Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls 2021: ভোট-ভাগ্যে ভরসা চা আর কাঁটাতারই

নেপালের সঙ্গে বাণিজ্য-নীতি বদলায়নি ভারত। নেপালি চায়ের পরোক্ষ প্রভাবেই সমতলের বাগানের ব্যবসায় মন্দা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শান্তশ্রী মজুমদার
শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২১ ০৬:২৫
Share: Save:

মনে শান্তি নেই মুড়িখাওয়া, ধনিয়ামোড় গ্রামের একটি অংশের মানুষের। ফাঁসিদেওয়া বিধানসভার ওই গ্রামগুলির পাশেই বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতার নেই। বসন্তে প্রকৃতি দরাজ হলেও সীমান্তে ভোটের কয়েকদিন কড়াকড়ি বাড়ে। আমদানি কমে। কড়াকড়ি না থাকা সত্ত্বেও শান্তিতে নেই দুধগেট, পানিট্যাঙ্কির বাগানবস্তির লোকজন। নেপাল সীমান্ত দিয়ে দিনরাত ট্রাকে নেপালি চা আসছে। মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি আসনে ২৫টি বাগানের অনেকগুলিরই জৌলুস কমিয়েছে নেপালের চা। এই কেন্দ্রে বাগান শ্রমিকদের চিন্তা সারাবছর।

শিলিগুড়ি সমতলের এই দু’টি আসনের ভোট এ বার বড় বেসুরো। প্রায় ৫০০ মিটার বেড়া দুই দেশের মাঝখান থেকে উধাও ফাঁসিদেওয়া বিধানসভায়। ভোট আসে, যায়। বেড়া দেওয়া হয়ে ওঠে না। এই কেন্দ্রের অন্তত ৪টি পঞ্চায়েতের একটি অংশের মানুষের আর্থিক স্বচ্ছলতা অবৈধ পাচারের উপর নির্ভর করে বলে অভিযোগ। শেষ দু’বারের বিধানসভায় এখানকার কংগ্রেস প্রার্থী সুনীল তিরকে জিতেছেন। কিন্তু এলাকায় তাঁকে সেরকম দেখা যায়নি বলেই অভিযোগে হাওয়া দিচ্ছেন তৃণমূল এবং বিজেপির প্রার্থীরা। তাঁদের দাবি, সমীকরণ আগের জায়গায় দাঁড়িয়ে নেই। এ বার লড়াই ত্রিমুখী। পাচারের অভিযোগ ভোটের সময় কোনও দলই জোরালো ভাবে তুলতে চায় না। তৃণমূলের প্রার্থী ছোটন কিস্কুর কথায়, ‘‘এ বারের প্রচারে কাঁটাতার হয়তো নেই। কিন্তু সীমান্তে কাঁটাতার দিয়ে পাচার বন্ধের দাবি বরাবর করেছি।’’ বিজেপি সূত্রের খবর, দলের প্রার্থী দুর্গা মুর্মু পাচার বন্ধের কথা বলছেন, তবে সীমান্ত ঘেঁষা এলাকায় নয়।

নেপাল সীমান্তের পানিট্যাঙ্কি দিয়ে চলে স্বীকৃত আন্তর্জাতিক ব্যবসা। তার উপর নির্ভর খড়িবাড়ি, পানিট্যাঙ্কি এবং নকশালবাড়ির একটি বড় অংশের মানুষের জীবিকা। কিন্তু নেপাল সীমান্ত দিয়ে চায়ের আমদানিই চিন্তা বাড়িয়েছে এলাকায়। এখানকার পানিট্যাঙ্কি ও বিহারের যোগবাণী দিয়ে বছরে অন্তত ১৮-২০ লক্ষ কেজি নেপালি সিটিসি চা এসে ভারতীয় চায়ের বাজার ধসাচ্ছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। নিস্তার পায়নি সমতলের বাগানগুলিও। এখানেও গত দু’টি নির্বাচনে কংগ্রেসের শঙ্কর মালাকারের দিকেই পাল্লা ভারী ছিল। কিন্তু নতুন সমীকরণে বিজেপি যেমন শক্তি বাড়িয়েছে, তেমনি টক্কর নেওয়ার জায়গা প্রার্থী বদল করে তৈরি করেছে তৃণমূলও। বাগান এলাকায় নেপালি ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশের ভোট দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে তৃণমূল প্রার্থী রাজেন সুনদাস।

নেপালের সঙ্গে বাণিজ্য-নীতি বদলায়নি ভারত। নেপালি চায়ের পরোক্ষ প্রভাবেই সমতলের বাগানের ব্যবসায় মন্দা। বড় অংশের বাগান শ্রমিক একের পর এক সুযোগ সুবিধা হারাচ্ছেন বলে অভিযোগ। এ সব বলে বাগানের ভোট নিজেদের দখলে আনার চেষ্টা করছেন তৃণমূল প্রার্থী।

বাগানে পাট্টার অধিকার দেওয়া হবে বলে প্রচার চালাচ্ছেন বিজেপির প্রার্থী। কিন্তু সীমান্তের ওপার থেকে কেন চা আসা বন্ধ হচ্ছে না? প্রার্থীর দাবি, বিদেশনীতি কেন্দ্রীয় সরকার ঠিক করে। তাঁর কথায়, ‘‘বাগানের শ্রমিক পাট্টা পাননি। ন্যূনতম মজুরি পাচ্ছেন না। আমরা সেটাই তাঁদের দেওয়া আশ্বাস দিয়েছি।’’ সমতলের এই দুটি আসনে নির্বাচনে নীরব কাঁটাতারের খেলাই যেন টের পাওয়া যায়। বাংলাদেশ সীমান্তের ফাঁসিদেওয়ায় নেপাল সীমান্তের মাটিগাড়া-নকশালবাড়িতেও স্বস্তিতে নেই বাগানের বড় অংশের মানুষ। দুই কেন্দ্রের আন্তর্জাতিক সীমান্ত না চাইলেও প্রভাব ফেলে ভোটে।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC West Bengal Assembly Election 2021
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy