প্রতীকী ছবি।
বিধানসভা ভোটে মালদহ জেলার ১২টি লোকসভা আসনের ৮টিতে জিতেছে তৃণমূল। হিসেব বলছে, মালদহ জেলার ২টি লোকসভা কেন্দ্রেই জোড়া ফুলের প্রার্থীরা এগিয়ে। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে বিপুল ভোট পেলেও জেলার ২টি পুরসভাতে তৃণমূলের ভরাডুবি হয়েছে। এরই ফলে ইংরেজবাজার এবং মালদহ বিধানসভায় পরাজিত হয়েছে তৃণমূলের প্রার্থীরা। ফলে জেলায় ভাল ফলের পরেও দুই পুর এলাকা নিয়ে চিন্তিত তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব।
তৃণমূলের জেলা নেতারা স্বীকার করেছেন, পুরসভার কাউন্সিলরদের উপর পুরনাগরিকদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হয়েছে বিধানসভা নির্বাচনে। তাই দুই পুরসভার কাউন্সিলারদের রিপোর্ট কার্ড তৈরি করছে জেলা তৃণমূলের নেতৃত্ব। এই রিপোর্ট কার্ড রাজ্য নেতৃত্বের কাছেও পাঠানো হবে বলে তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে জানা গেছে। জেলার দুই পুরসভায় তৃণমূলের ভরাডুবির কারণ অনুসন্ধান শুরু করেছে দল। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা গোটা রাজ্য জুড়ে প্রভাব ফেললেও মালদহের দুই পুরসভায় কোন প্রভাব ফেলল না, তা জানতে সচেষ্ট দল।
তৃণমূলের জেলা নেতাদের একাংশের মত, দুই পুরসভার কাউন্সিলাররা বিধানসভা ভোটে তেমন ভাবে সক্রিয় হন নি। ক্ষমতায় বিজেপি আসছে এমনটা ভেবে বিজেপি-তে নাম লেখানোর জন্য প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছিলেন। সে কারণে দুই পুরসভায় ফল খারাপ হয়েছে। তবে তৃণমূলের আর এক অংশ মনে করছে, দুই পুরসভার কাউন্সিলারদের দূর্নীতি বিরুদ্ধেই পুরবাসী ভোট দিয়েছেন। তাই ফল খারাপ।
পুরাতন মালদা পুরসভার ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূল মাত্র ৩টি-তে লিড পেয়েছে। এমনকি, পুরপতি কার্তিক ঘোষের ওয়ার্ডেও লিড পায় নি তৃণমূল। মালদা বিধানসভার ফলাফল বিশ্লষণ করলে দেখা যাবে, গ্রামীণ এলাকা থেকে তৃণমূল ২০ হাজার বেশী ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে প্রতিপক্ষ বিজেপি-র চেয়ে। কিন্তু পুর এলাকাবাসীর ভোটে বিজেপি সেই ব্যবধান অতিক্রম করে জয়ী। মালদা বিধানসভায় তৃণমূলের পরাজিত প্রার্থী উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, ‘‘পুরসভার দায়িত্বে থাকা নেতা ও কাউন্সিলারদের কাজের ফলই ইভিএম-এ পড়েছে। তাই পরাজিত হয়েছেন। কাউন্সিলারদের ভূমিকার রিপোর্ট রাজ্য নেতৃত্বকে জানাব।’’ অন্যদিকে, পুরপতি কার্তিকের সাফাই, ‘‘মেরুকরণের ভোট হয়েছে। তাই এমন ফল।’’
পুরাতন মালদহ পুরসভার মতই ইংরেজবাজার পুরসভাও তৃণমূলের দখলে। তবুও পুরসভার ২৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র ৬টি-তে লিড পেয়েছে তৃণমূল। ইংরেজবাজার বিধানসভার পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘‘যা বলার রাজ্য নেতৃত্বকে জানাবো। ফলাফলের রিপোর্টে স্পষ্ট, কী ঘটেছে। উল্লেখ্য জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি, কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ ঘনিষ্ঠ নেতা প্রসেনজিৎ দাসের ১২ নম্বর ওয়ার্ড, কৃষ্ণেন্দুর স্ত্রী কাকলি চৌধুরীর ৮ নম্বর ওয়ার্ডেও ভরাডুবি ঘটেছে তৃণমূলের। ইংরেজবাজার পুরসভার উপপুরপতি তথা জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর দুলালচন্দ্র সরকার বলেন, ‘‘সংখ্যলঘু অধ্যুষিত ওয়ার্ডগুলিতেই তৃণমূল কংগ্রেস ভালো ফল করেছে। বাকি ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে। দিদির নির্দেশে দলীয় প্রার্থীকে জেতানোর জন্য সকলেই লড়াই করেছেন। ইংরেজবাজার পুরবাসীদের কাছে আমাদের আবেদন গ্রহণযোগ্য হয়নি। তাই প্রত্যাখ্যান করেছেন। দল বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব সহকারে ভাবছে।’’ প্রসঙ্গত, ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে মালদহে একটি বিধানসভা আসনেও তৃণমূল জিততে পারেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy