এসএসকেএম হাসপাতালে আহত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্রিগেড সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র
নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহত হওয়ার পিছনে ‘পূর্ব পরিকল্পিত হামলার’ প্রমাণ দিতে নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যকে হাতিয়ার করল তৃণমূল।
জ্বালানির আগুন দরের প্রতিবাদে মমতার ই-স্কুটারে সওয়ার হওয়াকে বিঁধে গত রবিবার বিগ্রেড সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘‘স্কুটি যদি নন্দীগ্রামে গিয়ে পড়ে যায়, তখন আমরা আর কী করব!’’ শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের কাছে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, মোদীর ওই মন্তব্য আসলে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ।
রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের পাল্টা দাবি, ‘‘তৃণমূল প্রধানমন্ত্রীর কথা বিকৃত করে কমিশনকে ভুল তথ্য দিচ্ছে। তার উপরে চাপ বাড়াচ্ছে। ভোট অবাধ ও সুষ্ঠু ভাবে করতে আমরা যে সব ব্যবস্থা নিতে বলেছি, সেগুলিও সব এখনও নেওয়া হয়নি।’’
কিন্তু সাংসদ সৌগত রায়-সহ তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, হামলার দু’দিন আগে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ফেসবুকে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, নন্দীগ্রামে ধাক্কা খেয়ে পড়বেন মমতা। বাস্তবে তা-ই হয়েছে। ১০ মার্চ ভোর-রাতে বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়ের টুইটের উত্তরে সৌমিত্র খাঁ জানিয়েছিলেন, ‘‘কাল থেকে বুঝতে পারবে, বিকেল ৫টার পরে।’’ তৃণমূলের দাবি, কথোপকথন থেকেই বোঝা যাচ্ছে, ১০ মার্চ গুরুতর কিছু ঘটনোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সেই সূত্রেই দাবি, প্রধানমন্ত্রীর ওই স্কুটি-মন্তব্যও সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়। বিজেপির অবশ্য বক্তব্য, নির্বাচনী প্রচারে বিপক্ষকে বিঁধতে বলা কথায় ষড়যন্ত্রের ভূত দেখছে বিজেপি।
এ দিন দুপুরে তৃণমূল ও পরে সন্ধ্যায় বিজেপি কমিশন কর্তাদের সঙ্গে দেখা করে মমতার আঘাত পাওয়ার ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে সৌগত, ডেরেক ও’ব্রায়েন, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, শান্তুনু সেনরা মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা-সহ ফুল বেঞ্চের সঙ্গে বৈঠক করেন। সূত্রের খবর, উভয় পক্ষের অভিযোগ পেয়ে রাতে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী আধিকারিকদের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করেন কমিশনের কর্তারা।
মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে কী ভাবে ছেলেখেলা করা হয়েছে, সে বিষয়েও সরব হয়েছে তৃণমূল। অভিযোগ, ‘‘মমতার উপরে হামলার দু’দিন আগে থেকে রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রকে সরানোর দাবিতে কমিশনের কাছে তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ জমা দিতে থাকে বিজেপি।’’ ঘটনার এক দিন আগে ডিজি-কে সরিয়ে দেয় কমিশন। তৃণমূলের দাবি, এ সবে সুবিধে হয়েছে ষড়যন্ত্রীদের। কমিশন অবশ্য স্পষ্ট জানিয়েছে, দুই বিশেষ পর্যবেক্ষকের রিপোর্টের ভিত্তিতে ডিজিকে সরানো হয়েছিল। রাজনৈতিক কারণে নয়।
সৌগতদের অভিযোগ, রাজ্য পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের সরানোর পরে মমতার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে কমিশনের কাছে অভিযোগ জানানো শুরু করে বিজেপি। দাবি, নিরাপত্তা কর্মীদের মনোবল নষ্ট করতেই ওই কৌশল। ঘটনার সময়ে জেলার পুলিশ সুপারের অনুপস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। সৌগত বলেন, ‘‘অনেক প্রশ্ন অমীমাংসিত। তাই কমিশনের কাছে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করেছি।’’
কমিশনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে দেখা করে ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্যসভা সাংসদ ভূপেন্দ্র যাদবও। সংবেদনশীল কেন্দ্র হিসেবে নন্দীগ্রামে বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগেরও দাবি তুলেছে বিজেপি। বলেছে ঘটনার ভিডিয়ো-ফুটেজ জনসমক্ষে আনার কথাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy