রহমতনগরে কেন্দ্রীয় বাহিনী জমায়েত সরাচ্ছে। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের বিদায়ী মন্ত্রী তথা দলীয় প্রার্থী মলয় ঘটককে ধাক্কা দেওয়া-সহ দলের নেতা-কর্মীদের মারধর, গুলি করার হুমকি দেওয়া, ক্যাম্প অফিস ভাঙচুরের মতো কাজ করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী—সোমবার ভোটের পরে এমনই অভিযোগ তৃণমূলের। তবে বাহিনীকে ‘অভিনন্দন’ জানিয়েছে বিজেপি।
আসানসোল উত্তরের তৃণমূল প্রার্থী মলয়বাবু সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন, এ দিন তিনি যখন কাল্লা হরিপদ হাইস্কুলের বুথে যান, তখন তাঁর মোবাইলটি বেজে ওঠে। মলয়বাবুর অভিযোগ, ‘‘আমাকে কর্তব্যরত কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান ধাক্কা দেন। আমি জানি, মোবাইল বাজলে বুথের বাইরে গিয়ে কথা বলতে হয়।’’ এ ছাড়া, ওই বিধানসভা কেন্দ্রের সেঁটে কন্যাপুরে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে বাহিনীর বিরুদ্ধে। গ্রামবাসীর একাংশ প্রতিবাদ করেন।
দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের অভিযোগ, ২২ নম্বর ওয়ার্ডের ১৪৭ নম্বর বুথে রাস্তার ধারের ক্যাম্প ভেঙে দেয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। পাশাপাশি, আসানসোল দক্ষিণের শান্তিনগরেও তৃণমূলের ক্যাম্প অফিস ভাঙচুর ও বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর বিনোদ যাদবকে মারধর করে বাহিনী, অভিযোগ তৃণমূলের।
এ দিকে, লাউদোহার তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, তিনি ২১৭ নম্বর বুথে থাকা ‘পোলিং এজেন্ট’কে কিছু ক্ষণের জন্য ‘রিলিফ’ দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তৃণমূল কর্মী শুনেই বাহিনী বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। তাঁকে লাউদোহা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করানো হয়। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে গুলি করার হুমকি দেয় বাহিনী।’’ বাহিনীর বিরুদ্ধে মলানদিঘিতেও তৃণমূল কর্মীদের মারধর এবং দলীয় কার্যালয়ের চেয়ার ভাঙচুরের
অভিযোগ উঠেছে।
বাহিনীর সঙ্গে বচসায় জড়ান দুর্গাপুর পূর্বের তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ মজুমদার। গোপালপুরে গাড়ি রাখাকে কেন্দ্র করে সমস্যা হয়। প্রার্থীর অভিযোগ, ‘‘বাহিনী আমার গাড়িটা সরালেও ওই জায়গায় বিজেপি প্রার্থীর গাড়ি রাখতে দেয়।’’ তবে তাঁর সংযোজন: ‘‘এর জন্য বাহিনীর এক কর্তা আমার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন ও অন্য রাজনৈতিক দলের গাড়িটিও সরানোর নির্দেশ দেন।’’
সেই সঙ্গে, রাস্তার পাশে জমায়েত করছেন তৃণমূল পরিচালিত রানিগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিনোদ নুনিয়া, এমন অভিযোগ পেয়ে, জামুড়িয়া বিধানসভার রতিবাটির চাপুইখাস কোলিয়ারিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছলে দু’পক্ষে বচসা হয়। পুলিশের হস্তক্ষেপে বিষয়টি মেটে। বিনা প্ররোচনায় রানিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের অণ্ডালের শ্রীরামপুরে দলীয় কর্মীদের বাড়িতে ঢুকে কেন্দ্রীয় বাহিনী দুই কর্মীকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ তোলেন অণ্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির কো-মেন্টর তৃণমূলের কাঞ্চন মিত্র। জামুড়িয়ার মদনতোড়ে ১৪, ১৫ নম্বর বুথের কাছে তৃণমূলের জমায়াতের অভিযোগ পেয়ে তা লাঠি চালিয়ে বাহিনী সরিয়ে দেয় বলে দাবি। অভিযোগ না মেনে বাহিনীর লাঠিতে এক দলীয় কর্মী জখম হন,
দাবি তৃণমূলের।
ঘটনাচক্রে, কিছু দিন আগে দুর্গাপুরে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে বিজেপির পক্ষে কাজ করানো হচ্ছে।’’ এ দিন সে ‘সুরেই’ তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বনাথবাবুও বলেন, ‘‘বাহিনী বিজেপির হয়ে কাজ করছে। আমাদের কর্মীদের মারধরও করা হয়েছে।’’ তবে দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি প্রার্থী লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের মন্তব্য, ‘‘বাহিনী খুব ভাল কাজ করেছে। তৃণমূলের যাবতীয় সন্ত্রাসের চেষ্টা রুখে দিয়েছে।’’ সিপিএম নেতা বংশগোপাল চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘বাহিনীকে কেন্দ্র করে কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনার কথা শুনেছি। কিন্তু ওঁরা থাকায় মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিয়েছেন।’’ তবে বাহিনীর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্তারা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy