এই সেই পোস্টার। নিজস্ব চিত্র।
ভোটের ফল ঘোষণা পর্যন্ত দোকানে রাজনৈতিক চর্চা নয়—পোস্টার সেঁটে নিদান দিয়েছেন বর্ধমানের একটি চায়ের দোকানের মালিক ও তাঁর স্ত্রী। তাঁদের আশঙ্কা, রাজনৈতিক তর্ক থেকে অশান্তি ছড়াতে পারে।
পূর্ব বর্ধমানের সদর ২ ব্লকের বড়শুল পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে ‘জেঠুর চায়ের দোকান’ চেনেন না এমন লোক পাওয়া কঠিন। বর্ধমান (উত্তর) বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ওই এলাকায় ৪১ বছর ধরে দোকান চালিয়ে আসছেন ষাটোর্ধ্ব দূর্জয় মণ্ডল ও তাঁর স্ত্রী ভারতীদেবী। ঘরে রয়েছে তাঁদের প্রতিবন্ধী ছেলে। রোজই ‘জেঠুর চায়ের দোকানে’ ভিড় জমান স্থানীয় যুবকেরা। সকাল-সন্ধ্যা রাজনৈতিক তরজায় গমগম করে চায়ের দোকান। বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হতেই তপ্ত হতে শুরু করেছে রাজনীতির লড়াই।
ওই দম্পতি জানান, চায়ের আড্ডার মূল বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে রাজনীতি। বন্ধুরা ভাগ হয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন শিবিরে। এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখেছেন তাঁরা। তাই সপ্তাহখানেক আগে দোকানে পোস্টার সেঁটে দিয়েছেন ওই দম্পতি। জানিয়ে দিয়েছেন, ভোটের ফলপ্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত দোকানে কোনও রাজনৈতিক আলোচনা করা যাবে না।
ভারতীদেবী বলেন, ‘‘গরিবের সংসারে এই দোকানটাই সম্বল। আমি চাই না, রাজনৈতিক আলোচনা থেকে উত্তেজনা সৃষ্টি হোক। এমন হলে ব্যবসায় ক্ষতি হতে পারে।’’ দুর্জয়বাবুর বক্তব্য, ‘‘রাজনৈতিক তর্ক থেকে অশান্তি ছড়াতে পারে। তাই দোকানে রাজনৈতিক তর্ক বন্ধ করা হয়েছে।’’ দোকানে রাজনৈতিক তরজা হলেও কোনও দিনই তা নিয়ে অশান্তি ছড়ায়নি বলে জানিয়েছেন ওই দম্পতি। কেউ তাঁকে দোকানে রাজনীতি নিয়ে আলোচনা বন্ধের নির্দেশও দেয়নি।
তবে কেন এই পোস্টার? দম্পতির কথায়, ‘এ বারের ভোটটা একটু অন্য রকম।’’
পোস্টার ঘিরেও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। বর্ধমান (উত্তর) কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী চণ্ডীচরণ লেট বলেন, ‘‘ভোট নিয়ে মানুষ কতটা ভীত ও সন্ত্রস্ত, এই ঘটনা সেটাই প্রমাণ করে।’’ বিজেপি প্রার্থী রাধাকান্ত রায় অবশ্য এর মধ্যে নতুন কিছু দেখছেন না। তিনি মনে করেন, ‘‘শান্তি বজায় রাখতে কেউ এ ধরনের পোস্টার দিতেই পারেন। এটা তাঁর নিজস্ব ব্যাপার।’’ ওই আসনের তৃণমূল প্রার্থী নিশীথ মালিক বলেন, ‘‘ভোট নিয়ে উৎসাহ থাকবে এটাই স্বভাবিক। তবে তা নিয়ে অশান্তি যাতে না হয়, সেটা মনে করানোর জন্যই এই উদ্যোগ বলে আমার মনে হয়। এর মধ্যে রাজনীতি না টানাই ভাল।’’
ওই দম্পতি জানিয়েছেন, পোস্টার সাঁটানোয় তাঁদের দোকানে ভিড় কমেনি। দুর্জয়বাবু বলেন, ‘‘এখনও মাঝেমধ্যে কেউ কেউ রাজনৈতিক আলোচনা শুরু করছেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সতর্ক করে দিচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy