ফাইল চিত্র।
নির্বাচন কমিশনের নজরে দুই ২৪ পরগনা, মালদহ এবং মুর্শিদাবাদের মতো জেলা। বিশেষ পর্যবেক্ষকদের মূল্যায়ন অনুযায়ী, এই সব জেলায় নিরাপদে এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট করানোই এখন কমিশনের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। ফলে নিরাপত্তা বন্দোবস্ত সেই মতোই সাজানোর কাজ শুরু করে দিলেন বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে এবং বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক। তৃতীয় দফার ভোটে সর্বাধিক কেন্দ্রীয় বাহিনী দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দেওয়া হচ্ছে। পঞ্চম দফা থেকে একশো ভাগ নজর এ রাজ্যের ভোটে দিয়ে মোট ১০৭১ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে বিশেষ পর্যবেক্ষকদের।
বুথে ঢোকার সময়ে ভোটারদের পরিচয়পত্র দেখতে পাবে না বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে কমিশন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সিদ্ধান্তে খুশি। রাজ্যে নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দেগেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপিকে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দিতে এ রাজ্যে কমিশন আট দফায় নির্বাচন করছে বলেও অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। তবে নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে শনিবার তাদের ধন্যবাদও জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
প্রথম দফার ভোটে প্রায় ৭৩০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করেছিল নির্বাচন কমিশন। দ্বিতীয় দফার ভোটে ৬৫১ কোম্পানি বাহিনী ছিল। তৃতীয় দফার ভোটে ৬১৮ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা করেছে কমিশন। এই তিন দফার ভোটে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে ভোট হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাকি কেন্দ্রগুলিতে ভোট হবে চতুর্থ দফায়। তবে কমিশনের নজরে থাকা উত্তর ২৪ পরগনা, মালদহ, মুর্শিদাবাদে ভোট হবে পঞ্চম থেকে অষ্টম দফার মধ্যে। ফলে কমিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, শেষের চারটি দফাতে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছবে।
সম্প্রতি আনন্দবাজারকে বিবেক দুবে বলেন, ‘‘পঞ্চম দফা থেকে আমরা ১০৭১ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পেয়ে যাব।’’ রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দফতরও জানিয়েছিল, ৭ এপ্রিলের মধ্যে আরও ২০০ কোম্পানি বাহিনী রাজ্যে এসে যাবে। ফলে তখন বাহিনীর কোম্পানির সংখ্যা হবে ১০০০। বিশেষ পর্যবেক্ষকেরা নিজেদের পরিকল্পনা কার্যকর করলে পঞ্চম দফার আগেই আরও ৭১ কোম্পানি বাহিনী আসবে রাজ্যে। পঞ্চম দফার আগেই বাকি চার রাজ্যে (তামিলনাড়ু, কেরল, পুদুচেরি এবং অসম) ভোটগ্রহণ পর্ব সাঙ্গ
হয়ে যাবে। ফলে ওই দফা থেকে কমিশনের একমাত্র নজর থাকবে এ রাজ্যে। ওই রাজ্যে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে তুলে তখন পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে আসতে চায় কমিশন।
প্রথম দুই দফায় কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। বেশিরভাগ জায়গায় অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দেখা যায়নি, আবার কোথাও তাদের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এই অবস্থায় বিবেক দুবে জানাচ্ছেন, রাজ্য পুলিশই প্রাথমিক ভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে দায়বদ্ধ। কারণ, এই বিষয়টি রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত। তাই রাজ্য পুলিশকে সহযোগিতা করার লক্ষ্যেই কাজ করছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। যেখানে ভোট মিটে যাচ্ছে, ভোটপরবর্তী হিংসা ঠেকাতে সেখানেও কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখা হচ্ছে। সে কাজে রাজ্য পুলিশকে সহযোগিতাই করবে তারা।
কমিশনের অন্দরের ব্যাখ্যা, বাকি চার রাজ্যে ভোট থাকায় এ রাজ্যে পুরো শক্তিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো যায়নি। বাকি রাজ্যগুলির ভোট মিটে যাওয়ায় পূর্ণশক্তির বাহিনী রাজ্যে পৌঁছতে যাবে। ফলে পঞ্চম দফা থেকে বাহিনীর জওয়ানদের দেখা যাওয়া নিয়ে কোনও অভিযোগ থাকবে না বলে মনে করছেন কমিশনের কর্তারা। প্রশাসনের এক কর্তার বক্তব্য, “গত বিধানসভা এবং লোকসভা ভোটে গোলমালের তথ্য, দুষ্কৃতী সংখ্যার উপর নির্ভর করেই এ বার সংবেদনশীল এলাকা চিহ্নিতকরণের কাজ হয়েছিল। সেই কারণে দুই ২৪ পরগনা, মালদহ এবং মুর্শিদাবাদের বাড়তি নজর রাখছে কমিশন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy