স্বপন দাশগুপ্ত, পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় এবং বিকাশ ভট্টাচার্য।
করোনা আবহেও সম্ভবত বদলাচ্ছে না ভোটের সূচি। শুক্রবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে পরবর্তী দফাগুলি দিন বদল বা এক দফায় সবগুলি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানা গিয়েছে। যদিও তৃণমূলের তরফে ভোটের দফা কমানোর বিষয়ে কমিশনের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে ‘কঠোর ভাবে’ কোভিড বিধি মেনে চলার বার্তা দিয়েছে কমিশন।
বিধানসভা ভোটপর্বের মাঝে রাজ্য জুড়ে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ চিন্তায় ফেলেছে নির্বাচন কমিশনকে। তাই পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য পঞ্চম দফার ভোটের আগের দিন কমিশনের দফতরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এই বৈঠকের আয়োজন হয়। তৃণমূল, বিজেপি, সংযুক্ত মোর্চা-সহ বিভিন্ন পক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলেন কমিশনের আধিকারিকেরা।
করোনা সংক্রমণ রুখতে শেষ তিন দফার (ষষ্ঠ, সপ্তম এবং অষ্টম) ভোট এক সঙ্গে করা প্রস্তাব দেওয়া হয় তৃণমূলের তরফে। দলের প্রতিনিধি পার্থ চট্টোপাধ্যায় বৈঠক শেষে বলেন, ‘‘শেষ তিন দফার ভোটগ্রহণ যদি এক দফায় করা হত, তবে মানুষের জীবন অনেক বেশি সুরক্ষিত থাকত বলে আমরা মনে করি। তাই কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আমরা কমিশনকে শেষ ৩ দফার ভোট এক দিনে করার আর্জি জানিয়েছি।’’ তবে সেই দাবিতে কমিশনের অনুমোদন মিলেছে কি না, সে বিষয়ে কিছু বলেননি পার্থ।
দিন কমানোর আবেদন জানালেও প্রচারে কোনও ‘ফাঁক’ রাখার পক্ষপাতী নন পার্থ। তিনি বলেন, ‘‘প্রচার অব্যাহত রাখার কথাও আমরা বলেছি। আমরা চাই এই পরিস্থিতিতে মানুষকে সর্বোচ্চ পরিষেবা দেওয়া উচিত। নির্বাচনের জন্য অনেক আধিকারিক ব্যস্ত রয়েছেন। তাঁরা করোনার কাজ করতে পারছেন না। অনেক পুলিশও ভোটের কাজে ব্যস্ত রয়েছে।’’
বিজেপি এবং সংযুক্ত মোর্চা শেষ ৩ দফার ভোট একবারে করানোর প্রস্তাবে সায় দেয়নি বৈঠকে। বিজেপি-র প্রতিনিধি স্বপন দাশগুপ্ত অবশ্য ভোটের দফা কমানোর চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন নিরাপত্তাকে। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর পরিবর্তে রাজ্য পুলিশ ব্যবহার করে ভোটগ্রহণ হতে পারে কি না। আমরা বলে এসেছি, কেবলমাত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেই যেন ভোট হয়।’’ পাশাপাশি স্বপন বলেন, ‘‘এতদিন ধরে যে ভাবে ভোট হয়েছে, সে জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা চাই, আগে যে সূচি মেনে ভোট হয়েছে। পরবর্তী দফাতেও তাই হোক। অবশিষ্ট দফাগুলির জন্য নিয়ম পরিবর্তনেরও কোনও মানে হয় না। এখন ভার্চুয়াল প্রচার নিয়েও আমরা রাজি নই। প্রথম থেকে যদি তা হত, আমাদের আপত্তি ছিল না।’’
শুক্রবারের সর্বদল বৈঠকে কমিশনের তরফে নতুন করে কোনও কোভিড গাইডলাইন দেওয়া হয়নি জানিয়ে স্বপনের মন্তব্য, ‘‘আগে যা গাইডলাইন ছিল, সেটাই রয়েছে। তবে আমরা কমিশনের দেওয়া কোভিড গাইডলাইন মেনে চলব। প্রচারে অংশ নেওয়া সকলকে মাস্ক পরতে বলা হবে। আমরা আর একটা কথা কমিশনকে জানিয়েছে এপিক কার্ড চেক করা নিয়ে। আমরা কমিশনের নিয়মই দেখিয়েছি কেন্দ্রীয় বাহিনী এপিক কার্ড চেক করতে পারে। যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল।’’ বিজেপি-র তরফে স্বপনের পাশাপাশি ভূপেন্দ্র যাদব এবং শিশির বাজোরিয়াও সর্বদল বৈঠকে হাজির ছিলেন।
সংযুক্ত মোর্চার তরফে সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা চাইছি নির্দিষ্ট সূচি মেনেই নির্বাচন হোক। একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল একসঙ্গে ভোট করতে চাইছে। কিন্তু আমরা পূর্বের সূচিই মেনে চলার কথা বলেছি। তারপরও বলছি কমিশন যা সিদ্ধান্ত নেবে তা আমরা মেনে নেব। কমিশনের দেওয়া গাইডলাইন মেনেই আমরা প্রচার করব। কোডিড গাইডলাইনেও কোনও পরিবর্তন করেনি কমিশন। আগেরটাই রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy