গলায় মালা: পাড়া পরিক্রমা গৌরাঙ্গ মাকালের। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।
মহিলাদের ভোট দিতে যেতে বাধা দিচ্ছেন তিনি— পরিষ্কার দেখা গিয়েছিল ভিডিয়োয়। মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয় দফার ভোটে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর এলাকার সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পরে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে পুলিশ আটক করেছিল সেই যুবককে।
যাঁকে নিয়ে অস্বস্তিতে পড়ার কথা ছিল দলের, বুধবার সেই গৌরাঙ্গ মাকাল এলাকায় ফিরে আসার পরে তাঁর গলায় মালা পরিয়ে, কার্যত ‘বীরের’ মতো সারা পাড়ায় ঘোরানো হল। তাঁকে এই বীরের সম্মান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় কর্মীদের বিরুদ্ধে।
বিষ্ণুপুর বিধানসভা কেন্দ্রের পানাকুয়া পঞ্চায়েতের রাঘবপুর গ্রামের বাসিন্দা রীতা পাঁজা মঙ্গলবার ভোট দিতে যাচ্ছিলেন। ভিডিয়োয় দেখা যায়, বুথের পথে রীতাদেবীকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন গৌরাঙ্গ। সেই অভিযোগে গৌরাঙ্গকে আটক করেছিল পুলিশ। কিন্তু রীতাদেবী বা তাঁর পরিবারের তরফে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা
হয়নি বিষ্ণুপুর থানায়। তাই তারা গৌরাঙ্গকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে বলে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলা সূত্রের খবর।
গত ১০ বছর তিনি ভোট দিতে পারেননি বলে রীতাদেবী মঙ্গলবার আনন্দবাজারকে জানিয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, সকালে তিনি যখন ভোট দিতে যাচ্ছিলেন, সেই সময় পথ আগলে দাঁড়ান প্রতিবেশী গৌরাঙ্গ। নানা ভাবে শাসানি দিয়ে রীতাদেবীকে আটকানোর চেষ্টা করেন তিনি। সেই ঘটনার ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পরে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে গৌরাঙ্গকে আটক করে পুলিশ।
বিষ্ণুপুর থানার একটি সূত্র জানিয়েছে, কয়েক দফায় রীতাদেবীর বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু ওই পরিবার গৌরাঙ্গের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেনি। বুধবার রীতাদেবীর স্বামী অমরেশ পাঁজা বলেন, ‘‘পুলিশ বাড়িতে এসেছিল। আমাকে থানায় নিয়ে গিয়ে অভিযোগ জমা দিতে বলেছিল। কিন্তু অনেক রাত হয়ে যাওয়ায় আমি যাইনি।’’ এলাকায় ফেরার পরে গৌরাঙ্গ বা তাঁর দলবল আর কোনও রকম শাসানি বা হুমকি দেননি বলেও জানান অমরেশবাবু। ওই এলাকায় পুলিশি টহলদারি চলছে বলে বিষ্ণুপুর থানা সূত্রের খবর। এক তদন্তকারী বলেন, ‘‘গৌরাঙ্গকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।’’ স্থানীয় পানাকুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান ভোলানাথ সর্দার এ দিন বলেন, ‘‘ওই ছেলেটি আমাদের দলের কেউ নয়।’’
তবে তৃতীয় দফার নির্বাচন মিটে যাওয়ার পরেও শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠছে বিভিন্ন এলাকায়। মঙ্গলবার রাত থেকে বারুইপুর পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের নবগ্রাম এলাকার পূর্বপাড়ায় বেশ কিছু পরিবারের উপরে তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, সোমবার রাত থেকেই হুমকি দেওয়া হচ্ছিল, বুথে গিয়ে কেউ যেন ভোট না-দেয়। কিন্তু সকালে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী আশ্বাস দেওয়ায় ওই এলাকার প্রায় ৪০টি পরিবারের লোকজন বুথে গিয়ে ভোট দেন। তার পরেই রাতে ওই এলাকায় বোমাবাজি ও গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। সকালে বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। মহিলা, শিশুদের মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পরে পুলিশি টহলদারি শুরু হয়েছে ওই এলাকায়। চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বারুইপুর পুলিশ জেলার এক কর্তা জানান, ওই ঘটনায় কিছু অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy