ফাইল চিত্র।
রাজ্যে বিধানসভা ভোটের তিন দফা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছে না বলে এ বার সরাসরি অভিযোগ করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। কমিশনের আচরণ বিজেপির হয়ে পক্ষপাতমূলক, এই অভিযোগে নিয়মিত সরব মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এই ক্ষেত্রে সূর্যবাবুর মতও এক। তবে সেই সঙ্গেই তাঁর অভিযোগ, কমিশন কখনও কেন্দ্রের, কখনও রাজ্যের শাসক দলের চাপের কাছে মাথানত করছে। পরিস্থিতির বিচারে তাদের বস্তুনিষ্ঠ ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না।
কলকাতা প্রেস ক্লাবে বৃহস্পতিবার ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে সূর্যবাবু উদাহরণ দিয়ে দেখিয়েছেন, ভোটের সূচি ঠিক করা থেকে শুরু করে অনিয়মের ভূরি ভূরি অভিযোগের নিষ্পত্তি— সব ক্ষেত্রেই কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যেমন তাঁর প্রশ্ন, খেজুরি ও নন্দীগ্রামে আলাদা দিনে ভোট ছিল। অথচ খেজুরিতে মাইক লাগিয়ে সভা করলে নন্দীগ্রামে শোনা যায়! তা হলে আর বিধি মেনে ভোটের আগে প্রচার বন্ধ করে লাভ কী হল? সূর্যবাবুর বক্তব্য, ‘‘বিজেপি নেতাদের উপরে হামলা বা অন্যে কোনও অভিযোগ এলে কমিশন দ্রুত রিপোর্ট চাইছে, পদক্ষেপ হচ্ছে। ভোটারদের বাধা-হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এলে কোনও ব্যবস্থা নেই। আবার প্রথম দু’দফার ভোটে বুথে ঢোকার আগে কেন্দ্রীয় বাহিনী পরিচয়পত্র পরীক্ষা করল। তৃণমূল আপত্তি তুলল যখন, বলে দেওয়া হল কেন্দ্রীয় বাহিনী আর সেই কাজ করবে না। তা হলে কে করবে, তার কোনও স্পষ্ট উল্লেখ নির্দেশে নেই।’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের মতে, কখনও বিজেপি এবং কখনও তৃণমূলের মন রেখে চলার চেষ্টা করছে কমিশন। আর ভুক্তভোগী হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
একের পর এক প্রার্থীর উপরে যে ভাবে হামলা হচ্ছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, এই প্রশ্নেও সূর্যবাবুর বক্তব্য একই। তিনি বলেছেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা মোটেও পক্ষপাতহীন এবং ভরসা রাখার মতো নয়, এ কথা প্রকাশ্যেই আমরা স্পষ্ট বলছি।’’
ভোটের পরে ত্রিশঙ্কু ফল হলে বামেদের ভূমিকা কী হবে, এই প্রশ্ন এ দিন বারংবার শুনতে হয়েছে সূর্যবাবুকে। তবে ভোট চলাকালীন সেই বল খেলতেই রাজি নয় সিপিএম। সূর্যবাবুর জবাব, ‘‘এই কাল্পনিক প্রশ্ন নিয়ে এখন ভাবার কোনও মানে হয় না। আমরা বরং বলছি, তৃণমূল বা বিজেপির মধ্যে কেউ পর্যাপ্ত সংখ্যা না পেলে তারা একে অপরের সাহায্য নিয়ে সরকার গড়ে নেবে না, তা কি কেউ বলতে পারে? মানুষের কাছে আমাদের আবেদন, দু’টো দলের আসনসংখ্যাই এমন ভাবে কমিয়ে দিন, যাতে দু’পক্ষ মিলেও সরকার গড়তে না পারে।’’ সেই সঙ্গেই তাঁর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল নেত্রী নিজেই বলছেন তাঁর দলে এখনও গদ্দার আছে, যারা ভোটের পরে বিজেপিতে যেতে পারে। তা হলে তৃণমূলকে সমর্থন করার মানে তো ঘুরপথে বিজেপিকেই সাহায্য করা! বিজেপির মোকাবিলার জন্য বিকল্প একমাত্র সংযুক্ত মোর্চাই।’’
রাজনীতি সম্ভাবনার খেলা বলে উল্লেখ করেও বুধবার এই ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানেই ভোট পরবর্তী পরিস্থিতির প্রশ্নে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছিলেন, নবান্ন থেকে তৃণমূলকে উৎখাত এবং বিজেপিকে ঢুকতে না দেওয়ার লক্ষ্যেই সংযুক্ত মোর্চা লড়াই করছে। এই প্রসঙ্গে কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য এ দিন বলেছেন, ‘‘শুধু নির্বাচনই নয়, ভোট পরবর্তী পরিস্থিতিতেও অভিন্ন লক্ষ্যে নির্দিষ্ট কর্মসূচি নিয়ে চলার জন্যই সংযুক্ত মোর্চা গড়ে উঠেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy