বিজেপির অগ্নিমিত্রা পালের প্রচার।। ছবি: পাপন চৌধুরী।
কোথাও প্রবীণদের পা ছুঁয়ে প্রণাম, কোথাও শিশুদের গাল টিপে আদর—জনসমর্থন আদায়ের চেষ্টায় অনেক কিছুই করতে দেখা গেল আসানসোল (দক্ষিণ) কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষকে। যদিও, দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর প্রচারে সব কিছু ছাপিয়ে উঠে এল পরিস্রুত পানীয় জল আর নিকাশির মতো নাগরিক সমস্যা।
‘জল চাই, জল’। বুধবার বেলায় কালিপাহাড়ি কোড়াপাড়ায় প্রচারে এসে শুনলেন অগ্নিমিত্রা। বিধানসভার আর এক প্রান্তে হিরাপুরে তখন প্রচার চালাচ্ছেন সায়নী। তাঁর কাছেও ‘একটু জলের’ দাবি জানালেন সাধারণ মানুষ। দুই প্রার্থীর সামনে যোগাযোগ ব্যবস্থা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতো নাগরিক চাহিদাগুলিও উঠেছে। যেমন উঠেছে অনুন্নয়নের অভিযোগও।
এ দিন ডামরা এলাকার মেঠোপথে হুডখোলা টোটোয় অলিগলি ঘুরেছেন অগ্নিমিত্রাদেবী। সামনে ছিলেন শতাধিক কর্মী-সমর্থক এবং বাজনার দল। ‘তারকা’ প্রার্থীকে দেখতে ভিড় করেছিলেন অনেকে। ছিল কচিকাঁচারাও। প্রবীণ কয়েকজনের পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন অগ্নিমিত্রাদেবী। শিশুদের গাল টিপে আদরও করেন। ‘মা-বোনের সম্ভ্রম’ রক্ষা করা থেকে এলাকার উন্নয়ন— প্রচারে অনেক কিছুই ছুঁয়ে যান বিজেপি প্রার্থী।
অগ্নিমিত্রার কাছে অশীতিপর সন্ধ্যা হাজরার দাবি, ‘‘গ্রামের সঙ্গে মূল শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থাটা একটু উন্নত করে দাও। মেয়েরা কলেজে যেতে খুব কষ্ট পাচ্ছে।’’ ছাতাপাথরের বাসিন্দা ধর্মেন্দ্র পাসোয়ানের অভিযোগ, ‘‘জাতীয় সড়কের পাশে ময়লার গাদাটা সরানোর ব্যবস্থা করুন। মাঝে মাঝে আগুন লাগে। ঝাঁঝালো গন্ধে টিকতে পারি না।’’ কালিপাহাড়ি কোড়া পাড়ার এক দল মহিলা ক্ষোভ উগরে বললেন, ‘‘গরমে খাওয়ার জল মেলে না। আজও বাড়িতে শৌচাগার হল না। বর্ষায় নালার জল উপচে বাড়িতে ঢোকে।’’ অগ্নিমিত্রার উত্তর, ‘‘কেন্দ্রের বিজেপি সরকার শৌচাগার বানাতে, নিকাশির উন্নয়ন করতে এবং বর্জ্য প্রক্রীয়াকরণ কেন্দ্র গড়তে টাকা দিয়েছে। রাজ্য সরকার করছে না।’’
ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা অভ্যাস সায়নীর। কাক ভোরেই আপকার গার্ডেনের তাঁর অস্থায়ী বাসস্থানে লেগে যায় গাড়ি। এ দিন সকাল ১০টায় রহমত নগর থেকে প্রচার শুরুর কথা ছিল। হলও ঠিক সকাল ১০টা-তেই।
রহমত নগরে সায়নীকে দেখতে ভিড় ছিল রাস্তার দু’পাশে। অনেকে তাঁর গলায় মালা পরিয়ে অভ্য়র্থনা জানান। কেউ সায়নীর হাত টেনে নিজের মাথায় ঠেকান। কেউ ছুড়ে দেন ফুল। রহমত নগর থেকে পুরান হাট, সাতা থেকে নেপালি ধাওরা, ত্রিবেণী থেকে হিরাপুর—প্রায় ৪২ ডিগ্রি তাপমাত্রা উপেক্ষা করে ছুটেছেন সায়নী।
সাতার বাসিন্দা পূর্ণিমা মাজি প্রার্থীকে জলের সমস্যার কথা বলেন। নিউটাউনের প্রণয় হালদার বলেন, ‘‘শহরের মধ্যে খাটাল থাকায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।’’ হিরাপুরে অশীতিপর বৃদ্ধা সবিতা সেনগুপ্তর পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন তৃণমূল প্রার্থী। তার পরে বৃদ্ধার হাত নিজের মাথায় ঠেকিয়ে সায়নীর আবদার, ‘‘ঠাকুমা ভোটটা আমায় দিও।’’ আপ্লুত সবিতাদেবী বলে ওঠেন, ‘‘তুমি তো দেখছি ঘরের মেয়ের মতোই। কে বলে, তুমি বাইরের লোক?’’
প্রচার সেরে সায়নী বলেন, ‘‘অনেক সমস্যার কথা শুনলাম। জলের সমস্যাটাই বেশি বলে মনে হল। ভোটের পরে সেগুলিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy