কোচবিহারের জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
ভোটের সময় পুলিশ বিজেপি হয়ে যায় বলে প্রকাশ্য সভায় অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “আমি অনেক জায়গায় দেখেছি, ভোটের সময় পুলিশ বিজেপি হয়ে যায়! তবে ছোট পুলিশদের কোনও দোষ নেই। পুলিশের নেতারা সব আন্ডারস্ট্যান্ডিং করে বসে আছে।” পাশাপাশিই মমতা বলেন, ‘‘আমি আরামবাগের ওসি-র দৌড় দেখেছি।’’ ঘটনাচক্রে, মুখ্যমন্ত্রী মমতাই রাজ্যের স্বরাষ্ট্র ও পুলিশ দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী থেকেছেন বরাবর। তাঁর কথায় এমন ইঙ্গিত রয়েছে যে, তিনি হয় পুলিশের উঁচুতলার অফিসার অথবা পুলিশ সংগঠনের নেতাদের লক্ষ্য করে ওই অভিযোগ করছেন। কারণ, ‘পুলিশের নেতারা’ বলতে মুখ্যমন্ত্রী কাদের বুঝিয়েছেন, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যায় তিনি যাননি।
বুধবার উত্তরবঙ্গের কোচবিহারের জনসভা থেকে ভোট নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশিই কেন্দ্রীয় বাহিনী তথা সিআরপিএফের বিরুদ্ধেও উষ্মা প্রকাশ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। একদিকে যেমন তিনি পুলিশ সম্পর্কে বলেছেন, ‘‘ভোটের সময় পুলিশ বিজেপি হয়ে যায়। তাই ওদের বিশ্বাস করবেন না’’, তেমনই সিআরপিএফ-কে ঘেরাও করারও নিদান দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যে কিছু ‘বিজেপি-সিআরপিএফ’ এসেছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, কেন্দ্রীয় বাহিনী জনগণকে ভোট দিতে বাধা দিতে পারে না। জনগণকে ভোটদানে সহযোগিতা করা উচিত তাদের। মমতা বলেন, “সিআরপিএফ-কে আমি সম্মান করি। ওরা আসল জওয়ান। কিন্তু যারা বিজেপি-র সিআরপিএফ, আমি তাদের সম্মান করি না। তারাই মহিলাদের হেনস্থা করছে। মানুষ মারছে। তারাই গন্ডগোল পাকাচ্ছে।” সিআরপিএফ যেন নির্বাচনের পরের দফাগুলিতে কোনও গন্ডগোল করতে না পারে, মানুষকে হেনস্থা করতে পারে, তা দেখার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন জানাবেন বলেও মন্তব্য করেন মমতা। তাঁর কথায়, “অমিত শাহের নির্দেশেই সিআরপিএফ এ সব কাজ করছে। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে পুলিশকে কখনও এ রকম নির্দেশ দিইনি।”
পুলিশ প্রসঙ্গেই দলের এজেন্টদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী। কর্মীদের সতর্ক করে বলেছেন, পুলিশ তাঁদের চলে যেতে বললেও তাঁরা যেন না চলে যান। পুলিশদের কথায় যেন বিশ্বাস না করেন। আরামবাগের তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডলের উপর হামলার প্রসঙ্গ টেনে এনে মমতা বলেন, “আরামবাগের ওসি-র দৌড়ও দেখে নিয়েছি। সুতরাং আমরাও কিন্তু লক্ষ্য রাখব কে কী করছেন।” তবে পাশাপাশিই মমতা জানিয়েছেন, তৃণমূল শান্তিপূর্ণ ভোটই চায়। জানিয়েছেন, পুলিশের নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করা উচিত। কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মমতা। বলেছেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনী বা বাংলার বাহিনী গিয়ে যদি বলে, ভোট দিতে যাবেন না, তাদের বলবেন, আপনাদের কথা শুনব না। কেন্দ্রীয় বাহিনী যদি বাধা দেয়, তা হলে এফআইআর করে রাখতে হবে। কোনও প্রার্থীর গায়ে হাত পড়লেও এফআইআর করে রাখতে হবে।’’ মমতার পরামর্শ, কেন্দ্রীয় বাহিনী ‘গন্ডগোল’ করার চেষ্টা করলে মহিলারা যেন তাদের ঘেরাও করেন। তাঁর বক্তব্য, “এক দল ঘেরাও করে রাখবেন। এক দল ভোট দিতে যাবেন। ভোট নষ্ট করবেন না। আপনি যদি শুধু ঘেরাও করে রাখেন, তা হলে ভাববে ভালই তো ভোটটা পড়ল না। এটাই বিজেপি-র চাল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy