সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটল। চাপড়া কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিলেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি জেবের শেখ। বৃহস্পতিবার তিনি কৃষ্ণনগরে জেলা প্রশাসনিক কার্যালয়ে এসে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে গেলেন। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সামনে রেখেই তিনি নির্বাচনের ময়দানে লড়াই করবেন, তাঁর লড়াই আসলে চাপড়ায় তৃণমূলকে বাঁচিয়ে রাখার লড়াই।
চাপড়া থেকে এ বারও তৃণমূলের টিকিটে লড়াই করছেন দু’বারের বিধায়ক রুকবানুর রহমান। একটা সময় এই রুকবানুরের হাত ধরেই দলের ভিতরে উত্থান হয়েছিল জেবের শেখের। তিনি দলের ব্লক সভাপতি হন। পাশাপাশি তিনি জেলা পরিষদের সদস্যও। চাপড়া ব্লকে দলের রাশ কার হাতে থাকবে তা নিয়েই বছর দুয়ের আগে থেকে দু’জনের মধ্যে বিবাদ তৈরি হতে থাকে। অনেকেই মনে করেন, সেই বিবাদে ইন্ধন জুগিয়েছে জেলা নেতৃত্ব। জেবের বিদ্রোহ করার পরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ফোনে জেবের শেখের সঙ্গে কথা বলেছেন, কিন্তু চিঁড়ে ভেজেনি।
জেবের শেখের এক অনুগামী পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যের কথায়, “জেলার এক প্রভাবশালী নেতা জেবের শেখকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন টিকিটের বিষয়ে। সেটা না করলে হয়ত আমরা এতটা দূর এগোতাম না। বলতে পারেন এটা সম্মানের লড়াই।” আবার একই অভিযোগ করছেন রুরবানুরের ঘনিষ্ঠেরাও। তাঁদের কথায়, “আজকের এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী ওই জেলা নেতৃত্ব। তাঁরাই জেবেরকে প্রার্থী করার প্রলোভন দেখিয়ে এই জায়গায় নিয়ে এসেছেন। আজ আর জেবের তাঁদের নিয়ন্ত্রণে নেই।” তবে নাম গোপন রাখার শর্তে জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলছেন, “দু’জনের মধ্যে যে জিতবে সেই তো তৃণমূল। এখানে তাই আমাদের কাজ চুপ করে থাকা।”
এদিন চাপড়া থেকে প্রায় ১৪৪টি বাস ও শ’দেড়েক গাড়িতে সমর্থকদের নিয়ে বিশাল শোভাযাত্রা করে জেবের আসেন কৃষ্ণনগরে। সঙ্গে ছিলেন বেশ কিছু পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান, অঞ্চল সভাপতি থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যেরাও। এদেরই একজন পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ রাইহান মোল্লার দাবি, “মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার সময়ে পঞ্চায়েত সমিতির ৩৫ জন সদস্যের মধ্যে ২৩ জন জেবের শেখের সঙ্গে ছিলেন। আমরা জেবের শেখকে জিতিয়ে আনবই।” আর কর্মাধ্যক্ষ খোদাবক্স মণ্ডলের দাবি, “এ দিন আমাদের সঙ্গে ১২ জন পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান, ১৩ জন অঞ্চল সভাপতি, যুব নেতৃত্বের পাশাপাশি ব্লকের বেশির ভাগ পদাধিকারী ছিলেন। ছিলেন শাখা সংগঠনের জেলা নেতারাও। কাদের শক্তি বেশি তা এ বার আমরা বুঝিয়ে দেব।”
জেবার বলছেন, “দল আমাকে টিকিট না দিলেও আমি চাপড়ায় তৃণমূলকে বাঁচানোর জন্য লড়াই করছি। যাতে অন্য কোনও দল জিতে না যেতে পারে।” আর রুকবানুর বলছেন, “প্রথম কথা হল, ওরা এত টাকা কোথা থেকে পেল? আসলে বিজেপির মদতে কালো টাকা নিয়ে ময়দানে নেমেছে ওরা। মানুষকে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ভয় দেখিয়ে কৃষ্ণনগরে নিয়ে গিয়েছিল।” তিনি বলেন, “আমি দলকে জানিয়েছি। যারা দলের বিরুদ্ধে গিয়েছে তাদের প্রতি দল নিশ্চয়ই পদক্ষেপ করবে।”
জেলা তৃণমুলের মুখপাত্র দেবাশিস রায় বলেন, “দলের বিরুদ্ধে যারাই যাবে, দল তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেব করবে। বিষয়টি নিয়ে দলের ভিতরে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
তার আগে ভোট এসে চলে না যায়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy