ছবি পিটিআই।
যুদ্ধের দিন ঘনিয়ে আসছে। প্রথম দফার ভোটের পর দিন থেকেই নন্দীগ্রামের রণাঙ্গণে হাজির হতে চলেছেন প্রার্থী। কিন্তু তার দিন কয়েক আগেও প্রচারে দেখা যাচ্ছে না সেই প্রার্থীর ‘সেনাপতি’দের। জমি আন্দোলন পর্বের মামলা পুনর্বহাল হওয়ার পরেই নন্দীগ্রামের ছবিটা এমন বলে জানাচ্ছেন স্থানীয়েরা।
নন্দীগ্রামে ভোট ১ এপ্রিল। এবারের বিধানসভা ভোটের দুই হেভিওয়েট প্রার্থী তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ওই কেন্দ্রে একে অন্যের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। ভোট প্রচারে আগামী রবিবারই নন্দীগ্রামে গিয়ে তিনদিন থাকার কথা মমতার। সেই মতো ওই কেন্দ্রে এই সময় তাঁর মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান এবং স্থানীয় দাপুটে নেতা আবু তাহেরদের তরফে তৎপরতা জোরকদমে দেখা যাওয়ার কথা।
কিন্তু নন্দীগ্রামের বাস্তব ছবিটা অন্য। স্থানীয় বাসিন্দা তথা বিরোধীদের দাবি, গত কয়েক দিনে ওই তৃণমূল নেতাদের তাঁদের দলীয় কর্মসূচিকে দেখা যাচ্ছে না। সোমবার নন্দীগ্রামে মমতার সমর্থনে প্রচার করতে গিয়েছিলেন তৃণমূলের তারকা সাংসদ শতাব্দী রায়। সেখানে ছিলেন না মমতার নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান, পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আবু তাহের বা ব্লক তৃণমূল সভাপতি কেউই।
রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, এর পিছনে কারণ হিসাবে রয়েছে নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলন মামলার পুনর্বহাল এবং তাতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া। গত বছর লকডাউনের সময় ২০০৭ সালে জমি আন্দোলন পর্বের ৯টি মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছিল হলদিয়া মহকুমা আদালতে। সম্প্রতি এর মধ্যে ছ’টির আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যায় বিজেপি। তাতে মামলাগুলি ফের চালু হয়েছে। এর ফলে ওই মামলাগুলির অভিযুক্ত সুফিয়ান, তাহের-সহ নন্দীগ্রামের শতাধিক তৃণমূল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।
স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, গত কয়েকদিন ধরে নন্দীগ্রামের দুটি ব্লকে মহিলা এবং যুব তৃণমূল কর্মীরা বিভিন্ন অঞ্চলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয় সুনিশ্চিত করার জন্য সুফিয়ান, তাহেরের মতো নেতাদের প্রথম সারিতে রাখা হলেও, বিকল্প একাধিক দল তৈরি রাখা রয়েছে। আপাতত তারাই প্রচার চালাচ্ছে। বিষয়টি মানছেন নন্দীগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি স্বদেশ দাস। তিনি বলছেন, ‘‘নন্দীগ্রামের ব্লক স্তরের তৃণমূল নেতারা প্রকাশ্যে বেরোননি। তবে প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার আগের মতই চলছে।’’ এ নিয়ে তমলুক সাংগঠনিক জেলা বিজেপি’র সহ-সভাপতি প্রলয় পাল বলছেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে হাজারো প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তাই তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারা কেউ প্রচারে বেরোচ্ছেন না।’’
তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, জমি-মামলা সংক্রান্ত হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অভিযুক্তদের তরফে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে রাজ্য সরকার। গত সপ্তাহে অভিযুক্তদের আগাম জামিনের আবেদনও জমা দেওয়া হয়েছে। আর সুফিয়ান বলছেন, ‘‘পুরোটাই প্রতিশোধের মানসিকতা। তবে আমি প্রচারে না বেরলেও নেত্রীর কোনও অসুবিধে হবে না। মানুষ বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট বাক্সে জবাব দিয়ে দেবেন।’’ ষড়যন্ত্রের অভিযোগ মানতে রাজি নন নন্দকুমারের বিজেপি প্রার্থী নীলাঞ্জন অধিকারী। পেশায় আইনজীবী নীলাঞ্জনই পুরনো ওই মামলাগুলিকে পুনরায় চালু করার জন্য হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন। সোমবার তিনি বলেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। রাজ্য সরকার যে পদ্ধতিতে মামলাগুলি তুলে নিয়েছিল তাতে ত্রুটি ছিল। তাই মামলা করেছিলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy