ফাইল চিত্র।
একদা শোনা যেত, বামফ্রন্টের বিকল্প মানে উন্নততর বামফ্রন্ট। এ বার মনে হতেই পারে, আইটি সেলের বিকল্পও আদতে উন্নততর আইটি সেল। ভুয়ো খবর প্রচারের কারখানা সমাজমাধ্যমের আইটি সেলের নয়া ‘কীর্তি’তেও তেমনই রসিকতা অনেকের।
নেটরাজ্য আপাতত উত্তাল, শীতলখুচির ভোট বুথে আধা সামরিক বাহিনীর গুলিতে প্রাণহানির পরে তাঁদের ভূমিকায় আস্থা রেখে কিছু পোস্ট নিয়েই। যেমন জনে জনে ঘুরপাক খাওয়া একটি পোস্ট শুরুই হচ্ছে, ‘শীতলকুচি থেকে ভোটের ডিউটি করে ডিসিআরসি ফিরছি’ বলে। এর পরের বক্তব্য, ভোটের দিনে সিআইএসএফ জওয়ানদের গুলিতে চার জনের মৃত্যু কেন, কী ভাবে ঘটল, তা ‘জানি না’, প্রত্যক্ষদর্শী নই বলে। কিন্তু সবিস্তার বর্ণনা রয়েছে, ভোটের আগের রাতে বোমার শব্দে ওই জওয়ানরা কী ভাবে ভরসা দিয়েছিলেন। পঞ্চায়েত ভোটের ডিউটির বিভীষিকা উস্কে দেওয়া কিছু স্মৃতি এবং পরিশেষে মন্তব্য, এ বার ভোট শেষ করে প্রাণ নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারার জন্য ওই জওয়ানরাই ভরসা।
দেখে অনেকেরই মনে পড়ে যাচ্ছে গত লোকসভা ভোটের সময়কার ‘আমি বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র’ শীর্ষক পোস্টগুলো। সেখানে প্রত্যেকেই বিদ্যাসাগরের মূর্তি অমিত শাহের রোডশোয়ে শামিল কেউ ভাঙেননি প্রমাণ করতে ঝাঁপিয়েছিলেন। তবে এ বার শীতলখুচির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আধা সামরিক বাহিনীর সদর্থক ভূমিকা মনে করানোর কসরতটা খানিক আলাদাও। ‘আমি ভোটের ডিউটি করে ফিরছিলাম’ বলে দাবিদারের সংখ্যা বাড়ানো হয়নি। কখনও পোস্টটি কপি করে লেখা ‘সংগৃহীত'। ‘আম্পায়ারের চোখে শীতলখুচি’ হ্যাশট্যাগও ব্যবহার করা হয়েছে। এটা দেখে অনেকেরই অভিমত, আইটি সেল এখন কৌশল বদলাচ্ছে।
বাস্তবিক এর আগে ‘আমি বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র’-শীর্ষক পোস্টগুলি তো বটেই কেন্দ্রের বিতর্কিত কৃষি বিলের সমর্থনে ‘আমি ক্ষুদ্র চাষি পরিবারের সন্তান’ বলে অজস্র পোস্ট নিয়েও নেটরাজ্যে হাসি-মস্করা কম হয়নি। ওই সব পোস্টের বয়ান, শব্দ, দাঁড়ি,কমা সবই কার্যত অভিন্ন ছিল। আবার প্রতিবাদী কৃষকদের উপরে দিল্লির শাসকের অত্যাচার নিয়ে টুইটারে আন্তর্জাতিক জনমতের মোকাবিলায় #ইন্ডিয়াআগোনস্টপ্রোপাগান্ডা ডাক দিয়ে একযোগে সরব হন বলিউড ও ক্রিকেট জগতের তারকারা। তাঁদেরও কমবেশি এক বয়ান। তখনও ‘অ্যামিকেবল’ শব্দটির উপস্থিতি নিয়ে জোর হাসাহাসি হয়েছিল। এ যাত্রা, শীতলখুচির ঘটনার জেরে আধা সামরিক বাহিনীর হয়ে সাফাই গাইতে তাই ‘প্রচারকেরা’ যেন কিছুটা সতর্ক। সাইবার বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত অবশ্য এই নতুন প্রবণতায় অবাক নন। তাঁর কথায়, “ভুয়ো প্রচার ধরার জন্য এখন অনেকগুলো 'ফ্যাক্টস চেকিং' ওয়েবসাইট রয়েছে। অনেকেই এ সব প্রচারে প্রভাবিত হলেও, যা হোক একটা রটিয়ে পার পাওয়া এখন অত সোজা নয়। তাই লোকের মনে ছাপ ফেলতে প্রচারও ক্রমশ আরও ত্রুটিমুক্ত হবে। এটাই স্বাভাবিক।”
এ যাত্রা, শীতলখুচির ভোট ডিউটি সংক্রান্ত পোস্টে ‘সংগৃহীত’ ছাপ প্রচারে আগের ভুল সংশোধনের চেষ্টাই তুলে ধরছে। অত এব এই নিয়েও রসিকতা, ‘উৎসাহে কী না হয় কী না হয় চেষ্টায়, অভ্যাসে চটপট হাত পাকে শেষটায়!’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy