প্রতীকী ছবি।
মেদিনীপুর: জেলার ১৫টি আসনে প্রার্থী ছিলেন ৭৬ জন। এর মধ্যে ৪৬ জনেরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। তালিকায় রয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরে সংযুক্ত মোর্চার ১৫ জন প্রার্থীই। কেউ দ্বিতীয়ও হতে পারেনি মোর্চা।
বাম সমর্থকদের অনেকে মনে করেছিলেন, নিদেনপক্ষে শালবনিতে সুশান্ত ঘোষ, নারায়ণগড়ে তাপস সিংহ, গড়বেতায় তপন ঘোষ দাগ কাটতে পারেন। তিন কেন্দ্রেই অবশ্য জামানত রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। ভোটের ফলে স্পষ্ট, জেলার সব কেন্দ্রেই তৃণমূল-বিজেপি দ্বিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায়ের স্বীকারোক্তি, ‘‘আমাদের সমর্থক-অনুগামীদের ভোটও তৃণমূল পেয়েছে। তাঁরা মনে করেছেন, বিজেপিকে ঠেকাতে তৃণমূলকে সমর্থন করা প্রয়োজন। বিজেপির লাগাতার সাম্প্রদায়িক বক্তব্যই তাঁদের ওই সিদ্ধান্তে পৌঁছে দিয়েছে। তবে এটা দলের নয়, আমার ব্যক্তিগত পর্যালোচনা।’’ জেলা কংগ্রেসের সভাপতি সমীর রায়েরও পর্যবেক্ষণ, ‘‘এ বার ভোটে তৃণমূল জেতেনি, বিজেপি হেরেছে। মানুষ চায়নি এখানে জাতপাতের রাজনীতি মাথা তুলুক।’’ সমীর পিংলায় প্রার্থী ছিলেন। পেয়েছেন ৭,১০৩ ভোট।
পশ্চিম মেদিনীপুরে দু’দফায় ভোট হয়েছিল। প্রথম দফায় ৬টি আসনে প্রার্থী ছিলেন মোট ৩৫ জন। দ্বিতীয় দফায় ৯টি আসনে প্রার্থী ছিলেন মোট ৪১ জন। দেখা যাচ্ছে, সব কেন্দ্রে তৃণমূল এবং বিজেপির প্রার্থী ছাড়া বাকি সব প্রার্থীরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী, জামানত বজায় রাখতে প্রদত্ত ভোটের ১৬.৬৬ শতাংশের বেশি ভোট পেতে হয় কোনও প্রার্থীকে। জেলার ৪৬ জন প্রার্থীই সেই ফলক ছুঁতে পারেননি।
নির্বাচন কমিশনের নিয়মানুযায়ী, ভোটে প্রার্থী হওয়ার জন্য সাধারণদের ক্ষেত্রে ‘সিকিউরিটি ডিপোজিট’ হিসেবে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা দিতে হয়। প্রার্থী জামানত রাখতে না পারলে ওই টাকা বাজেয়াপ্ত করে কমিশন। জেলা সিপিএমের এক নেতা মানছেন, ‘‘আমাদের সকলেরই জামানত জব্দ হয়েছে। কার্যত মাথাই তুলতে পারেননি কেউ।’’
গোটা রাজ্যের ধারা বজায় রেখে একদা ‘লাল-দুর্গ’ সেই পশ্চিম মেদিনীপুরেও এ বার বামেরা একেবারে শূন্য। গত বিধানসভা ভোটে বামেরা যা ভোট পেয়েছিল, তাতেও বড়সড় ধস নেমেছে। সুশান্ত ঘোষদের প্রার্থী করে ‘চমক’ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল সিপিএম। শালবনিতে দাঁড়িয়ে সুশান্ত পেয়েছেন ১৯,৮৫৯ ভোট। একদা তাঁর ‘ডান- হাত’ তপন ঘোষ গড়বেতায় দাঁড়িয়ে পেয়েছেন ২৩,০৪২ ভোট। কেন্দ্রওয়াড়ি ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে এটাই সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্তি মোর্চার।
জেলা সিপিএমের এক নেতা বলছেন, ‘‘এ বার ভোটে মেরুকরণের রাজনীতি হয়েছে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির অবশ্য দাবি, ‘‘মানুষ উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তাই তৃণমূলের এই বিপুল জয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy