Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
আত্মসমালোচনা শুরু কংগ্রেসে
West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls: মানুষের মন থেকে হারাইনি, বলছেন অধীর

হারের অন্যতম কারণ হিসাবে আবারও দলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে মাথা চাড়া দিয়েছে বাম-কংগ্রেস জোট না চাওয়ার তত্ত্ব।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

বিদ্যুৎ মৈত্র
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২১ ০৬:১২
Share: Save:

একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে খালি হাতে ফিরিয়েছে অধীর চৌধুরীর সাধের মুর্শিদাবাদ। জেলার বাইশটি বিধানসভার মধ্যে ২০টিতে নির্বাচন হয়েছে, এখনও দুটি কেন্দ্রের নির্বাচন স্থগিত আছে। আর কুড়ির মধ্যে শূন্য পেয়ে আপাতত নিশ্চুপ জেলা কংগ্রেস ভবন। জেলার আনাচে কানাচে জেলা নেতাদের সমালোচনা শোনা যাচ্ছে কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের মুখে। আর একে অপরের ত্রুটি খুঁজে নিজেদের ত্রুটি এড়িয়ে যাচ্ছেন জেলার দায়িত্বে থাকা একাংশ নেতা। তারই মধ্যে “মানুষের মন থেকে আমরা হারিয়ে যাই নি” বলে দাবি করেছেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী।

হারের অন্যতম কারণ হিসাবে আবারও দলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে মাথা চাড়া দিয়েছে বাম-কংগ্রেস জোট না চাওয়ার তত্ত্ব। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও জেলায় কংগ্রেসের ধরাশায়ীর জন্য নিচুতলার কর্মীদের এই জোট মেনে না নেওয়াকেই দায়ী করছেন। তাঁদের অনেকের যুক্তি “মানুষের মন বুঝতে অপারগ হয়েছেন কংগ্রেসের নেতারা।” পাশাপাশি নেতৃত্বহীনতা কংগ্রেসের ক্ষেত্রে বিপর্যয়ের যে মূল কারণ তাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা। এর জন্য নেতাদের সঠিক পর্যবেক্ষণ ও জনবিচ্ছিন্নতাকেই তাঁরা দায়ি করছেন। একই সঙ্গে তাঁরা মনে করেন নতুন প্রজন্মের নেতা তুলে আনতে ব্যর্থও হয়েছে দল।

অধীর চৌধুরী বর্তমানে কংগ্রেসের ব্যস্ততম নেতা। কিন্তু তাঁর কাজকে সহজ করে তোলার জন্য জেলায় দ্বিতীয় কোন দায়িত্ববান নেতা উঠে আসেননি, যাঁর কাঁধে ভর করে কংগ্রেস দলটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে বলে কংগ্রেসের অন্দরেই অনেকে মনে করেন। ১৯৯১ সালে কংগ্রেসে যোগদানের পর থেকে আস্তে আস্তে জেলায় কংগ্রেস অধীর ভরকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ২০১১ সালে রাজ্যের পালাবদলের সময়ও কংগ্রেস অটুট ছিল অধীর ক্যারিশ্মায়। কিন্তু ২০২১ এ সেই কংগ্রেসের বহর কমেছে ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনের পরবর্তী বছরগুলিতে। একের পর এক কংগ্রেসের নেতা থেকে বিধায়ক দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। সেখানে গোষ্ঠীকোন্দল থাকা সত্ত্বেও শাসকের হাতকেই দিনের শেষে শক্ত করেছেন প্রাক্তন কংগ্রেসীরা। পাশাপাশি দল না ছেড়ে পদে থেকেও কংগ্রেসের একাধিক দায়িত্ববান নেতা শাসক দলের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলার দরুণ বেশ কিছু ক্ষেত্রে কংগ্রেসের রণকৌশল ব্যর্থ হয়েছে কুরুক্ষেত্রে। বাকিরা অধীর নির্ভর হয়ে পড়ায়, অনেকের ধারণা, মুর্শিদাবাদে তাসের ঘরের মত আজ ভেঙে পড়েছে কংগ্রেস। একে অপরের মধ্যে একতার বদলে নেতারা একে অন্যের ত্রুটি খুঁজে ‘দাদা ঘনিষ্ঠ’ হয়ে উঠতে গিয়ে একাধিক নেতা জন ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠতে পারেন নি। তবু আত্মসমালোচনাকে এড়িয়ে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতিকে হাতিয়ার করে কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ জহর পঞ্চায়েত, পুরসভা “অগণতান্ত্রিক ভাবে” হাতছাড়া হওয়াই জনবিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণ বলে মনে করেন।

আর গ্রহণযোগ্যতা এবং বুদ্ধিমত্তার বিচারে নেতা তৈরি হয় জানিয়ে জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন “দীর্ঘদিন কংগ্রেস ক্ষমতায় না থাকায় নেতৃত্বে কংগ্রেসের কিছুটা হলেও ভাঁটার টান। দলের প্রতি আকর্ষণ কম থাকায় নতুন প্রজন্মের কাছে নেতৃত্ব দিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রবণতাও কম সে কথা স্বীকার করতে দ্বিধা নেই।” তবে নতুন নেতা তৈরির জন্য তাঁরা যে প্রস্তুত সে কথা জানিয়ে জহর বলেন “এবারের প্রার্থী তালিকায় যাঁরা ছিলেন তাঁরা প্রত্যেকেই দলের বিভিন্ন দায়িত্বপূর্ণ পদে আছেন।” কিন্তু সেই প্রার্থীদের নিয়েই স্থানীয় নেতাদেরই পছন্দ না হওয়ায় একাধিক জায়গায় নির্বাচনের আগে প্রকাশ্যে এসেছে কংগ্রেসের গোষ্ঠীকোন্দল। যার জন্য নির্বাচনের শেষলগ্নে পরিস্থিতি সামাল দিতে বেশ কিছু ক্ষেত্রে দল থেকে একাধিক ব্লক কংগ্রেস নেতাকে বহিস্কার করতে হয়েছে জেলা নেতৃত্বকে। তার প্রভাব পড়েছে নির্বাচনে। সে কথা অবশ্য মানতে রাজি নন জয়ন্ত দাস। তিনি সংযুক্ত মোর্চার এই বিপর্যয়ের জন্য বিভিন্ন সময়ের সমীক্ষা রিপোর্টকে উল্টে দায়ি করেছেন। তিনি বলেন “ কংগ্রেস সাধ্যমত লড়াই করেছে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন সমীক্ষায় ধারাবাহিকভাবে সংযুক্তমোর্চাকে ছোট করে দেখানোর জন্য সংযুক্ত মোর্চার বদলে মানুষের কাছে তৃণমূলকে বেছে নেওয়া সহজ হয়েছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Congress West Bengal Assembly Election 2021
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy