প্রতীকী ছবি।
পূর্ব মেদিনীপুরে ১৬টি আসনের মধ্যে ৯টিতে জিতে এগিয়ে তৃণমূল।বিরোধী বিজেপি ৭টী আসনে জয়ী হয়েছে। জেলায় প্রায় অস্তিত্ব হারিয়েছে সংযুক্ত মোর্চা। আসন সংখ্যার নিরিখে তৃণমূল প্রথম এবং বিজেপি দ্বিতীয় দল হিসাবে প্রতিষ্ঠা পেলেও জেলার ২০ হাজার ভোটার তাদের কারও উপরেই আস্থা রাখতে পারলেন না। দেখা গেল হাজার প্রতিশ্রুতি, উন্নয়নের কথা বিভিন্ন দল তাদের প্রচারে তুলে ধরলেও তা প্রভাবিত করতে পারল না বহু ভোটারকে। বিধানসভা নির্বাচনে জেলায় কুড়ি হাজারেরও বেশি মানুষ ভোট দিলেন নোটায়। অর্থাৎ প্রার্থী হিসেবে কাউকেই পছন্দ করেননি এই ভোটাররা। আরও দেখা গিয়েছে, জেলার কয়েকটি কেন্দ্রে জয়ের ব্যবধানের চেয়ে নোটায় ভোটদানের সংখ্যা বেশি। এই বিপুল পরিমাণ ভোটার নোটা ছেড়ে প্রার্থীদের ভোট দিলে ভোটের ফল অন্যরকম হতে পারত। মানছে শাসক থেকে বিরোধী প্রত্যেকেই।
এবার নির্বাচনে জেলার ২০,২০৯ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন নোটায়। নোটায় ভোটদানের সংখ্যার নিরিখে শীর্ষে রয়েছে মহিষাদল। এখানে নোটায় ভোট সংখ্যা ১৭৬৫। নোটায় সব থেকে কম ভোট পড়েছে পটাশপুর কেন্দ্রে। সংখ্যাটা ৮৬১। রাজ্য-রাজনীতিতে সর্বাধিক চর্চিত কেন্দ্র নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে নোটায় ভোট পড়েছে ১০৯০টি। যা এই কেন্দ্রের সমস্ত প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট অনুযায়ী চতুর্থ নম্বরে রয়েছে। শতাংশের নিরিখে এই কেন্দ্রে নোটায় ভোট গিয়েছে ০.৪৮ শতাংশ। তমলুক কেন্দ্রে মাত্র ৭৯৩ ভোটে জিতেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র। আর এই কেন্দ্রে নোটায় ভোট পড়েছে ১১৩৬টি। যা এই কেন্দ্রের ভোট শতাংশের নিরিখে ০.৪৮। ময়না বিধানসভা কেন্দ্রে এবার জয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী তথা প্রাক্তন ক্রিকেটার অশোক ডিন্ডা। তৃণমূলের সংগ্রাম দোলাইকে তিনি হারিয়েছেন ১২৬০ ভোটে। আর এই কেন্দ্রে নোটায় ভোট পড়েছে ১৩৩৫টি। মহিষাদল কেন্দ্রে তৃণমূলের বিজয়ী প্রার্থী তিলক কুমার চক্রবর্তীর জয়ের ব্যবধান ২৩৮৬। এই কেন্দ্রে নোটায় ভোট পড়েছে ১৭৬৫টি। জেলায় যে সমস্ত কেন্দ্রে খুব অল্প ব্যবধানে জয় পেয়েছেন প্রার্থীরা, নোটার এই বিপুল সংখ্যক ভোট প্রার্থীদের দিকে গেলে জেলার ফল অন্যরকম হত বলে মনে করছে তৃণমূল, বিজেপি উভয়েই।
প্রচণ্ড গরমে রোদের মধ্যে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েও কেন ভোট দেওয়ার সময় কোনও প্রার্থীকেই পছন্দ হল না জেলার কুড়ি হাজারেরও বেশি ভোটারের?
নোটায় ভোট দেওয়া এক ভোটারের কথায়, ‘‘আমার মনে হয়েছে আমার বিধানসভা কেন্দ্রের প্রত্যেকটি প্রার্থীই ধান্দাবাজ।ভোট ফুরোলে এঁরা মানুষের সাথে থাকবেন না। এলাকার উন্নয়নের কাজ করার মতো এঁদের কেউ যোগ্য বলে আমি মনে করি না। তাই নোটায় ভোট দিয়েছি।’’
যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্রর যুক্তি, ‘‘ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয় আমরা সেই সমস্ত মানুষের কাছে পৌঁছতে পারিনি যাঁরা কোনও ক্ষোভের থেকে হয়তো কাউকেই বেছে নেননি। আগামী দিনে এই বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা আরও নিবিড় জনসংযোগ চালিয়ে যাব।’’
নোটা প্রসঙ্গে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি নবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘কেন এত সংখ্যক মানুষ নোটায় ভোট দিলেন তা বলতে পারব না। তবে মনে হয় বাম ও কংগ্রেসের ভোটাররাই নোটায় সর্বাধিক ভোট দিয়ে থাকতে পারেন। যেহেতু ওই দুটি দল নিজেরা প্রতিযোগিতায় নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy