Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls 2021: তিন কন্যার লড়াইয়ে দুর্নীতি বনাম উন্নয়ন

ব্যবধান সামান্য হলেও বিজেপির উত্থান শাসক দলের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। যদিও সিপিএমের ক্ষয়ে বিজেপির উত্থান বলে দাবি করেন শাসক দলের নেতারা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অর্ঘ্য ঘোষ
সাঁইথিয়া শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২১ ০৪:৩৯
Share: Save:

মন্দির থেকে মাজার। সাইকেল থেকে পায়ে হাঁটা। প্রার্থীপদ ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনী প্রচারে এলাকা চষে ফেলতে শুরু করেছেন সাঁইথিয়া কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী নীলাবতী সাহা। এই কেন্দ্রের প্রার্থী ‘তিন কন্যা’র এক জন তিনি। বাকি দুই কন্যা, বিজেপি ও সিপিএমের দুই মহিলা প্রার্থীর সঙ্গে টক্কর তাঁর।

লড়াইটা হাড্ডাহাডি। আবার বিধায়ক নির্বাচিত হতে তাই এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন বিদায়ী বিধায়ক নীলাবতিদেবী। নিজের নির্বাচনী এলাকার বাইরেও ইতিমধ্যে বক্রেশ্বরে পুজো দিয়ে এসেছেন। চাদর চড়িয়েছেন পাথরচাপুড়ির দাতাবাবার মাজারে। বিরোধীরা শাসক দলের বিরুদ্ধে কাটমানি-সহ বিভিন্ন দুর্নীতিকে প্রচারে তুলে ধরছে। জবাবে উন্নয়নকেই হাতিয়ার করেছেন নীলাবতীদেবী। তাঁর উন্নয়নমূলক কাজের তালিকায় রয়েছে বাসস্ট্যান্ড নির্মাণ, হাসপাতালের উন্নয়ন, দমকল কেন্দ্র থেকে শুরু করে কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী, ট্যাব এবং সর্বশেষ সংযোজন স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প।

২০১৬ সালের নির্বাচনে ওই কেন্দ্রে ৩৮,৩৮৭ ভোটের ব্যবধানে সিপিএমের ধীরেন বাগদিকে হারিয়ে বিধায়ক হন নীলাবতীদেবী। ওই নির্বাচনে তিনি পান ১০২৮৩৭টি এবং ধীরেনবাবু পান ৬৪৪৫০টি ভোট। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিধানসভা ভিত্তিক ফলাফলের নিরিখে তৃণমূলকে পিছনে ফেলে দেয় বিজেপি। ২০১৬ সালে ওই কেন্দ্রে বিজেপির পিয়া সাহা পেয়েছিলেন ২৩৯৬৫টি ভোট। ২০১৯ সালের নির্বাচনে সিপিএমের রেজাউল করিম পান ৮০৪০, তৃণমূলের শতাব্দী রায় ৯৬৬৯৫ এবং বিজেপির দুধকুমার মণ্ডল ৯৬৯১০টি ভোট।

ব্যবধান সামান্য হলেও বিজেপির উত্থান শাসক দলের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। যদিও সিপিএমের ক্ষয়ে বিজেপির উত্থান বলে দাবি করেন শাসক দলের নেতারা। কারণ লোকসভায় পরাজয় নিশ্চিত জেনে ‘শত্রুর শত্রু আমার মিত্র’ তত্ত্বে সিপিএম তাদের ভোট বিজেপির বাক্সে ঠেলে দিয়েছিল বলে তাঁদের দাবি। এ বারে ওই কেন্দ্রে ডিওয়াইএফ-এর রাজ্য কমিটির সদস্যা মৌসুমী কোনাইকে প্রার্থী করেছে সিপিএম। প্রার্থীপদ ঘোষণার পর থেকেই তেড়েফুঁড়ে নেমে পড়েছেন আরেক কন্যা মৌসুমী।

টানা প্রচারেই বুঝিয়ে দিচ্ছেন বিনা যুদ্ধে কাউকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়ার পাত্রী নন তিনি। প্রচারে শাসক দলের দুর্নীতিকেই হাতিয়ার করেছেন তিনি। মৌসুমী বলেন, ‘‘২০১৯ সালের নির্বাচনে রাজনৈতিক হতাশা থেকে আমাদের অনেক ভোট বিজেপির ঝুলিতে চলে গিয়েছিল। এবারে আমাদের জয়ের ব্যাপারে তাঁরা আশাবাদী। সেই ভোট ফিরে আসবে। আমাদের কিছু বলতে হচ্ছে না। শাসক দলের দুর্নীতির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতির জন্য মানুষ ক্ষোভে ফুঁসছেন। তাঁরা নিজের ভোট নিজে দিতে পারলে ফল অন্যরকম হবে।’’ বিজেপিও শাসক দলের দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসকে হাতিয়ার করে প্রচার শুরু করে দিয়েছে। এই কেন্দ্রের তিন মহিলা প্রার্থীর আরেক জন, বিজেপি প্রার্থী পিয়া সাহা (চৌধুরী) দাবি করেন, ‘‘প্রচারে গিয়ে শাসকদলের নেতাদেরই বিভিন্ন জায়গায় দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে জবাবদিহির মুখে পড়তে হচ্ছে।’’

বছর দেড়েক আগে কাটমানি অভিযোগে বিভিন্ন এলাকায় শাসক দলের নেতাকর্মীদের আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখানোর ঘটনা ঘটে। কোথাও কোথাও টাকা ফেরতের মুচলেকা লিখে দিয়ে রেহাই পান অভিযুক্ত নেতাকর্মীরা। দলের অনেকের দাবি, রয়েছে অন্তর্ঘাতের আশঙ্কাও। ব্লক সভাপতি সাবের আলি খানের অনুগামীদের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে জেলা কমিটির সদস্য সাধন মুখোপাধ্যায়ের অনুগামীদের। সাবের আলি বিধায়ক ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। সাধনবাবুর অনুগামীদের ভূমিকা নিয়ে দলের একাংশেরই সংশয় রয়েছে।

নীলাবতীদেবী অবশ্য সব অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়ে বলছেন, ‘‘দুর্নীতি এবং অন্তর্ঘাতের তত্ত্ব বিরোধীদের অপপ্রচার। হাসপাতালের উন্নয়ন, ধর্মীয় স্থানের উন্নতি, বাসস্ট্যাণ্ড নির্মাণ, দমকলকেন্দ্র স্থাপন, সৌন্দর্যায়ন, অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা-সহ বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পে মানুষ প্রভূত উপকার পেয়েছেন। প্রচারে আমরা সে সব উন্নয়নের কথা তুলে ধরছি। উন্নয়নের জন্য মানুষ ফের আমাকে ভোট দেবেন বলেই বিশ্বাস।’’

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC CPM West Bengal Assembly Election 2021
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy