বার্নপুরে দলীয় প্রচার কর্মসূচিতে আসানসোল দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষ। ছবি: পাপন চৌধুরী।
গত লোকসভা ভোটে শুধুমাত্র এই বিধানসভা এলাকা থেকেই বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয় ‘লিড’ পেয়েছিলেন প্রায় ৫৪ হাজার ভোটে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, এর বড় অংশই এসেছিল আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের গ্রামীণ এলাকাগুলি থেকে। মঙ্গলবার বার্নপুরের একটি প্রেক্ষাগৃহে আয়োজিত দলের কর্মী সম্মেলনেও ওই এলাকাগুলিই মূল ‘মাথা ব্যথার কারণ’ হিসেবে উঠে এসেছে, এমনই খবর তৃণমূল সূত্রে। তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের দাবি, গ্রাম ও শহরের নেতৃত্বের মধ্যে ‘সমন্বয়ের অভাব’ই এর অন্যতম কারণ। দলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন অবশ্য বলেন, ‘‘গ্রাম ও শহরের নেতৃত্বের মধ্যে যদি আদৌ কোথাও দূরত্ব থেকে থাকে, খুব দ্রুত মেটানো হবে।’’
সূত্রের খবর, ওই সম্মেলনে দাবি করা হয়, গত লোকসভা ভোটে এই বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির ৫৪ হাজার ভোটের লিডের অন্তত ৩০ হাজার ছিল ওই গ্রামীণ এলাকাগুলি থেকে। এলাকাগুলি: গ্রাম অধ্যুষিত আসানসোল পুরসভার পাঁচটি ওয়ার্ড এবং রানিগঞ্জ ব্লকের পাঁচটি পঞ্চায়েত। সম্মেলনে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশ দাবি করেন, এ বারেও এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে দশ হাজার ভোটে তাঁদের পিছিয়ে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য না করলেও তৃণমূলের ব্লক সভাপতি (হিরাপুর) লক্ষ্মণ ঠাকুরের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিধানসভা এলাকার ২২টি ওয়ার্ডের ১৩টি থেকে আমরা লিড পাব। বাকি ন’টি ওয়ার্ডে একটু বেশি নজর দিলে সেখান থেকেও লিড থাকবে।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই ন’টি ওয়ার্ডের পাঁচটিই গ্রামাঞ্চলে অবস্থিত। একই ‘তত্ত্ব’ উঠে আসে পাঁচটি
পঞ্চায়েত নিয়েও।
কিন্তু তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কেন এমন পর্যবেক্ষণ? শিবদাসন বলেন, ‘‘শহরাঞ্চলের সঙ্গে গ্রামাঞ্চলের নেতৃত্বের সমন্বয়ের অভাব আছে। দলের অনেক কর্মসূচির খবর গ্রামের নেতা-কর্মীরা পান না বলে অভিযোগ রয়েছে।’’ দ্বিতীয়ত, তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশের দাবি, লোকসভার ‘গেরুয়া হাওয়া’ অনেকটাই স্থিমিত হয়েছে ওই এলাকাগুলিতে। তাই এখনই লোকসভার ৩০ হাজারের ব্যবধান অনেকটাই কমানো সম্ভব। তা সম্ভবপর হবে ‘স্বাস্থ্যসাথী’, ‘দুয়ারে সরকার’-এর মতো রাজ্য সরকারের প্রকল্পের ‘সুফলগুলি’র কারণে। তবে ঘরোয়া আলোচনায় তাঁরা স্বীকার করছেন, প্রকল্পগুলি নিয়ে যতটা প্রচার হওয়া দরকার ছিল, ততটা হয়নি। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে ওই এলাকাগুলিতে প্রার্থী সায়নী ঘোষকে বেশি করে সময় দেওয়া, প্রকল্পগুলির প্রচারে জোর দেওয়ার কথা বলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
ওই সম্মেলনে এ দিন দলীয় নেতা-কর্মীদের উপস্থিতির হার নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন শিবদাসন। বলেন, ‘‘এ দিন যে সংখ্যায় কর্মীদের উপস্থিতি আশা করা হয়েছিল, তা পূরণ হয়নি। এটাতেই বোঝা যাচ্ছে কোথাও একটা খামতি থাকছে। দ্রুত এটা পূরণ করতে হবে।’’ ঘটনাচক্রে, এর অন্যতম কারণ, ওই এলাকাগুলিতে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ ‘কোন্দল’, দাবি স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একাংশের। যদিও সম্মেলনে উপস্থিত তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান মলয় ঘটকের দাবি, ‘‘আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে আমাদের কোন্দল নিয়ে সংবাদমাধ্যমের একাংশ প্রচার করলেও, এ দিন কর্মীদের উপস্থিতি প্রমাণ করল, দলে কোনও কোন্দল নেই।’’
এ দিকে, তিরাট পঞ্চায়েতের চেলোদ কমিউনিটি সেন্টার ও বল্লভপুর সরস্বতী মন্দিরে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠক করেন সায়নী। উপস্থিত ছিলেন দলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন, আসানসোল দক্ষিণ গ্রামীণ ব্লক সভাপতি দেবনারায়ণ দাস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy