Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Sitalkuchi

Bengal Polls: মমতার দেওয়া চাকরি নেবে শীতলখুচিতে নিহত বিজেপি সমর্থকের পরিবার

বিজেপি-র সরকার এলে তবেই চাকরি নেবে বলে আগে জানিয়েছিল আনন্দের পরিবার। তবে এখন তাদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী সবার মুখ্যমন্ত্রী।

ক্ষতিপূরণ নিতে রাজি আনন্দের পরিবার।

ক্ষতিপূরণ নিতে রাজি আনন্দের পরিবার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শীতলখুচি শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২১ ১৬:০৬
Share: Save:

প্রথম বার ভোট দিতে গিয়ে বেঘোরে প্রাণ হারিয়েছে ছেলে। তার পর রাজনৈতিক চাপান-উতরে চলে গিয়েছে প্রায় একটা মাস। শেষমেশ সরকারি সাহায্য নিতে রাজি হল শীতলখুচিতে নিহত বিজেপি সমর্থক আনন্দ বর্মণের পরিবার। আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি সরকারি চাকরিও নিতে প্রস্তুত তাঁরা। শুক্রবার তৃণমূল নেতা পার্থপ্রতিম রায়ের পাশে বসে এমনটাই জানালেন নিহত ওই কিশোরের মা ও দাদা। প্রতিশ্রুতি মতো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবেন বলে আশাবাদী তাঁরা।
শুক্রবার শীতলখুচির তৃণমূল নেতা পার্থপ্রতিম রায়ের সঙ্গে দেখা করেন নিহত কিশোরের পরিবার। তাঁদের সঙ্গে নিয়েই সাংবাদিক বৈঠক করেন পার্থপ্রতিম। সেখানে তিনি জানান, বৃহস্পতিবার আনন্দের পরিবারকে বার্তা পাঠিয়েছিলেন তিনি। দেখা করতে চেয়েছিলেন। তাতে রাজি হন পরিবারের লোকজন। সেই মতো শুক্রবার সকালে আনন্দের মা বাসন্তী বর্মণ, দাদা গোবিন্দ বর্মণ এবং মামা জগদীশ রায় দেখা করেন। জানান, তাঁরা সরকারি সাহায্য নিতে রাজি।
এর আগে যদিও, আনন্দের পরিবার তৃণমূল সরকারের কাছ থেকে কোনও সাহায্যই নিতে রাজি হননি। সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এলে তবেই সাহায্য নেবেন। তাহলে কি চাপের মুখেই সে কথা বলেছিলেন তারা? শেষ পর্যন্ত ভয় কাটল কী করে? এই প্রশ্ন তুলতেই মাঝপথেই সাংবাদিকদের থামিয়ে দেন পার্থপ্রতিম। পুরনো প্রসঙ্গ তুলে লাভ নেই বলে জানিয়ে দেন তিনি।
তবে এ বার কী করবেন জানতে চাইলে, আনন্দের মা বলেন, ‘‘চাকরি নেব। ঘর করব। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দোষীদের শাস্তি চাইব।’’ আনন্দের দাদা গোবিন্দ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সবার মুখ্যমন্ত্রী। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি যদি ১০টা পরিবারকে চাকরি দেন, নিতে বাধা নেই। ভাইকে যারা মেরেছে, সেই দোষীদের শাস্তি হোক।’’
আনন্দের পরিবারের এই মত বদলে যদিও আপত্তি তুলছেন না স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। জেলা বিজেপি-র সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গিয়েছে পরিবারটির। চিরকালের জন্য ছেলে চলে গিয়েছে। তার পরিবর্তে যত অর্থই দেওয়া হোক না কেন, কোনও দিন ক্ষতিপূরণ হবে না। তবে বর্তমান পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে বলা যায়, চাকরি পেলে দারিদ্র থেকে কিছুটা রেহাই পাবে পরিবারটি। আনন্দের হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তির দাবি করছি আমরা।’’
গত ১০ এপ্রিল, চতুর্থ দফায় ভোটগ্রহণের সকালে প্রথমে শীতলখুচির পাঠানটুলির শালবাড়ির ২৮৫ নম্বর বুথে ভোট দিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ১৮ বছরের আনন্দের। তার পর গুলি চেল জোড়পাটকির ১২৬ নম্বর বুথেও। সেখানে মনিরুজ্জামান রহমান, সামিউল মিয়াঁ, সামিদুল মিয়াঁ এবং নুর আলম নামে চার যুবক নিহত হন।

২৮৫ নম্বর বুথে যেখানে বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে সঙ্ঘর্ষ চলাকালীন গুলি চলার অভিযোগ ওঠে, সেখানে ১২৬ নম্বর বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে নির্বিচারে গুলি চালানোর অভিযোগ সামনে আসে। সেই সময় বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হলেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, কে, কোন দলের সমর্থক দেখার প্রশ্ন নেই। সকলেই ক্ষতিপূরণ পাবেন। আনন্দের পাশাপাশি মনিরুজ্জামানের ভাই পিঙ্কু রহমান, সামিউল মিয়াঁর ভাই শহিদুল হক, সামিদুল মিয়াঁর স্ত্রী হাসিমা বিবি এবং নুর আলমের স্ত্রী জোবেদা বিবি চাকরি পাচ্ছেন। আনন্দের দাদা গোবিন্দকে চাকরি দিচ্ছে রাজ্য। এ ছাড়াও নগদ ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে প্রত্যেক পরিবারকে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE