Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
kanti ganguly

Bengal Polls: মানুষের ভরসায় ফের ভোটের ময়দানে ‘সর্বস্বান্ত’ কান্তি

দশ বছর ক্ষমতার বাইরে। বিধায়কও নন। তাতে অবশ্য দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়াতে সমস্যা হয়নি কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের। কাকদ্বীপ হোক সাগর-পাথরপ্রতিমা।

আম্পানের দুর্গতদের পাশে  কান্তি

আম্পানের দুর্গতদের পাশে কান্তি ফাইল চিত্র

শুভাশিস ঘটক
রায়দিঘি শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২১ ০৯:০৬
Share: Save:

দশ বছর ক্ষমতার বাইরে। বিধায়কও নন। তাতে অবশ্য দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়াতে সমস্যা হয়নি কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের। কাকদ্বীপ হোক সাগর-পাথরপ্রতিমা। সুন্দরবনের সমস্ত সমস্যায় হাজির হন কান্তি। মাস কয়েক আগে আমপানে তা আরও একবার প্রমাণ হয়েছে। ঝড়ের পূর্বাভাস পেয়ে কলকাতা থেকে লরি বোঝাই করে চাল, ডাল, ত্রিপল, কেরোসিন, তেল নিয়ে কয়েকদিন আগেই রায়দিঘির কুমড়োপাড়ার বাড়িতে মজুত করেছিলেন। পরে নিজের খরচে লঞ্চ ভাড়া করে প্রত্যন্ত দ্বীপগুলিতে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে পৌঁছে যান।

এবার আরও একবার ভোটের ময়দানে তিনি। রায়দিঘি কেন্দ্রে আরও একবার তাঁকেই প্রার্থী করেছে দল। কিন্তু মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে কার্যত সর্বস্বান্ত কান্তি জানেন না কী ভাবে সামলাবেন ভোটের খরচ।

গত দুই বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের দেবশ্রী রায়ের কাছে হার মানতে হয়েছিল কান্তিকে। এবারে লড়াই আরও কঠিন বলে মনে করছেন তিনি। গত দু’টি নির্বাচনে রায়দিঘিতে বিজেপির উপস্থিতি প্রায় ছিল না। এবার পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে বামপন্থী অনেক ভোটই এখন বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছিল। লোকসভার ফলাফলের নিরিখে কান্তিবাবুর বাসস্থান কুমড়োপাড়ার বুথেও এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। তবে তাতে ভয় পাচ্ছেন না এককালের দাপুটে মন্ত্রী। কান্তিবাবুর কথায়, “জীবনে কোনও দিন লড়াই থেকে পিছিয়ে আসিনি। বছরের পর বছর আত্মগোপন করে থেকেছি। রাজনৈতিক জীবনে অনেক সংগ্রামের ইতিহাস আমার। কিন্তু এবারের লড়াইটা শুধু রাজনীতি নয়।
টাকার থলির সঙ্গে লড়াই করতে
হবে। গত দু’টি নির্বাচনে কিছুটা হলেও আমি টাকা কাছেই পরাজিত হয়েছি বলে মনে হয়। নির্বাচনের আগের দিন থেকেই শুরু হয়ে যেত টাকার খেলা।”

করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের সময় ও পরে আমপানের ঝড়ে জর্জরিত সুন্দরবনের মানুষের পাশে থাকতে নিজের সর্বস্ব খরচ করেছেন। হাত পেতে টাকা জোগাড় করে গরিব মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ঝড় বিধ্বস্ত মানুষের পাশে থাকতে সোশ্যাল মিডিয়ায় অর্থ সাহায্য করার জন্য আবেদন করেন। দেশ-বিদেশের বহু মানুষ এগিয়ে আসেন। প্রথম দিকেই নিজের সম্বল শেষ হয়ে গিয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়া মারফত এবং নানা অনুরাগীর কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য নিয়ে শেষের দিকটা কোনও রকমের সামাল দেন তিনি।

প্রায় সর্বস্বান্ত প্রাক্তন মন্ত্রী ভোটে লড়তে ফের সাধারণ মানুষের কাছে সাহায্যের আবেদন করার কথা ভাবছেন। বিহারে যেভাবে ‘পাবলিক ফান্ডিং’য়ে লড়েছিলেন সিপিআইয়ের কানহাইয়া কুমার। কান্তিবাবু বলেন, “নির্বাচনে কিন্তু টাকা খরচ হয়। মিটিং, মিছিলে বা ফ্ল্যাগ, পোস্টার তৈরি করতেও টাকা লাগবে। তা কিন্তু কম নয়। কয়েক লক্ষ টাকার ধাক্কা। ওই টাকা এখন আমার কাছে কোথায়? আমপানের সময় ফেসবুকে আবেদন করেছিলাম। বহু মানুষ অর্থ সাহায্য করেছিলেন। এবার সুন্দরবনের মানুষের পাশে থাকার জন্য ফের টাকা চাওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। ভাবছি ফের ফেসবুকে আবেদন করব। পাশাপাশি আমাদের সমর্থকরা তো রয়েইছে।”

এত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে কী ভাবে লড়বেন? কান্তিবাবু বলেন, “মানুষ সঙ্গে রয়েছে বলে বিশ্বাস করি। আমি জানি, তৃণমূলের অত্যাচারে অনেক বামপন্থী মানুষ বিজেপি শিবিরে গিয়েছেন। আমার মনে হয়, এ বার তাঁরা ফের ঘরে ফিরবেন। কারণ চারিদিকে একটা অশান্তির পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আমি মানুষের ভরসায় লড়তে নেমেছি। আমার কুমড়োপাড়ার বাড়ি থেকে লড়াই শুরু হবে। গত দু’বার যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তাঁরা কিন্তু বিপদে-আপদে রায়দিঘির মানুষের পাশে এসে দাঁড়ায়নি। আমি পরাজিত হয়েও মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। মানুষ যদি পাশে থাকে, তাহলে কোনও শক্তিই আমাকে আটকাতে পারবে না।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy