প্রতীকী ছবি।
দিল্লিতে সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করে আজ পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির টিকিট বিলি নিয়ে অভিযোগ আনল কংগ্রেস। সামনে আনা হল সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি অডিয়ো ক্লিপ (যার সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি)। কংগ্রেস অডিয়োর সত্যতা যাচাই না করলেও বিজেপির আসন বণ্টনের পিছনে ‘টাকার লেনদেন এবং মহিলা ঘটিত অপরাধের’ অভিযোগ এনে বলেছে, প্রকৃত ঘটনা কী, তার তদন্ত হোক।
যে দুই নেতার নাম ওই অডিয়ো ক্লিপে শোনা গিয়েছে, সেই দিলীপ ঘোষ এবং কৈলাস বিজয়বর্গীয় সাফ বলেছেন, ভিত্তিহীন, ‘ফালতু’ কোনও অভিযোগের জবাব দিতে তাঁরা আগ্রহী নন।
ওই অডিয়ো ক্লিপ অনুযায়ী, এক ব্যক্তি আর এক জনকে (ক্লিপ থেকে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে, তিনি টিকিট প্রার্থী) বিরক্ত স্বরে বলছেন, ‘গতকাল দুপুরেই তো সবেমাত্র টাকা দিয়েছেন। তারপরে কাল রাতে ফোন করেছেন, সকালে মেসেজ করেছেন!’ তার পরই আবার বলছেন, ‘কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। জিতুভাই (যাঁর পরিচয়ও অজানা) গোটা বিষয়টি দেখছেন।’ টিকিট না মিললে টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানিয়ে দেন তিনি।
অডিয়ো ক্লিপে শোনা যাচ্ছে, সন্তোষ নামের টিকিট-প্রার্থী বলছেন, তাঁর চিন্তা রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে নিয়ে, কারণ, দিলীপ ‘অন্য কারও হয়ে সক্রিয়’। তা শুনে অন্য ব্যক্তির দাবি, ‘তাঁর উপরে কেউ নন’ এবং দিলীপ ঘোষ ‘এমনিতেই বাংলার বিজেপির বদনাম করে, বিজেপির বেহাল দশা’ করে রেখেছেন। সেইসঙ্গে ওই ব্যক্তির দাবি, দিলীপ ঘোষ কাউকে নিয়ে গিয়ে কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে কিছু ‘অফার’ দিয়েছেন। সব কিছু আরও ‘খুলে বলতে’ চেয়ে তিনি দাবি করছেন, ‘সমস্যা হল, কৈলাস বাংলায় গিয়ে ফুর্তি করেন আর দিলীপ এ সব বিষয়ে তাঁর সেবা করেন।’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘আমার একেবারেই জানা নেই, কারা অভিযোগ করছে, কাদের সম্পর্কে অভিযোগ করছে। কিছু শুনিনি। না জেনে মন্তব্য করতে পারব না। তবে রাস্তার দু’জন লোক কোনও একটি দলকে খাটো করার জন্য কী বলল, তাতে কিছু এসে যায় না। দলের কোনও দায়িত্বশীল পদাধিকারী যদি এ রকম অভিযোগ করতেন, তা হলে চিন্তার বিষয় হত।’’ কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এ সব ফালতু কথার জবাব হয় না, জবাব দিচ্ছিও না।’’
সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ অমি যাজ্ঞিক, জসবীর গিল, গুরজিত সিংহ অউজলা, নাসির হুসেন ও মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনত অবশ্য দাবি করেন, গোটা ঘটনার তদন্ত দরকার। কারণ, অডিয়ো-ক্লিপে শুধু দুর্নীতি, টাকার বিনিময়ে টিকিট বিলি নয়, মহিলাদের যৌন নিগ্রহের প্রশ্নও উঠছে। কোন দুই ব্যক্তির মধ্যে কথাবার্তা হচ্ছে, তা অজানা থাকলেও কংগ্রেসের প্রশ্ন, এই কথোপকথন মিথ্যে হলে বিজেপি তা স্পষ্ট করে বলছে না কেন? রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কেন চুপ? সুপ্রিয়া শ্রীনতের বক্তব্য, ‘‘কিছু দিন আগেই পামেলা গোস্বামী নামের এক বিজেপি যুব নেত্রী পশ্চিমবঙ্গে গ্রেফতার হয়েছিল। তাঁর কাছে কোকেন মিলেছিল। উনিও কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের খুবই ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন।’’
বিজেপি শিবিরের একাংশ অবশ্য মনে করছে, এমনিতেই প্রার্থী বাছাই নিয়ে দলের মধ্যে বিক্ষোভ চলছে। তার পরে এখন যদি দেখা যায়, টিকিট বিলিতে টাকা ও অন্য সুযোগ-সুবিধা নেওয়া হয়েছে, তা হলে ক্ষোভ ছড়াবে।
পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস তৃণমূলের বিরুদ্ধেও লড়ছে। তাই তৃণমূলের থেকেও দূরত্ব বজায় রেখেছে কংগ্রেস। সুপ্রিয়া বলেন, ‘‘তৃণমূলের প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যাঁকে মহিলাদের মসিহা ও এক শক্তিশালী নেত্রী বলা হয়, তিনি এ বিষয়ে চুপ কেন? এটা মিথ্যে হলে প্রকৃত ঘটনা সামনে আসা উচিত। আর উনি এটা সত্যি মনে করলে, এফআইআর বা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ কেন জানানো হচ্ছে না?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy