মনোনয়ন জমা দিতে যাচ্ছেন সংযুক্ত মোর্চার পাঁচ প্রার্থী দেবদূত ঘোষ, নীহার ভক্ত, সুজন চক্রবর্তী, শতরূপ ঘোষ এবং শমিতা হরচৌধুরী। শনিবার হাজরায়। ছবি: সুমন বল্লভ।
রাজ্যে বিধানসভা ভোটের দিন যত কাছে আসছে, বিজেপি ও তৃণমূলের দ্বিমেরু ভাষ্যের প্রভাব কমিয়ে তৃতীয় শক্তি তত প্রাসঙ্গিক হচ্ছে বলে দাবি করলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। তাঁর মতে, বিজেপি ও তৃণমূলের মেরুকরণের চেষ্টার মধ্যে আটকে না থেকে সাধারণ মানুষ সংযুক্ত মোর্চার বক্তব্যে সাড়া দিচ্ছেন। প্রথম দু’দফার ভোটের পরে তৃতীয় বিকল্পের পরিসর আরও বাড়বে বলেই তাঁর আশা।
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে শনিবার সন্ধ্যায় শরিক দলের নেতৃত্বকে পাশে নিয়ে বামফ্রন্টের চূড়ান্ত ইস্তাহার আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করেছেন বিমানবাবু। খসড়া ইস্তাহারের উপরে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও সাধারণ মানুষের ‘ইতিবাচক’ প্রতিক্রিয়াই পাওয়া গিয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। বিদ্যুতের ২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিলের ক্ষেত্রে ভর্তুকির পরিমাণ নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা যায় কি না, প্রশ্ন তুলেছিলেন কেউ কেউ। বিমানবাবু জানিয়েছেন, বিদ্যুতের মাসুলের নিরিখে ভর্তুকি কত হবে, তা নিয়ে আরও আলোচনা এবং প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের মত নেওয়া দরকার। তাঁরা এখন ভর্তুকি দেওয়ার রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কথাই জানাচ্ছেন।
ইস্তাহার প্রকাশের অনুষ্ঠানেই বিমানবাবু এ দিন বলেছেন, ‘‘সংবাদমাধ্যম দেখলে মনে হবে, শুধু বিজেপি আর তৃণমূলের দ্বিমেরু ভাষ্যই রাজ্যে চলছে। কিন্তু প্রচারে মানুষের কাছে গেলে বোঝা যাচ্ছে, ওই দ্বিমেরু তত্ত্ব কাটতে শুরু করেছে। মানুষ অভিজ্ঞতায় বুঝছেন। প্রথম দু’দফার ভোটের পরে দ্বিমেরু তত্ত্ব আরও দুর্বল হয়ে তৃতীয় বিকল্পের কথা জোরালো হবে।’’ বাম সূত্রের ব্যাখ্যা, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর প্রাক্তন সহকর্মী শুভেন্দু অধিকারীর ‘হাই ভোল্টেজ’ লড়াই প্রথম দু’দফায় মিটে যাবে। আবার বিজেপির প্রার্থী নিয়ে ডামাডোল চরমে। এই সব মিলিয়েই বিমানবাবু ভোট আরও গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তৃতীয় বিকল্পের কথা জোরালো হওয়ার দাবি করছেন।
প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের ‘ডবল ইঞ্জিনের সরকার’ তত্ত্বকেও তুলোধোনা করেছেন বিমানবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘ডবল ইঞ্জিন লাগিয়ে ট্রেন যদি পিছনের দিকে যায়, তাতে লাভ কী? অসম বা উত্তরপ্রদেশে তো ডবল ইঞ্জিন আছে। কর্মসংস্থান বা নারী সুরক্ষা— কোনও সূচকেই তারা কি এগিয়ে?’’
বিমানবাবু জানিয়েছেন, বামফ্রন্টের ইস্তাহারের পাশাপাশি সংযুক্ত মোর্চার একটি যৌথ আবেদন হবে। মোর্চার শরিক ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টকে (আইএসএফ) মৌলবাদী বা সাম্প্রদায়িক কি না প্রশ্ন তুলে কোনও কোনও মহলে যে হেতু ‘বিভ্রান্তি’ ছড়ানো হচ্ছে, তাই তারাও একটি আবেদন প্রকাশ করে তাদের বক্তব্য স্পষ্ট করবে।
শেখ নিজামুদ্দিন নামে এক ব্যক্তি এ দিনই আইএসএফ থেকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা করে অভিযোগ করেছেন, আব্বাস সিদ্দিকি ও তাঁর ভাই নৌসাদ দলের নামে ‘প্রাইভেট কোম্পানি’ চালাচ্ছেন। প্রতীক পাওয়া থেকে শুরু করে দল পরিচালনার নানা বিষয়েই ‘অস্বচ্ছতা ও অসঙ্গতি’ রয়েছে। বিভিন্ন দলের বাতিল লোকজনকে প্রার্থীও করা হচ্ছে। অভিযোগ নস্যাৎ করে আইএসএফের চেয়ারম্যান নৌসাদ সিদ্দিকি অবশ্য বলেছেন, ‘‘ওই ব্যক্তির সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। এমন ঘটনার পিছনে কোনও চক্রান্ত থাকতে পারে। বিষয়টা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে আমরা আইনি পথে যেতে পারি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy