কাঁথির মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —নিজস্ব চিত্র
শুভেন্দু অধিকারীর খাসতালুক কাঁথিতে দাঁড়িয়ে তৃণমূল নেত্রীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তোলাবাজি, সিন্ডিকেট নিয়ে যেমন তোপ দেগেছেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে, তেমনই জবাব দিয়েছেন বহিরাগত আক্রমণের। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হবেন এ রাজ্যের ভূমিপুত্রই। নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঘাত পাওয়ার ঘটনার উল্লেখ না করেও বলেছেন, নন্দীগ্রামের মানুষকে অপমান করেছেন তিনি।
কাঁথির রেলস্টেশনের প্রভূতি মাঠে জনসভায় যোগ দিয়েছেন তিনি। সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীকে। তবে তিনি সভায় যোগ দেননি।
মোদীর বক্তব্য:
১১.৫০: তাই এ বার বিজেপি সরকার। বার বার বিজেপি সরকার। এ বার জোরে জোরে পদ্মে ছাপ। এখানকার মানুষের জমায়েত আপনার উদ্বেগ বাড়িয়ে দেবে দিদি।
১১.৪৭: দিদি, আপনি খেলা খেলেন। আমরা খেলা করব না। আমরা সেবা করব। বিজেপি-র একটাই মন্ত্র, গরিবের রোজগার, গরিবের বাড়ি, গরিবের সম্মান। দিদি, বাংলার মানুষ আপনার খেলা বুঝে গিয়েছেন। আপনারা দেখেছেন, এখানে নন্দীগ্রামের বদনাম করার জন্য় একটার পর একটা মিথ্যে কথা বলে চলেছেন। নন্দীগ্রাম আপনাকে অনেক কিছু দিয়েছে। সেই নন্দীগ্রামের মানুষেরই বদনাম করছেন? পুরো ভারতবর্ষে তাঁদের বদনাম করছেন। নন্দীগ্রামের আত্মাভিমানী মানুষ এর জবাব দেবেন। তৃণমূলের সরকার কাট, কমিশন, তোলাবাজি আর সিন্ডিকেটের জোরে চলছে। তৃণমূল সরকার হিংসা আর অত্যাচারের অন্ধকারের সরকার। দিদি অন্ধকার দিয়েছেন শুধু। বিজেপি-র সরকার সোনার বাংলা দেবে। আমাদের স্বপ্ন, সোনার বাংলা।
১১.৪৫: অসমে দেখুন, উন্নয়নের জোয়ার বইছে। জঙ্গিরা পর্যন্ত মূলস্রোতে ফিরছেন। আর এখানে বোমাবাজিতে বাড়িঘর পর্যন্ত উড়ে যাচ্ছে। মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। দিদি বসে বসে দেখছেন। বাংলায় শান্তি চাই। বন্দুক, বোমা থেকে মুক্তি চাই। আর বিজেপি সেই কাজটাই করবে। দিদি, ও দিদি। আমাকে বারবার বলতে হয়, কারণ উনি কারও কথা শোনেনই না।
১১.৪১: যে পশ্চিমবঙ্গ পুরো ভারতকে বন্দে মা তরম-এর স্লোগান শিখিয়েছে, দিদি সেই বাংলায় দাঁড়িয়ে বহিরাগত বলছেন? বঙ্কিমচন্দ্র, বিদ্যাসাগররা বলেছেন, আমরা সবাই ভারতমাতার সন্তান। এখানে কোনও ভারতবাসী বহিরাগত নয়। সবাই ভারতমাতার সন্তান। যে বাংলা থেকে গুরুদেব সব ভারতবাসীকে এক মালা পরিয়েছিলেন, এই বাংলা থেকেই যে গুরুদেব পঞ্জাব সিন্ধু গুজরাত মারাঠা... বলেছিলেন, আমরা সেটাই বলি সব সময়। সেই বাংলায় আপনি বহিরাগতর কথা বলছেন দিদি? পর্যটক বলা হচ্ছে, অপমান করা হচ্ছে। গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই ভূমিতে কাউকে বহিরাগত হিসেবে দেখতেন না। বাংলায় যে বিজেপি-র সরকার আপনারা বানাতে চলেছেন, তার মুখ্যমন্ত্রী এখানকার ভূমিপুত্রই হবেন।
১১.৩৯: কেন্দ্রীয় সরকার পেটুয়াঘাট বন্দরকে আধুনিকীকরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এতে এখানকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ মিলবে। আপনাদের যে উপকূল রয়েছে, তাতে আপনাদের জন্য বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। কেন্দ্র সরকার নানা প্রকল্পের মাধ্যমে পর্যটনের প্রসার ঘটাচ্ছে। আর এর লাভ মেদিনীপুরের মানুষ পাবেন। এখানকার প্রতিটি নাগরিক তার সুবিধা পাবেন।
১১.৩৬: পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় অর্থনীতি তৃণমূলের তোলাবাজিতে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। হলদিয়াকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই কমিশন সংস্কৃতি, এই তোলাবাজির সংস্কৃতি আপনাদের একটা ভোটেই শেষ হয়ে যাবে। সমুদ্র তটে বসবাসকারীদের জন্য কেন্দ্র বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। তার সুবিধা আপনারা সবাই পাবেন। বিজেপি-র ডবল ইঞ্জিন সরকার হলদিয়াকে নদীপথে সংযুক্ত করার কাজ করছে। তার ফলে হলদিয়া গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে উঠতে চলেছে।
১১.৩৩: এখানকার কাজু চাষি, পান চাষি, ফুল চাষিদের কেন্দ্রের সব প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হবে। গমের প্যাকেজিং একশো শতাংশ চটের ব্যাগে হচ্ছে। এর সুবিধা কৃষকরাও পাবেন। বাংলার কৃষকরা ভোলেননি, কী ভাবে দিদি ওঁদের সঙ্গে নির্মমতা দেখিয়েছেন। দিদি আপনাদের পিএম কিসান সম্মান নিধি থেকে বঞ্চিত করে রেখেছেন। কৃষকদের কাছে পৌঁছতে দিচ্ছে না তৃণমূল সরকার। ভারত সরকার কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু দিদি কৃষকদের শত্রু হয়ে বসে রয়েছেন। তাই ২ মে সব দেওয়াল ভেঙে যাবে। বিজেপি সরকার আসবে। আর কৃষকদের তিন বছরের টাকা তাঁদের দেবই আমি। গত ৩ বছরের যে টাকা দিদি আপনাদের দিতে দেননি, আমি আপনাদের দেবই। আমি প্রতিশ্রুতি পূরণ করেই ছাড়ব। ভূমিহীন কৃষক, মৎস্যজীবীদেরও সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি। ডবল ইঞ্জিনের সুবিধা এটাই।
১১.৩১: বাংলায় বিজেপির ইস্তাহারও প্রকাশিত হয়েছে। এখানকার বিজেপি নেতাদের তার জন্য় ধন্যবাদ জানাই। এখানকার মানুষের মনের কথাই ইস্তাহারে প্রকাশিত হয়েছে। মেদিনীপুর ভারতের কৃষিতে অনেক বড় স্থান নিয়ে আছে। এখানে চিংড়ির অত্য়াধুনিক চাষ হচ্ছে। কিন্তু দিদি এখানে কৃষকদের ফুড প্রসেসিং, কোল্ড স্টোরেজের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছেন।
১১.২৮: রাজ্যে সমস্ত প্রকল্পে কাটমানি বন্ধ করবে বিজেপি। উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা দেবে বিজেপি। মাঝখানে দালাল, ফড়ে কেউ থাকবে না। কোনও তোলাবাজি থাকবে না। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বাড়ি বাড়ি শৌচালয় দিয়েছে, বিদ্যুৎ দিয়েছে, গ্যাস দিয়েছে। করোনার সময় মহিলাদের আর্থিক সাহায্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেওয়া হয়েছে। জল দেওয়ার জন্য ‘ঘর ঘর জল’ প্রকল্পের কাজ করছে। কিন্তু এখানকার সরকার সে সব করতেই দিচ্ছে না। তৃণমূল সরকারের আপনাদের জন্য কোনও চিন্তা নেই।
১১.২৬: পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন, এখানকার মানুষের বিকাশ, বিজেপির সংকল্প। বাংলার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য আমরা প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করব। এটা প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছি। বাংলা চায় শিক্ষা, শিল্প, কর্মসংস্থান, বাংলা চায় নারী সুরক্ষা, বাংলা চায় কৃষক সুরক্ষা, বাংলা চায় বিজেপি সরকার।
১১.২৫: বিজেপি কর্মীরা খুন হয়েছে। তার সাজা তো পাবেনই। কিন্তু তার আগেই রাজ্যের মা-বোনেরা আপনাদের শাস্তি দেবেন। পায়ে হেঁটে বেরিয়ে আসবেন মহিলারা। হাজার হাজার মানুষ বেরিয়ে এসেছেন। দিদি আপনি শুনতে না পেলে, দেখে নিন। এই ছবিই এর প্রমাণ, বাংলার মহিলারা মনস্থির করে নিয়েছেন। তৃণমূলের খেলা শেষ হবে। উন্নয়ন আরম্ভ হবে।
১১.২০: দিদি এখনও তাঁদের কাছে জবাব দিতে পারেননি, যাঁদের ঘর বাড়ি শেষ হয়ে গিয়েছিল আমপানে। তার পর তাঁদের জন্য যে অনুদান পাঠানো হয়েছিল, সেটা ভাইপো উইন্ডোতে থেমে গিয়েছিল। আজ বাংলা প্রশ্ন করছে, আমপানের টাকা, চাল কে লুটে নিল। আমপানে ক্ষতিগ্রস্তরা এখনও কেন ভাঙাচোরা ঘরে বসবাস করছেন। যখন প্রয়োজন, তখন দিদি দেখেন না। আর ভোট আসলে উনি বলেন, দুয়ারে সরকার। এটাই আপনার খেলা। পশ্চিমবঙ্গের শিশুরা পর্যন্ত আপনার খেলা বুঝে গিয়েছে। এই জন্যই ২ মে দিদিকে দুয়ার দেখিয়ে দেবে। মানুষ আপনাকে দরজা দেখিয়ে দেবে।
১১.১৮: স্বাধীনতার ৭৫ বছর পালনে বাংলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে। এই ভোটে যাঁরা প্রথমবার ভোট দেবেন, তাঁদের জন্যও এই সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যুবকদের সামনে আগামী ২৫ বছরের পশ্চিমবঙ্গ নির্মাণের দায়িত্ব। তার জন্যই আসল পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। সোনার বাংলা গড়ার কথা এখানকার সবাই শুনছেন। বাংলার প্রতি ঘর থেকে, সবার মুখে একটাই আওয়াজ উঠছে। ২ মে দিদি যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy