সাংবাদিক বৈঠকে অধীর চৌধুরী।
কোচবিহারের শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ৪ জনের মৃত্যুর ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি তুললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। শনিবার বহরমপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে এই দাবি করেন তিনি।
অধীর বলেন, “নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর মানে এটা নয় যে, গুলি চালাতে হবে। কেন গুলি করে মারা হল তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া উচিত।” একই সঙ্গে রাজ্যের পুলিশও সরকারের কথায় যেন প্রভাবিত না হয় সেটাও দেখা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন অধীর।
তিন দফার ভোট আগেই হয়ে গিয়েছে। শনিবার চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণ চলছে। প্রতি দফাতেই রাজ্য জুড়ে বিক্ষিপ্ত অশান্তি এবং হিংসার ঘটনা সামনে এসেছে। প্রাণহানিও ঘটেছে। শনিবার শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে নিহত হন ৪ জন। অন্য একটি ঘটনায় আরও এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে এই শীতলকুচিতেই। ভোটে হিংসার জন্য তৃণমূল এবং বিজেপি-কে কাঠগড়ায় তুলেছেন তিনি। এই দুই দলকে ‘দানব শক্তি’ বলেও বর্ণনা করেছেন অধীর। তাঁর কথায়, “বাংলায় এ বারের নির্বাচনে দুটো দানব শক্তি নিজেদের মধ্যে সঙ্ঘাতের রাজনীতি করছে। তার পরিণাম সারা বাংলা জুড়ে দেখা যাচ্ছে।” যে অশান্তির আবহে বাংলার নির্বাচন চলছে তাতে গোটা দেশে এ রাজ্যের ভাবমূর্তি কলুষিত হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন অধীর।
এই সঙ্ঘাত এবং খুনোখুনির রাজনীতি বাংলার মানুষের মধ্যে একটা আতঙ্ক তৈরি করছে বলেও জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। তাঁর কথায়, “প্রতি দিন খুন, মারামারি এবং হিংসা চলছে। দোষারোপ, পাল্টা দোষারোপ এবং গালিগালাজের প্রতিযোগিতা চলছে।” এর পরেই তাঁর প্রশ্ন, ‘‘ভোট কি আদৌ শান্তিপূর্ণ হচ্ছে? গুলি চলবে, মানুষের মৃত্যু হবে, এটাকে কি আমরা শান্তিপূর্ণ বলতে পারি?’’ নির্বাচনের বাংলায় আগামী দিন আরও রক্তাক্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। সবে চতুর্থ দফা চলছে। এখনও আরও চার দফা বাকি। নির্বাচন কমিশনকে বাকি দফাগুলোতে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন অধীর।
শীতলকুচিতে গুলিচালনা প্রসঙ্গে অধীর বলেন, “কংগ্রেস দলের পক্ষ থেকে আমরা এই ঘটনার জন্য আশঙ্কা প্রকাশ করছি। এই ধরনের ঘটনা নিন্দনীয়। এই ধরনের ঘটনায় ভোট প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে বলেই মনে করি।’’ তাঁর কথায়, “কার দোষ, কার গুণ সেটা পরের বিষয়। কিন্তু বাংলার নির্বাচন রক্তাক্ত হওয়া গণতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকারক।” তাই বাংলায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য সংযুক্ত মোর্চাকে ক্ষমতায় নিয়ে আসার জন্য রাজ্যবাসীর কাছে আহ্বান জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।
তৃণমূল বা বিজেপি যে দলই ক্ষমতায় আসুক, তা এই রাজ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর হবে— এমনটাও মনে করেন অধীর। তাঁর কথায়, ‘‘এই দুই দল বাংলার গণতন্ত্রকে টুটি চেপে হত্যা করতে চাইছে। এই দু’দলের মধ্যে যারাই ক্ষমতায় আসুক, আগামী দিনে পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর হবে। বাংলায় কোনও পরিবর্তন হবে না।” বাংলার গণতন্ত্র, বাংলার মানুষের নিরাপত্তা, ধর্মনিরপেক্ষতা, উদার মানবতা— সংযুক্ত মোর্চা ক্ষমতায় এলে এই সব কিছু রক্ষা পাবে বলে মনে করেন অধীর। তিনি বলেন, “বাংলার মানুষ দেখছেন, জানছেন, বুঝতে পারছেন। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে।” দুই ‘দানব শক্তি’ তৃণমূল এবং বিজেপি-কে খরচের খাতায় পাঠিয়ে বাংলার ভবিষ্যৎ রচনার জন্য সংযুক্ত মোর্চাকে ক্ষমতায় নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন অধীর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy