Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Subrata Saha

Bengal Polls: মিলিটারি মেজাজ ছেড়ে আড্ডাই অস্ত্র সুব্রতর, রাসবিহারীর অলিগলিতে অন্য ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’

বড় আবাসনে যেমন ছোট ছোট বৈঠক করতে যাচ্ছেন। তেমনই বস্তি এলাকায় গিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচারেও জোর দিচ্ছেন।

প্রচারের সময় রাসবিহারীর বিজেপি প্রার্থী প্রাক্তন সেনা আধিকারিক সুব্রত সাহা।

প্রচারের সময় রাসবিহারীর বিজেপি প্রার্থী প্রাক্তন সেনা আধিকারিক সুব্রত সাহা। নিজস্ব চিত্র।

অমিত রায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২১ ২০:২৬
Share: Save:

রাসবিহারীর বিজেপি প্রার্থীর কাছে দলীয় কর্মী সমর্থকদের আবদার একটাই, ‘‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করতে হবে।’’ অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল সুব্রত সাহার কাছে দাবি, ‘‘যে ভাবে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে গিয়ে নাস্তাবুদ করে দিয়ে এসেছিলেন, সে ভাবেই রাসবিহারীর তৃণমূল দুর্গ খান খান করে দিতে হবে।’’ শুনে মিটিমিটে হাসছেন সুব্রত। মিলিটারি মেজাজ নেই। বরং যেন পাড়ার ছেলে এমন ভাব নিয়েই স্মিত মুখে এগিয়ে যাচ্ছেন এক থেকে আর এক প্রচারের গন্তব্যে।

তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা লগ্নের পর এই প্রথম রাসবিহারীর প্রার্থী বদল করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯৯৮ সালে দল প্রথম বিধায়ক পেয়েছিল এই আসন থেকেই। এ বার শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে ভবানীপুরে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে রাসবিহারীতে প্রার্থী করা হয়েছে প্রাক্তন মেয়র পারিষদ দেবাশীস কুমারকে। দক্ষিণ কলকাতা তৃণমূলের দুর্গ হলেও, গত লোকসভা ভোটে রাসবিহারী কেন্দ্রে ৫,৪২১ ভোটে এগিয়েছিল বিজেপি। এই কেন্দ্রের ২টি ওয়ার্ড ৮৬ ও ৮৭ নম্বর আগে থেকেই বিজেপি-র দখলে। গেরুয়াশিবিরের এমন ‘অনুকূল’-এ থাকা আসনে দাঁড়িয়েও এতটুকু আত্মতুষ্টিতে ভুগতে নারাজ অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্তা সুব্রত।

নিজস্ব চিত্র।

বিজেপি-তে যোগ দিয়ে প্রথমবার প্রার্থী হয়েছেন তিনি। তাই ভোট যুদ্ধে নেমে নবীশ রাজনীতিকের মতো পৌঁচ্ছে যাচ্ছেন ভোটারদের দোরগোড়ায়। দেওয়াল লিখন থেকে পোস্টার, ব্যানার, হোর্ডিংয়ের লড়াইয়ে রাসবিহারীতে অনেকটাই পিছিয়ে সুব্রত। দৃশ্যমানতায় অনেক অনেক এগিয়ে তৃণমূল প্রার্থী। বেশ চোখে পড়ছে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী অশুতোষ চট্টোপাধ্যায়ের প্রচারও। সেই প্রচারের মোকাবিলা করতে অভিনব সব পন্থা নিয়েছেন সুব্রত। রাসবিহারীর সমস্ত বহুতল ও আবাসনে গিয়ে ছোট ছোট বৈঠক করছেন বাসিন্দাদের সঙ্গে। সেখানে থাকছে না পতাকা বা প্রতীক। রাজনৈতিক স্লোগানেরও প্রবেশ নিষেধ সেখানে। বরং, স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বকে সঙ্গে নিয়ে ছোট ছোট বৈঠকেই জানতে চাইছেন ভোটারের মনের কথা।

নিজস্ব চিত্র।

বড় আবাসনে যেমন ছোট ছোট বৈঠক করতে যাচ্ছেন, তেমনই বস্তি এলাকাতেও বাড়ি বাড়ি প্রচারে জোর দিচ্ছেন সুব্রত। আবার কিছু ক্ষেত্রে পাড়ার চায়ের দোকানেই বসে চা খেতে গল্পে মেতে উঠছেন রাসবিহারীর বাসিন্দাদের সঙ্গে। বেশকিছু ভোটারের সঙ্গে আবার রাস্তায় সৌজন্য বিনিময় করে সপরিবারে তাঁকে ভোট দেওয়ার অনুরোধ করছেন। রাসবিহারী বিধানসভা বিজেপি-র পক্ষ থেকে প্রচারের জন্য একটি বড় সুসজ্জিত জিপের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। প্রচারের জন্য সেই গাড়ি থাকলেও তার ব্যবহার করছেন খুবই কম। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হেঁটে প্রচারের পক্ষপাতী রাসবিহারীর বিজেপি সেনানি।

রাজনীতিতে নবাগত হলেও, অন্তর্দলীয় গোষ্ঠী রাজনীতিও চোখ এড়োচ্ছে না সুব্রতর। তবে তিনি সে ক্ষেত্রে সকলকে কাছে টেনে নেওয়ার নীতি নিয়েছেন। তবে প্রচারে বেরিয়ে মাঝে মাঝেই অবাক হয়ে যাচ্ছেন। সুব্রত বললেন, ‘‘আমাকেই আমার প্রোফাইল বলছেন ভোটাররা। এমন সচেতন ভোটার হলে প্রার্থীর অনেক সুবিধাই হয়। কিন্তু আমি প্রত্যেক ভোটারের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি। কারণ, আমি কে এবং কেন ভোটে দাঁড়িয়েছি আর জিতলে তাঁদের জন্য কী করতে পারব সবই বলতে হচ্ছে আমায়।’’

অলিতে গলিতে ঢুকে প্রচারের এমন কৌশলকেই ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ বলছেন দলীয় কর্মীরা। প্রচারে সক্রিয় এক বিজেপি কর্মীর কথায়, ‘‘আমাদের প্রার্থী ছোট ছোট বৈঠক আর বস্তির গলিতে ঢুকে প্রচার করছেন। আর তাতে তিনি যে ভাবে সাড়া পাচ্ছেন, তাতে এটুকু বলতে পারি, এই ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ এখন বোঝা যাবে না। ২ মে ভোটের ফলাফল বেরোবে সে দিন বুঝবে তৃণমূল। যেমন পাকিস্তান ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ হয়ে যাওয়ার পর সব জেনেছিল।’’ ৪০ বছর সেনাবাহিনীতে কাটিয়ে আসা সুব্রত অবশ্য নিজে এ সব কিছু মোটেও বলছেন না।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy