হুইল চেয়ারেই নন্দীগ্রাম ঘুরছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
ঠিক ১৮ দিন পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এলেন সেই বিরুলিয়ায়। এবং ফের তুলে ধরলেন তাঁকে ‘ধাক্কা’ মারার তত্ত্ব। তবে ‘দায়মুক্ত’ করলেন আপামর নন্দীগ্রামবাসীকে।
গত ১০ মার্চ নন্দীগ্রামের বিরুলিয়া বাজারের কাছে আহত হন মমতা। তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে এখান থেকে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার ঠিক ১৮ দিন পর রবিবার ফের নন্দীগ্রাম এসেছেন তিনি। রেয়াপড়ায় বসন্ত উৎসবে অংশ নেওয়ার পর তিনি সন্ধ্যায় বিরুলিয়া বাজারের কাছেই একটি মাঠে জনসভা করেন। ঘটনাচক্রে ১৮ দিন আগে যে সময় তিনি আহত হন, রবিবার বিরুলিয়ার মঞ্চে ঠিক তার কাছাকাছি সময়েই ওঠেন মমতা। ঘটনার পর পরই মমতা অভিযোগ করেছিলেন, তাঁকে চার পাঁচ জন ধাক্কা মারে। রবিবার ফের সে কথাই বললেন মমতা। অভিযোগ করলেন, পরিকল্পনা মাফিক তাঁকে চার পাঁচ জন ধাক্কা দিয়েছিল ওই দিন। তবে এ জন্য তিনি বিরুলিয়া তথা নন্দীগ্রামের মানুষকে দোষারোপ করেননি।
ররিবার বিরুলিয়া বাজারের কাছের জনসভায় ভালই ভিড় হয়। সেখানে বক্তব্যের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি আজ খুশি বিরুলিয়া আসতে পেরে। কারণ আমার পায়ের চোটটা হয়েছিল এখানকার একটা মোড়ে। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই সেই দিন যে ছেলেটা সঙ্গে সঙ্গে একটা প্ল্যাস্টিকে করে বরফ এনে দেয়।’’ এর পরেই মমতা সমবেত জনতাকে সে দিন ঠিক কী হয়েছিল তা বর্ণনা করেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কারণ সারা দিনই প্রায় সব মন্দিরে মন্দিরে গেছি। কথা বলেছি। আমার কোনও অসুবিধা হয়নি। এখানেও যে অসুবিধা হয়েছে তা নয়। কেউ প্ল্যান করে করেছে। কিন্তু বিরুলিয়ার মানুষের কোনও দোষ নেই এতে। নন্দীগ্রামের মানুষের কোনও দোষ নেই। আমি কাউকে দোষ দিচ্ছি না। কেন দিচ্ছি না? আমি এই কথাটা বলতেই আজকে এসেছি। সে দিন এই মোড়ে দেখি অনেক লোক দাঁড়িয়ে আছে। ওই মোড়টায়, ওখানে আমি হঠাৎ দরজাটা খুলেছি। গাড়ি কিন্তু থেমে আছে। অনেকে বলছে, পিলারে ধাক্কা লেগেছে। সব মিথ্যা কথা। গাড়িতে কোনও দাগ নেই। আপনারা দেখেছেন। গাড়িটা থামিয়েছি। কারণ আমি স্ট্যান্ডের উপরে দাঁড়িয়েছিলাম। আর সবাইকে নমস্কার করছিলাম। আপনারা সবাই দেখেছেন। তখনই এমন ভাবে চার পাঁচ জন এমন জোরে একটা ধাক্কা দেয়। প্রথমে আমি হকচকিয়ে যাই। চিৎকার করে উঠি। তার পর নীচের দিকে তাকিয়ে দেখি পা-টা ফুলে উঠেছে। রক্ত বেরোচ্ছে। এর পর ওই ছেলেটা বরফ এনে দেয়।’’
আহত হওয়ার দিনও মমতা একই রকম ভাবে পরিকল্পনামাফিক তাঁকে ধাক্কা মারা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। পরে যদিও হাসপাতাল থেকে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে প্রকাশ করা ভিডিয়ো বার্তায় তিনি ওই প্রসঙ্গের উল্লেখ করেননি। কিন্তু বিরুলিয়ায় এসে ফের সেই তত্ত্বকেই তুলে ধরলেন। ইতিমধ্যে ওই ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে জেলা প্রশাসন তদন্ত করে। রিপোর্টে ‘হামলা’র তত্ত্ব ছিল না। বরং বলা হয়, ওটি ‘দুর্ঘটনা’। অন্য দিকে মমতার নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানের করা এফআইআর-এর ভিত্তিতে বিষয়টির তদন্ত করছে রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশ। তবে তার আগেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং রাজ্যের নিরাপত্তা অধিকর্তা (ডিরেক্টর সিকিয়োরিটিজ)-কে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy