মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র
নির্বাচনী আচরণবিধি ভেঙে ধর্মের ভিত্তিতে ভোট চাওয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জবাব চাইল নির্বাচন কমিশন। বুধবার তাঁকে নোটিস পাঠিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ৩ এপ্রিল হুগলির তারকেশ্বরে তৃণমূলের সভায় মমতা বিজেপি-কে ঠেকাতে সংখ্যালঘুদের কাছে ভোট ভাগ না করার আবেদন জানিয়েছিলেন। ওই সভার ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গিয়েছে সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে তিনি বলছেন, ‘‘বিজেপি এলে মনে রাখবেন সমূহ বিপদ, সবচেয়ে বেশি আপনাদের।’’
ধর্ম বা জাতপাতের ভিত্তিতে ভোট চাওয়া আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধির পরিপন্থী। কোনও প্রার্থীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী তাঁর প্রার্থীপদ খারিজও করা যেতে পারে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ‘তৃণমূল প্রধান’ মমতা নন, নির্বাচন কমিশনের সচিব রাকেশ কুমার বুধবার নোটিস পাঠিয়েছেন, ‘নন্দীগ্রাম বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী’ মমতাকে। চিঠিতে মমতার কাছে ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ১২৩(৩), ৩(এ) ধারা এবং আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধির ১ নম্বর অংশের ২, ৩ এবং ৪ নম্বর অনুচ্ছেদ লঙ্ঘনের অভিযোগের জবাব চাওয়া হয়েছে।
তারকেশ্বেরের ওই সভায় নাম না করে ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা তথা আইএসএফ প্রধান আব্বাস সিদ্দিকির বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু ভোট ভাগের অভিযোগ করেছিলেন মমতা। আব্বাসকে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘‘সংখ্যালঘু ভাইবোন, আপনাদের কাছে হাতজোড় করে একটা কথা বলব, ওই শয়তান ছেলেটা যেটা বেরিয়েছে বিজেপি-র টাকা নিয়ে, ওইটার কথা শুনে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ করবেন না। ও অনেক সাম্প্রদায়িক কথা বলে। ও হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে লাগায়। ও বিজেপি-র আর একটা শাগরেদ। একেবারে বিজেপি-র কমরেড। বিজেপি-র টাকা নিয়ে বেরিয়েছে, যাতে সংখ্যালঘু ভোটটা ভাগ হয়ে যায়।’’
মঙ্গলবার কোচবিহারে ভোট প্রচারে এসে মমতার ওই মন্তব্য নিয়ে কটাক্ষ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ‘‘আপনি (মমতা) জনসভায় যা যা বলছেন, তা বললে আমাকে এতদিনে নির্বাচন কমিশনের নোটিস পেতে হত। সংবাদপত্রে সম্পাদকীয় বিভাগ ভরে যেত সমালোচনায়। আপনি বলছেন, ‘মুসলিমরা একজোট হয়ে ভোট দাও’। আমি যদি বলতাম, ‘হিন্দুরা জোট বেধে বিজেপি-কে ভোট দাও’, কেমন হত ভাবুন তো?’’ ঘটনাচক্রে, মোদীর সভার পরের দিনই নির্বাচন কমিশনের নোটিস এল তৃণমূলনেত্রীর কাছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy