-দের কাবু করা গেল? রবিবার রাতে সিঙ্গুরের বুড়োশান্তি মাঠের কাছে দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে ‘বিদ্রোহী’ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন রবীন্দ্রনাথ। এর পরই ‘মীমাংসা’র পথ বার হয় বলে দাবি তাঁর। 'মাস্টারমশাই'-এর কথায়, ‘‘এত দিন যা হয়েছে, তা অতীত। সোমবার থেকেই সকলে একযোগে প্রচারে নামছি। সিঙ্গুরে ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াই করে বিজেপি-কে জিতিয়ে আনব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy