ভোট দিয়ে ফুরফুরে দিলীপ ঘোষ। শনিবার। ছবি: রঞ্জন পাল। (ডান দিকে) সপরিবার ভোট দিলেন ছত্রধর মাহাতো। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।
একজনের বাড়িতে বিশেষ আসা হয় না। অন্যজন জেলমুক্ত হয়ে এখন বাড়িতেই আছেন।
প্রথমজনের ঘাড়ে গোটা রাজ্যের দায়িত্ব। দ্বিতীয়জন দলের রাজ্যপদে থাকলেও এলাকারই দায়িত্বপ্রাপ্ত।
ভোটের দিনও বিপরীত ভূমিকাতেই দেখা গেল দিলীপ ঘোষ ও ছত্রধর মাহাতোকে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি গ্রামের বাড়িতে ভোট দিতে এসে টানা পাঁচ ঘণ্টা এলাকায় পড়ে থাকলেন, সারলেন জনসংযোগ। আর তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ‘জঙ্গলমহলের মুখ’ ছত্রধর নিজের ভোটটুকু দেওয়ার বাইরে আর তেমন সক্রিয়তাই দেখালেন না।
শনিবার সকাল ১১টা নাগাদ ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুরের কুলিয়ানা গ্রামের বাড়িতে আসেন দিলীপ। কুলিয়ানা জুনিয়র হাইস্কুলের ভোটকেন্দ্রে দেড়টা নাগাদ ভোট ইভিএমের বোতাম টিপেই বিজেপির রাজ্য সভাপতির প্রশ্ন, ‘‘আওয়াজ হল না তো?’’ প্রিসাইডিং অফিসার বললেন, ‘‘পাঁচ সেকেন্ড ধৈর্য ধরুন।’’ তারপর বিপ শব্দ হাসি খেলে যায় দিলীপের মুখে। ভোট শেষে গ্রামবাসীর সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথাও বলেন। স্থানীয়রা তাঁকে হরিনাম সংকর্তীনে আসার আমন্ত্রণ জানান। গাড়িতে বাড়ি ফেরার পথে বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য সম্পাদক অনুরণ সেনাপতি এগিয়ে এসে গিয়ে কথা বলেন। ভোট কী রকম হচ্ছে খোঁজ নেন দিলীপ।
এ দিন আগাগোড়াই খোশমেজাজে ছিলেন দিলীপ। বাড়ি ফিরে ভাত, শাক, ডাল, পটলের তরকারি, মাছের ঝাল, পাঁপড় দিয়ে মধ্যাহ্নভোজ সারেন। মা পুষ্পলতা বাড়িতে ছিলেন না। ভাই হীরক ঘোষ, হীরকের স্ত্রী গঙ্গা ও তাঁদের দুই ছেলে-মেয়ের সঙ্গে ঘণ্টা চারেক সময় কাটান দিলীপ। হীরক বলছিলেন, ‘‘দাদা যে শেষ কবে বাড়িতে এতটা সময় কাটিয়েছেন মনে পড়েছে না।’’ দিলীপও বলেন, ‘‘প্রতিবার বাড়িতে এসে শুধু খেয়ে চলে যাই। অনেকদিন পর অনেকটা সময় কাটালাম।’’
জঙ্গলমহলে তৃণমূলের ভোট সেনাপতি ছত্রধর অবশ্য ভোটের দিন বেশিরভাগ সময়টাই কাটালেন ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটির বাইরে। মা বেদনবালা অসুস্থ হয়ে ভর্তি হন সাতসকালেই। তবে ভোট শেষে রাতেই মাকে বাড়ি নিয়ে যান ছত্রধর।
সকালে অবশ্য স্ত্রী নিয়তি ও বড় ছেলে ধৃতিপ্রসাদকে নিয়ে গাড়িতে ভোট দিতে যান। বীরকাঁড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথের অদূরে জামশোলায় তৃণমূল শিবিরে গিয়ে লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে ছিলেন লালগড় ব্লক সভাপতি শ্যামল মাহাতো। তারপর ভোট দিয়ে বেরিয়ে ছত্রধর বলেন, ‘‘২০০৯ সালের পরে এই ভোট দিলাম। অদ্ভুত ভাললাগার অনুভূতি। ২০১১ সালে জেল থেকে নির্দল হিসেবে ভোটে লড়লেও সে বার ভোট দিতে পারিনি।’’
ভোট দিয়েই ছত্রধর ছোটেন লালগড় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মাকে দেখতে। তারপর তাঁকে ঝাড়গ্রামে নিয়ে যান। রাত পর্যন্ত চারজন সশস্ত্র রক্ষী-সহ ছত্রধর ও নিয়তি ওয়ার্ডের বাইরেই ঠায় বসে ছিলেন। রাত পৌনে ৮টা নাগাদ মাকে ‘স্বেচ্ছায় ছুটি’ করিয়ে বাড়ির পথ ধরেন ছত্রধর।
ভোটের দিন তো মাঠে থাকতেই পারলেন না? ছত্রধরের জবাব, ‘‘মায়ের অসুস্থতার জন্য পারলাম না। ফোনে নিয়মিত খোঁজ নিয়েছি। পুরুলিয়া ও বাঁকুড়াতেও খোঁজ নিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy