ফাইল চিত্র
রবিবার বাঁকুড়ায় জনসভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার সেই জেলাতেই হাজির মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাঁকুড়ার কোতুলপুর, ইন্দাস ও বড়জোড়ায় মোট তিনটি জনসভা করার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। পূর্ব মেদিনীপুরের সভা থেকে ‘অধিকারী পরিবার’-কে তীব্র আক্রমণ করেছিলেন মমতা। তারপর রবিবার সন্ধ্যায় বিজেপি-র ইস্তাহার প্রকাশিত হয়েছে। একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে গেরুয়া শিবির। বাঁকুড়া থেকে কি তার পাল্টা কোনও জবাব দেবেন মুখ্যমন্ত্রী?
মমতা যা বললেন...
১.১৪ কোনও প্ররোচনায় পা দেবেন না, বিজেপি দাঙ্গা করার চেষ্টা করবে। আপনারা ভোট দিলেই আমি সরকার তৈরি করতে পারব। বিজেপি সরকার তৈরি করলে আপনাদের মেরে দূর করে দেবে।
১.০৭ আপনি ব্যাঙ্কে টাকা রাখবেন, যে কোনওদিন ব্যাঙ্ক বন্ধ করে দিয়ে বলবে, আপনি টাকা পাবেন না। লকডাউনের সময় আমি সবাইকে নিয়ে এসেছিলাম ট্রেন ভাড়া করে। আসানসোলের কয়লা মাফিয়ে ওদের প্রার্থী। টাকা দিয়ে ভোট দেবেন না। তিরিশটা করে ভোট গোনার পর একবার করে ভোটের মেশিন অন-অফ করবেন। ভোটের মেশিন খারাপ হলেও ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করবেন। আমি এনপিআর করতে দেব না। একটি লোককেও ভোটার লিস্ট থেকে বাদ দিতে দেবো না।
১.০৫ কংগ্রেস বিজেপি-র সঙ্গে ডিল করেছে। ওদের ডিলটাকে খিল করে দিন। বাইরে থেকে বর্গী আসছে। বর্গী ও বহিরাগত গুণ্ডাদের বিরুদ্ধে মা বোনেরা জোট বাঁধুন। ওরা ভেবেছিল আমি পায়ে চোট পেলে আর বাইরে আসব না। আমার নিঃশ্বাস যতক্ষণ চলবে, ততক্ষণ এক ইঞ্চি জমি ছাড়ব না। মা বোনেদের জীবন বাঁচানোর লড়াই এই লড়াই। মনে রাখবেন, আমি ভাঙি তবু মচকাই না। আমি বাইরে থাকলে এক পা দিয়ে এমন শট মারব, মাঠের বাইরে করে দেবো। আমি মা বোনেদের পা দিয়ে হাঁটি।
১.০২ আমরা ৫০ শতাংশ মহিলা সংরক্ষণ দিয়েছি পঞ্চায়েতে, ওরা ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ দিচ্ছে। আপনারা ভোট দিন, না হলে বিজেপি এনপিআর দেখাবে। শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে ওরা টুকলি করে। পরিবর্তন বাংলায় হবে না, পরিবর্তন দিল্লিতে হবে। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের হারাতে হবে। সব কেড়ে নিয়েছে ওরা। বিজেপি-কে চাই না। এখন ৭ দিনে জাতি সংশাপত্র পাওয়া যায়। কতগুলো গুণ্ডা নিয়ে এসেছে, বহিরাগত গুণ্ডা নিয়ে এসেছে। বাংলা শিখে এসেছে। কেউ কেউ বলছে, মারাং বুরুর পুজো করবে না, আমার পুজো করো। এতবছর রেল দফতরে আছে, একটাও ট্রেন বাঁকুড়াকে দিয়েছে? আমি অনেকগুলি কাজ করে দিয়েছি।
১২.৫৩ আগে রাস্তার কী অবস্থা ছিল, কোনও কাজ হত না। এখন ১২১৮ কোটি টাকা দিয়ে বাঁকুড়াতে বৃহৎ জল সরবরাহ প্রকল্প। বাঁকুড়াতে ৫৮ হাজার কোটি টাকা দিয়ে জল প্রকল্পের ব্যবস্থা। জয়রামবাটি-কামারপুকুরের রাস্তা তৈরি হয়েছে। রাস্তা হবে দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের যোগাযোগে। হাঁসপালন, মুরগি পালন করুন, স্বনির্ভর দল তৈরি হবে, ঋণ দেওয়া হবে ব্যাঙ্ক থেকে।
১২.৫০ মিড ডে মিলের খাবারের জিনিস বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়। বোনেদের কন্যাশ্রী দেওয়া হয়, ১৮ বছর বয়সে ২৫ হাজার, রূপশ্রীতে ২৫ হাজার। দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাব ও স্মার্টফোন। নবম শ্রেণির পড়ুয়াদের সাইকেল। ১৮ বছরের বয়সের পর বিধবা হলে বিধবা ভাতা। বছরে চার মাস দুয়ারে সরকরা, আগস্ট, সেপ্টেম্বর, নভেম্বর, ডিসেম্বররে দুয়ারে সরকারের শিবির হবে। পাঁচ লক্ষ ছেলেমেয়েদের চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। জলস্বপ্ন প্রকল্পের মাধ্যমে বাঁকুড়াতে বাড়িতে বাড়িতে জল পৌঁছবে আগামী পাঁচ বছরে। যে জমিতে ফসল হয় না, সেখানে মাটির সৃষ্টি প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষিকাজ করা যাবে।
১২.৪৭ কোতলপুরে কোতল করা ছাড়া আর কী করতেন? সেই জয়পুর আজ বদলে গিয়েছে, রেল লাইন তৈরি হয়ে গেলে সব বদলে যাবে। ৭২ হাজার কোটি টাকার শিল্প হবে। বাঁকুড়া তীর্থভূমি। পরীক্ষার ফল বেরোলেই দেখা যায়, এখানকার পড়ুয়ারা ভাল ফল করেছে। এখানে তাই বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল আছে, পড়ুয়াদের জন্য ১০ লক্ষ টাকার ক্রেডিট কার্ড হবে, মাত্র ৪ শতাংশ সূদে। আলু সহায়ক মূল্য দিয়ে আলু কিনি।
১২.৪৪ সবার বাড়িতে বাড়িতে রেশন পৌঁছে দেবে সরকার। বাড়ির মেয়েরা ৫০০ টাকা করে হাত খরচা পাবেন। কালা কৃষি আইন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের অনেক কিছু নেই। গ্যাসের দাম ৪০০ থেকে ৯০০ টাকা করেছে। নির্বাচনের আগে ১০০ টাকা কমাবে, তারপর আবার বাড়াবে। আমার দাবি, মানুষকে বিনা পয়সায় গ্যাস দিতে হবে। নরেন্দ্র মোদীর গ্যাস বেলুনের গ্যাস শুনবেন না ক্যাশ দিয়ে গ্যাস কিনবেন? দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট, কোল উন্ডিয়া, বিএসএনএল, সেল বন্ধ করে দেবে বলছে। সব বিক্রি হয়ে যাবে। খাবেন কি? আপনার ব্যাঙ্কে যা টাকা আছে, তাও বিজেপি খেয়ে নেবে।
১২.৪১ এই নির্বাচনটা মনে রাখবেন, বাংলার নির্বাচন। আগের বার যাঁরা বিজেপি-কে ভোট দিয়েছেন, তাঁদের বলব, বিজেপি বলেছিল, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা দেবো, দিয়েছে? ওরা নির্বাচনের আগে অনেক কথা বলে, আর নির্বাচন শেষ হলে পালিয়ে যায়, আর ডুগডুগি বাজায়। বাংলায় বহিরাগত গুণ্ডাদের পাঠিয়েছে।
১২.৩৭ আমাদের গদ্দাররা, যারা বিজেপি-র ওস্তাদ হয়েছে, তাঁরা কী অত্যাচার করত, মনে রাখবেন। আমাকে পুলিশ ঢুকতে দিচ্ছিল না। এক পা এক পা করে ঢুকেছিলাম। সালাম নামে একজনের বাড়িতে গিয়েছিলাম, বিক্রমপুরের গ্রামে। বিক্রমপুরের সেই অত্যাচার কোনওদিন ভুলব না। গোপীনাথপুরের অত্যাচারের কথা ভুলে যাইনি। চমকাইতলায় সভা করতে এসেছিলাম। ছোট্ট সার্কিট হাউজে ছিলাম। অজিত পাঁজাকে আটকে দিয়েছিল, বাস ভাঙচুর করেছিল, বাসে গুলি চালাচ্ছিল, সেই অবস্থায় মানুষদের উদ্ধার করে নিয়ে এসেছিলাম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy