Advertisement
E-Paper

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । নন্দীগ্রাম

আনন্দবাজার ডিজিটাল

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২১ ২১:৪৪
Share
Save

উপলব্ধি: আমি একটা বড় গাধা! আমি নিজেই নিজেকে গাধা বলছি। কারণ, আমি বুঝতে পারিনি, এদের এত গুণ। লুঠ-দাঙ্গা-মানুষ খুন! তবে ‘উপলব্ধি’ নামে বইও আছে তাঁর। প্রাচীনকালে লিখেছিলেন। রাজনীতির উপলব্ধি নিয়ে। সে বই, যথারীতি, বেস্টসেলার। পরের সংস্করণে কি সর্বশেষ উপলব্ধি স্থান পাবে?

এতদিন অজানা তথ্য: গত দশ-দশটা বছর গোটা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হলেও পূর্ব মেদিনীপুরে ঢোকার বিষয়ে এতদিন ‘স্বাধীন’ ছিলেন না। ঢুকতে হলে অনুমতি নিতে হত। এখন আর লাগে না।

নামে কী আসে-যায়: এই যুগান্তকারী তথ্যের আবিষ্কর্তা সুব্রত মুখোপাধ্যায়। যে, সারা বাংলার অধিকাংশ মানুষ তাঁকে ডাকেন ‘মোমোতা’ বলে। কিন্তু এর সঙ্গে মোমোর কোনও সম্পর্ক নেই।

ঠিকানা: পাকা ঠিকানা ‘৩০ বি, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট’ এবং সেখানকার টালির চালের ঘুপচি ঘর। প্রথম থেকে সেখানেই বসবাস। সেখান থেকেই এখনও গোটা রাজ্য পরিচালনা। ২০২১ সালের অস্থায়ী ঠিকানা নন্দীগ্রামের ভাড়াবাড়ি। বলেছেন, হলদি নদীর ধারে একটা কুটির বানাবেন। ইদানীং দৈনিক ঠিকানা বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত। তবে সেসব জায়গায় ঘণ্টাখানেকের বেশি থাকেন না।

অভ্যাস: বনবন করে হন্টন। সফরে থাকলে রাস্তায়। পদযাত্রা হলে তো কথাই নেই! সফর বা পদযাত্রা না থাকলে ট্রেডমিলে। ওই একটিমাত্র সময়েই তাঁর পায়ে থাকে ভেলক্রো-আঁটা স্নিকার্স।

পরিবর্তনের পরিবর্তন: ছিলেন ‘দিদি’। হয়েছেন ‘মেয়ে’। ছিলেন ‘বাংলার দিদি’। হয়েছেন ‘বাংলার মেয়ে’। সিপিএমের ফিচেলরা আবার দুটো নতুন নাম দিয়েছে— ‘পিসি’ আর ‘চটিপিসি’।

খাদ্য: মূলত মুড়ি-তেলেভাজা। রেলমন্ত্রী থাকার সময় চলন্ত ট্রেনে সেই মেনুর বরাত দিয়েছিলেন। এবং কিমাশ্চর্যম! ভারতীয় রেল সেটা জোগা়ড়ও করে ফেলেছিল। ট্রেন কিন্তু থামেনি। প্রচারে গেলেও গাড়িতে এলাকার নেতারা ফেরার সময় ঠোঙায় মুড়ি-তেলেভাজা ভরে দিতেন। ডিমসেদ্ধ খেতেও ভালবাসতেন। ঝাল একেবারে সহ্য হয় না। অতিথিদের ফাঁসির খাওয়া খাওয়াতে ভালবাসেন। তাঁর হাতে যাঁরা ভাইফোঁটা নিয়েছেন, তাঁরা সাক্ষী। কিন্তু নিজে দিনের শেষে ডাল-ভাত-ডিমসেদ্ধ পেলেই খুশি।

পানীয়: দুধ চা। একটু বেশিই দুধ দিয়ে। অতিথি বা অতিথিদের সেই চায়ে অনভ্যাস থাকলে অ্যাসিড হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। লাল চা নৈব নৈব চ। কারণ, ওটা সিপিএম-রা খায়!

বাহন: এমনিতে নিজস্ব পদযুগল। তবে আপাতত হুইলচেয়ার। তার আগে একদিন বিকেলে অফিস থেকে ফেরার পথে পতনোন্মুখ স্কুটি চালিয়েছেন। প্রাচীনকালে বাহন ছিল কালো টাটা সুমো। তার পর কালক্রমে বিভিন্ন ধরনের হ্যাচব্যাক। স্যান্ট্রো থেকে শুরু করে আই টেন হয়ে ফোক্সভাগেন পোলো। তবে আগে কালো রঙের গাড়িই বেশি চড়তেন। তার পর হালকা রঙে প্রবেশ। প্রচারে গেলে অবশ্য সাদা স্করপিও। জেলায় জেলায় যার আদরের নাম ‘টিএমসি গাড়ি’।

ভোটের বাহন: হেলিকপ্টার। আবার কী! নিজেকে ‘মমতার ডোবারম্যান’ বলে ভূষিত করা কবীর সুমনের ‘হেলিকপ্টার, হেলিকপ্টার, নেতা আসছেন, নেতা আসছেন’ গানটি স্মর্তব্য।

প্রিয় শব্দ: লড়াই। ‘লড়াই-লড়াই-ল়ড়াই চাই’!এবং ‘হটাও’। যথা ‘লাল হটাও, দেশ বাঁচাও’। ‘বিজেপি হটাও, দেশ বাঁচাও’। ‘মোদী হটাও, দেশ বাঁচাও’। তবে ইদানীং মাঝেমধ্যে ‘হোঁদল কুতকুত’, ‘কিম্ভূতকিমাকার’ ইত্যাদিও বলে থাকেন। ইদানীং আরও দু’টি শব্দ প্রিয় হয়েছে— ‘গদ্দার’, ‘মিরজাফর’। শেষোক্ত দু’টির জন্য সৌজন্য পাবেন কাঁথির অধিকারী পরিবারের সদস্যরা।

প্রিয়তর শব্দ: ‘শ্রী’ এবং ‘সাথী’। শ্রী-যুক্ত করে শব্দ এনেছেন কন্যাশ্রী। যুবশ্রী। রূপশ্রী। শিক্ষাশ্রী। সবুজশ্রী। খেলাশ্রী। এর সঙ্গে অবশ্য প্রিয়পাত্র রাজ চক্রবর্তীর অভিনেত্রী স্ত্রী শুভশ্রীর কোনও যোগ নেই। এর পর ‘সাথী’। স্বাস্থ্যসাথী। খাদ্যসাথী। সবুজসাথী। পথসাথী। শিশুসাথী। এর মধ্যে আপাতত সবচেয়ে প্রিয় ‘স্বাস্থ্যসাথী’। কারণ, মনে করছেন, ভোটে ওই কার্ডটাই খেলা ঘোরাবে।

ভোটের শব্দবন্ধ: ‘খেলা হবে’।ভোটের প্রচারে তিনি এই দু’টি শব্দকে এতটাই জনপ্রিয় করেছেন যে, পাল্টা ‘শিক্ষা হবে’, ‘হাসপাতাল হবে’ দিয়ে মোকাবিলায় নামতে হয়েছে খোদ নরেন্দ্র মোদীকে।

কথাঞ্জলি: এই নামে তাঁর একটা আস্ত বই আছে। কিন্তু বই ছাড়াবিভিন্ন হর্ম্যরাজির নামকরণেওতাঁর কথামালার স্বাক্ষর আছে। যেমন নবান্ন, উত্তীর্ণ, সৌজন্য, শুভান্ন। অন্ত্যমিলে বৃহদার্থে ‘ন’ বর্ণের’ প্রতি একটা পক্ষপাতিত্ব বা স্নেহ লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু এর কোনও কারণ জানা যায় না। সরকারি হোক বা বেসরকারি স্তরে।

পছন্দের রং: সাধারণ ভাবে সাদা। যদিও দুষ্টু লোকেরা বলে নীল-সাদা। তার কারণ হিসেবেও অদ্ভুত অদ্ভুত ব্যাখ্যা শোনা যায়। কেউ বলে সাদা জমি এবং নীল স্ট্র্যাপের হাওয়াই চটি পরেন দেখে। কেউ বলেন, মারাদোনার ফ্যান। তাই আর্জেন্টিনার জার্সির রং পছন্দ করেন। এসব কারণ বা ব্যাখ্যার কোনও আনুষ্ঠানিক সমর্থন মেলেনি। সাধারণত মেলেও না। কিন্তু এটা ঠিক যে, মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের কথা জেনে গোটা রাজ্য নীল-সাদা রঙে রাঙানো শুরু হয়েছিল। যে কোনও সরকারি ইমারতের গায়ে নীল-সাদা রঙের পোঁচ গত দশ বছর ধরে বাংলার বাজারে প্রায় বাধ্যতামূলক।

কঠিন ভোটের ট্যাগলাইন: ইতনা আন্ডারএস্টিমেট মত করো ভাইয়া (আনন্দবাজার ডিজিটালের ভোটের গান দ্রষ্টব্য)।

তথ্য: অমিত রায়। রেখাচিত্র: সুমন চৌধুরী

Mamata Banerjee TMC West Bengal Assembly Election 2021 Tarader Katha

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।