Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Lovely Moitra

লাভলি মৈত্র । সোনারপুর দক্ষিণ

গত ১০ বছর ধরে চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে যুক্ত। বিভিন্ন সময়ে তৃণমূলের নানাবিধ কর্মসূচিতে থাকতেন, এবার অভিনয়ের জগৎ থেকে একেবারে রাজনীতিতে।

আনন্দবাজার ডিজিটাল
শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২১ ১৮:০২
Share: Save:

মদন-যোগ: ভালনাম আর ডাকনাম একই। এমনিতে তাঁর নাম ছোটপর্দার দর্শকরা জানতেনই। কিন্তু ভোটের আগে নামটা ভাইরাল করে দিলেন ভোট-গানের আকাশে নতুন প্রতিভা মদন মিত্র— ওহ্ লাভলি!

লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট: ভাবের বিয়ে নয়। দেখেশুনে, বাড়ি থেকে সম্বন্ধ করে বিয়ে। ‘কনে দেখা’ হয়নি। ‘বর দেখা’ হয়েছিল। পরিবারের অন্যদের সঙ্গে গিয়েছিলেন হবু বরকে দেখতে। প্রথম দেখাতেই পছন্দ। ঝটপট বিয়ে— ওহ্ লাভলি!

প্রথম প্রেম: নেই। তবে ছোটবেলায় ছিলেন ধারাবাহিকের পোকা। তখনই পছন্দ হত হিন্দি ধারাবাহিকের নায়কদের। মনে হত, পর্দায় ওঁদের সঙ্গে অভিনয় করতে হবে। সেই থেকেই অভিনয়ের প্রতি টান— ওহ্ লাভলি!

কোহলী হবে: খেলাধুলো ভালবাসেন। তবে ফুটবলে অত টান নেই। যত টান ক্রিকেটেই। এক সময় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভক্ত ছিলেন। তাঁর খেলা দেখতে দেখতেই ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ। সচিন তেণ্ডুলকরের খেলা দেখতেও পছন্দ করতেন। এখন পছন্দের ক্রিকেটার বিরাট কোহলী। সুযোগ পেলেই ক্রিকেট দেখেন। কোহলীও দেখেন— ওহ্ লাভলি!

এক দশক: গত ১০ বছর ধরে চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে যুক্ত। ‘জলনূপুর’ ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্রের অভিনেত্রী। ‘মোহর’ ধারাবাহিকেও অভিনেত্রী। জনপ্রতিনিধি ছিলেন না। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে তৃণমূলের নানাবিধ কর্মসূচিতে থাকতেন। বছর দুই আগে এক ফেব্রুয়ারিতে দিদির কেন্দ্র-বিরোধী ধর্নামঞ্চেও ছিলেন তিনি। আপাতত ধারাবাহিক থেকে সাময়িক বিরতি। সাময়িক ঠিকানা সোনারপুর— ওহ্ লাভলি!

দশভূজা: অভিনয়ের পাশাপাশি সংসারও সামাল দিতে হয়। এক কন্যাসন্তানের জননী। এর পরেও রাজনীতি করা কঠিন হয়ে যাবে না? লাভলি বলেছেন, “মেয়েরা চাইলে সবকিছুই করতে পারে। সবকিছুই সামাল দিতে হবে। অভিনয় করছি দশ বছর ধরে। সংসার করছি পাঁচ বছর। এবার রাজনীতিতে। এটাও সামলে নেব”— ওহ্ লাভলি!

সাগর ডাকে: ভোটের শেষে বেড়াতে যেতে চান। বেড়ানো তাঁর নেশা। তবে বিরাট পরিকল্পনা করে বেড়াতে যাওয়া না-পসন্দ। বরং ‘উঠল বাই তো কটক যাই’-তে বিশ্বাসী। কিন্তু পাহাড় নয়, পছন্দ সমুদ্র। মন খারাপ লাগলেই দৌড় সমুদ্রের দিকে। সবচেয়ে পছন্দের জায়গা গোয়া। সেখানে সময় কাটাতে ভাল লাগে। ভাল লাগে গোয়ার রং— ওহ্ লাভলি!

দিননামচা: কঠোর পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই। প্রচারে দিনের পুরোটাই চলে যাচ্ছে। সকালে ৭টার মধ্যে বেরিয়ে পড়ছেন। টানা ২-৩ ঘণ্টা প্রচার। তার পরে দলের মিটিং। আলোচনা, পরামর্শ নেওয়া-দেওয়া, দৈনিক অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া। মিটিং মিটলে দুপুরের খাওয়া। ২টো থেকে ৩টের মধ্যে খাওয়ার পর্ব সেরে আবার প্রচার। বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত ১১টা। তার মধ্যে দোলের দিন সোনারপুর এলাকার পল্লিবাসীর সঙ্গে সাদা-কালো শাড়ি আর পিঠ ঢাকা ব্লাউজে সবুজ আবির খেলা— ওহ্ লাভলি!

জলচল: দিনভর খাটুনির জন্য কোনও বিশেষ ডায়েট? নাহ্। তবে জল খাচ্ছেন বেশি। সঙ্গের ব্যাগে সাধারণ কয়েকটা ফল। সুযোগ পেলে তা দিয়ে পেট ভরাচ্ছেন। দুপুরে বাড়ির খাবার। ভাত-ডাল নিয়ে বেরোচ্ছেন বাড়ি থেকে। সেটাই সবচেয়ে পছন্দের— ওহ্ লাভলি!

আটপৌরে: রোদের মধ্যে ছুটোছুটি। ধুলো-ময়লা-রোদে জামাকাপড় নষ্ট হচ্ছে। তাই সঙ্গে অতিরিক্ত দু’সেট পোশাক। দিনে দু’বার পোশাক বদল মাস্ট! ভোটের পোশাক আটপৌরে শাড়ি। তবে বাঙালি বাড়িতে প্রচারের জন্য যাচ্ছেন বলে নয়। শাড়ি এমনিতেই সবচেয়ে পছন্দের পোশাক। শপিং করতে ভালবাসেন। ভালবাসেন শাড়ি কিনতে। দোকানে দোকানে ঘুরে ঘুরে শাড়ি কেনা পছন্দের। অনলাইনে কেনাকাটা? ভাল লাগে না একদম। কিন্তু লকডাউনের পর থেকে ওটাও তাঁর অভ্যাস হয়ে গিয়েছে— ওহ্ লাভলি!

দেবদ্বিজে: ঈশ্বরে বিশ্বাসী। মন্দিরে যান, মসজিদে যান। ইচ্ছে হলে গির্জাতেও যান। বাড়িতে নিয়মিত পুজো করেন। দেওয়ালে মা কালীর ছবি আছে। সেই ছবির সামনে দু’বেলা প্রণাম ঠোকেন। একটি লক্ষ্মীর মূর্তি আছে। সেটিও খুব প্রিয়। সামনে গিয়ে দাঁড়ালে শান্তি পান— ওহ্ লাভলি!

অভিনেতা থেকে নেতা: অভিনয়ের জগৎ থেকে একেবারে রাজনীতিতে। পরিজনেরা কী বলছেন? আপাতত স্বামী-কন্যাকে নিয়ে থাকেন। পরিবারের অন্যদের যাতায়াত অবশ্য লেগেই থাকে। সকলেই খুব খুশি। সকলেই তাঁর মতামতকে সম্মান করেন। বয়সে বড়রাও স্বাধীন ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে দেন। ফলে কোনও অসুবিধাই হয়নি— ওহ্ লাভলি!

খেলা হবে: মা ভোটে দাঁড়ানোয় কী বলেছে তিন বছরের কন্যা রিহানা? মায়ের জীবনে নতুন কিছু হচ্ছে বুঝতে পেরেছে। তা নিয়ে প্রবল উত্তেজিত। একদিন সকালে মাকে সেজেগুজে প্রচারে বেরোতে দেখে রিহানার চিৎকার— খেলা হবে! কোথা থেকে জানল ওই পুঁচকে রাজ্যের দিদির স্লোগান! মা বলছেন, ‘‘হাতে মোবাইল থাকলে জানতে অসুবিধা কোথায়! সবাই জানতে পারছে। রিহানাই বা পারবে না কেন!’’— ওহ্ লাভলি!

সৌম্য অদর্শন: স্বামী আইপিএস। ছিলেন হাওড়ার পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সৌম্য রায়। তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে স্ত্রী-র নাম ঘোষণার পরেই নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেয়, স্বামীকে ভোটের কোনও দায়িত্ব দেওয়া যাবে না— নো লাভলি!

তথ্য: স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়, রেখাচিত্র: সুমন চৌধুরী

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE