স্ট্যাম্প সাঁটা সেই চুক্রিপত্র। নিজস্ব চিত্র।
গ্রামের চায়ের দোকানে তুলকালাম কাণ্ড। দু’দলই উত্তেজিত। পুরুলিয়া জেলার বান্দোয়ান বিধানসভা কেন্দ্রে এ বার কে জিতবেন, তা নিয়ে বোরো থানার আঁকরো গ্রামের চায়ের দোকানে তুফান উঠল। এক পক্ষ তৃণমূলের প্রার্থী রাজীব সরেনের দিকে, অন্য পক্ষ বিজেপি প্রার্থী পার্শী মুর্মুর পক্ষে। দু’দলই নিজেদের দাবিতে অনড়। তর্কাতর্কি এমন জায়গায় পৌঁছল শেষ পর্যন্ত রেভিনিউ স্ট্যাম্প এনে তৈরি করা হল চুক্তিপত্র।
রাজীব সরেনের পক্ষে বাজি ধরলেন আঁকরো গ্রামের বাসিন্দা তথা আঁকরো-বড়কদম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের শিশির মণ্ডল। ওই থানারই জামিরা গ্রামের স্থানীয় বিজেপি নেতা মানিককুমার কর বাজি ধরলেন পার্শী মুর্মুর পক্ষে। চুক্তিপত্রে লেখা হল, যিনি হারবেন তাঁকে ১৫ হাজার টাকা দিতে হবে। সাক্ষী হিসেবে সই করলেন ছ’জন।
রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা হলেও শিশিরবাবু ও মানিকবাবু আদতে দুই বন্ধু। রবিবার করা তাঁদের ওই চুক্তিপত্র এখন ছড়িয়ে পড়েছে ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য়। শিশিরবাবু বলেন, ‘‘আমার দাবি ওরা উড়িয়ে দিতে চাইছিল। আমিও দমর পাত্র নই। তাই স্ট্যাম্প পেপার এনে সাক্ষী-সাবুদ করিয়ে লিখিত ভাবে বাজি ধরেছি।’’ অন্য দিকে মানিকবাবু দাবি করছেন, ‘‘গত বিধানসভা ভোট আর এ বারের ভোটে যে আসমান-জমিন ফারাক হয়ে গিয়েছে, সেটাই শিশির মানতে চাইছে না। শিশির বন্ধু হলেও আমার দাবিকে খাটো করতে রাজি নই। বাজির টাকার কিছুটা অংশ সাক্ষীরা-সহ বন্ধুদের ভোজে দেব।’’ মানিকবাবুর দাবি, গত লোকসভা ভোটে বাজি ধরে তিনি জিতেছিলেন। তবে লিখিত চুক্তি ছিল না। কিন্তু টাকার বিনিময়ে এ ভাবে বাজি ধরা কি যুক্তিসঙ্গত? দু’জনেই বলেন, ‘‘লক্ষ লক্ষ টাকার বাজি তো নয়। আসলে নির্বাচনের ফলকে ঘিরে সবাই মিলে কিছুটা আনন্দ নেওয়া।’’
এক সময়ে বামেদের শক্ত ঘাঁটি বান্দোয়ানে গত বছর তৃণমূল জিতেছিল। কিন্তু লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্রে এগিয়ে গিয়েছিল বিজেপি। এ বার কী হয়, তা নিয়ে চর্চা চলছে সর্বত্র। বিদায়ী বিধায়ক রাজীববাবুকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তাঁর স্ত্রী তথা জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি প্রতিমা সোরেন বলেন, ‘‘স্বামী অসুস্থ। তবে নির্বাচনের ফল নিয়ে কেউ বাজি ধরেছে বলে শুনিনি।’’ বান্দোয়ানের বিজেপি প্রার্থী পার্শী মুর্মু বলেন, ‘‘নির্বাচনের ফলকে ঘিরে দলের কর্মীদের স্বতঃস্ফুর্ত আবেগ থাকতেই পারে। বাজি ধরার মধ্যে অন্যায় দেখছি না।’’
এসডিও (মানবাজার) শুভজিৎ বসু অবশ্য বলছেন, ‘‘বেটিং আইন বিরুদ্ধ। এ নিয়ে রিটার্নিং অফিসার পদক্ষেপ করতে পারেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy