আজ, এই মঞ্চেই সভা করার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। নিজস্ব চিত্র।
প্রধানমন্ত্রীর সভার প্যান্ডেল করতে যাঁরা আসছেন, তাঁরা ‘বহিরাগত’ এবং তাঁদের থেকে করোনা ছড়াচ্ছে বলে দাবি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শুক্রবার নদিয়ার নবদ্বীপের একটি সভা থেকে ওই মন্তব্য করেন তিনি। আজ, শনিবার, জামুড়িয়ার নিঘায় সভা করার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। শুক্রবার নিঘায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, যাঁরা প্যান্ডেল বাঁধছেন, তাঁরা ভিন্-রাজ্যের বাসিন্দা। কিন্তু তাঁদের প্রত্যেকেরই কোভিড পরীক্ষা করানো হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
মমতা এ দিন বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সভার জন্য প্যান্ডেল তৈরি করতে বাইরে থেকে হাজার-হাজার লোক আসছেন এবং তাঁরা বাংলায় কোভিড ছড়িয়ে পালাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই মিটিং করতে আসতে পারেন। কিন্তু এখানকার লোক দিয়ে প্যান্ডেল বানান। যাঁরা প্যান্ডেল বানাবেন, তাঁদের কোভিড টেস্ট করা হোক। গুজরাত, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড থেকে লোক এনে কেন প্যান্ডেল হবে?’’ এর পরেই তাঁর সংযোজন: ‘‘নরেন্দ্র মোদীজি আপনাকে আমরা বারবার বলছি, বাংলায় কোভিড ছড়াবেন না।’’
এ দিকে, চর্চা শুরু হয়েছে মমতার ‘কোভিড-ছড়ানোর’ অভিযোগটি নিয়ে। তবে জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) অনুরাগ শ্রীবাস্তব সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে বলেন, ‘‘এসপিজি-র নির্দেশিকা মেনে, সভার কাজে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের সবারই কোভিড-টেস্ট করানো হয়েছে।’’
মমতার ওই মন্তব্যের পরে, নিঘায় পরিত্যক্ত এরোড্রোম চত্বর, যেখানে আজ সভা হওয়ার কথা, সেখানে গিয়ে দেখা গেল, বহু শ্রমিক প্যান্ডেল বাঁধার কাজটি করছেন। তাঁদেরই এক জন রাজারাম যাদব বলেন, ‘‘আমরা ঝাড়খণ্ডের রাঁচীর একটি সংস্থায় কাজ করি। চার দিন ধরে এখানে ঝাড়খণ্ডের প্রায় আড়াইশো জন কাজ করছি। এর আগে উলুবেড়িয়া, বর্ধমান, মেদিনীপুর-সহ রাজ্যের নানা জায়গায় প্রধানমন্ত্রীর সভার প্যান্ডেল বাঁধার কাজ করেছি।’’ এর পরেই তিনি জানান, বছরখানেক আগে বাঁকুড়াতে তৃণমূলের সভার জন্যও প্যান্ডেল বেঁধেছিলেন তাঁরা। পাশাপাশি, গত বছর বিহারে নির্বাচনের সময়ে তাঁরা কংগ্রেসের সভার প্যান্ডেলও বেঁধেছিলেন বলে দাবি।
বিশেষ ধরনের প্যান্ডেল বাঁধতেই রাঁচীর ওই সংস্থার ডাক পড়ে বলে জানা গিয়েছে। পশ্চিম বর্ধমান জেলা ডেকরেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক শঙ্কর মাহাতো বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সভায় যে প্যান্ডেলগুলি বাঁধা হচ্ছে, সেগুলির পোশাকি নাম, ‘জার্মান হ্যাঙ্গার’। এত বিপুল আয়তনের প্যান্ডেল বাঁধার কারিগরি দক্ষতা আমাদের জেলায় নেই।’’ তবে কলকাতায় সে পরিকাঠামো আছে বলেও
তিনি জানান।
তা হলে কলকাতার ডেকরেটর্সদের না ডেকে কেন রাঁচীর সংস্থাকে বরাত দেওয়া? বিজেপির পশ্চিম বর্ধমান জেলা মিডিয়া সেলের প্রধান প্রমোদ পাঠকের দাবি, ‘‘আমরা যে ডেকরেটরকে দিয়ে কাজ করাচ্ছি, তাঁদের এই কাজে অভিজ্ঞতা বিপুল। মাত্র চার দিনের মধ্যে এই কাজ করতে তাই তাঁদেরই বরাত দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কোনও ‘বহিরাগত’-তত্ত্ব নেই।’’ তবে তিনি এ-ও জানান, সভার মূল প্যান্ডেলের কাছেই কয়েকটি অস্থায়ী তাঁবু তৈরি করা হয়েছে। সেগুলি জামুড়িয়ার ডেকরেটরই তৈরি করেছেন।
তবে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘এ রাজ্যে বহিরাগতদের আনছে বিজেপি। তাঁদের থেকে করোনা ছড়াচ্ছে। নেত্রীর পর্যবেক্ষণ একেবারেই ঠিক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy