ধনেখালিতে স্টেট জেনারেল হাসপাতাল তৈরির কাজ চলছে। — নিজস্ব চিত্র।
লোকে বলে, বাম আমলে এ তল্লাটে গাছের পাতা নড়ত অনিল বসুর অঙ্গুলি হেলনে। ‘সন্ত্রাসের’ ছবি দেখা যেত বছরভর।
বাম আমল শেষ হয়ে গিয়েছে দশ বছর আগে। তা হলে ধনেখালিতে ‘সন্ত্রাস’ এর জায়গায় এখন শুধুই ‘উন্নয়ন’? এলাকাবাসী সে কথা মানছেন না। বিধানসভা ভোটের মুখে আমপান ক্ষতিপূরণে ‘দুর্নীতি’, ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ না পাওয়া, উন্নয়ন সব কিছু ছাপিয়ে এখনও সন্ত্রাসের কথাই ঘুরে ফিরে চলে আসছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও সে ছবি দেখা গিয়েছে।
তা হলে কি শুধু সন্ত্রাস হয়েছে? উন্নয়ন হয়নি?
না, এলাকাবাসী সে কথাও মানছেন না। তাঁরা বলছেন, শ্মশান, কবরস্থান, ঢালাই রাস্তা, পিচ রাস্তা, বহু জায়গায় হাইমাস্ট আলো, আইটিআই কলেজ, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থা, কিসান মান্ডি, খাদ্য দফতরের গুদাম— অনেক কিছুই হয়েছে। কিন্তু সে সব নিয়ে প্রশ্নও তুলছেন বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, ওই সব কাজের নামে আসলে নিজেদের পকেট ভরিয়েছেন শাসক দলের নেতারা। সিপিএমের এরিয়া কমিটির সম্পাদক দিলীপ মুখোপাধ্যায়ের শ্লেষ, ‘‘উন্নয়ন না হলে ওদের উপার্জন হবে কোন পথে? হাসপাতাল ভবন হয়েছে। তবে ডাক্তার নেই। হাইমাস্ট আলো হয়েছে। রাস্তায় ঢালাইয়ের উপর ব্ল্যাকটপ হয়েছে। টাকা না খরচ করলে বিভিন্ন প্রকল্পে রোজগারের টাকা আসবে কোথা থেকে?’’
তৃণমূল অভিযোগ মানেনি। নেতারা দাবি করেছেন, শুধু উন্নয়নের জোয়ারেই এ বারেও জিতে যাবেন তাঁদের প্রার্থী অসীমা পাত্র। কিন্তু বিরোধীরা দাবি করছেন, জেতা অতটা সহজ নয়। আমপানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতির কথা তাঁরা সামনে আনছেন। ছোট ছোট স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির ঋণমুক্তির সামান্য সুবিধাও মেলেনি বলে দাবি করেছেন সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের নেতা সজল অধিকারী। হয়নি কৃষিভিত্তিক শিল্পও।
সিপিএম মনে করছে, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে তৃণমূল এখানে কিছুটা গুটিয়ে গিয়েছে। পালে হাওয়া লেগেছে পদ্ম-শিবিরের। সিপিএম নেতা দিলীপবাবু জানান, এলাকায় দাপিয়ে বেড়ানো তৃণমূল নেতারা সব ঘরমুখো হয়ে গিয়েছেন। তাঁরা দলীয় কার্যালয়গুলি খুলতে পারছেন।
বস্তুত তৃণমূলের দাপটে এখানে সিপিএমের ২৭টি কার্যালয়েই একসময়ে তালা পড়ে গিয়েছিল। ৪-৫টি কার্যালয় ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ। দু’বছর ধরে আবার তৃণমূলের থেকে কিছু কার্যালয় বিজেপি দখল করে নিয়েছে, এ কথাও শোনা যাচ্ছে।
বিজেপি অভিযোগ মানেনি। কিন্তু ঘুরে-ফিরে ধনেখালিতে শোনা যাচ্ছে সেই ‘সন্ত্রাস’-এর কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy