প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
রাজ্যে শেষ ২ দফার ভোটগ্রহণ আগামী ২৬ ও ২৯ এপ্রিল। তার আগে ২৩ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গে ৪টি সমাবেশ করার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। মালদহ, বহরমপুর, সিউড়ি এবং দক্ষিণ কলকাতায় সমাবেশ হওয়ার কথা। কিন্তু রাজ্যে হু হু করে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির পরিস্থিতি মাথায় রেখে এখন নতুন পরিকল্পনা বিজেপি-র। বড় সমাবেশ থেকে সরে গিয়ে ছোট ছোট সভার মাধ্যমে মোদীর বক্তৃতা সর্বত্র পৌঁছনোর পরিকল্পনা শুরু হয়েছে। রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে মোদীর সমাবেশ নিয়ে নতুন ভাবনা তৈরি হয়েছে।
পাশাপাশি মঙ্গলবার থেকেই বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার প্রচারসূচি কাটছাঁট হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে খবর। কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাবুলাল মারান্ডির ঘোষিত সফরসূচিতেও বদল আসতে পারে।
শেষ ২ দফায় রাজ্যের মোট ৬৯টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ। মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুরে কংগ্রেস ও আরএসপি প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে ভোটগ্রহণ স্থগিত রেখেছে নির্বাচন কমিশন। তবে মোদী শুক্রবারের সফরে সব আসনের জন্যই প্রচার করবেন। মোদীর সমাবেশে পুরোপুরি কোভিড বিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করতে হবে বলে প্রধানমন্ত্রীর অফিস নির্দেশ দিয়েছে বলে সোমবার দুপুরেই জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপি-র পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এর পরেই শুরু হয় নতুন পরিকল্পনা।
এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে প্রস্তাবিত ৪টি জায়গাতেই মোদী উপস্থিত থাকবেন কিন্তু সমাবেশ হবে সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে। মালদহ জেলার এক বিজেপি নেতা বলেন, “নির্বাচন কমিশন এবং প্রধানমন্ত্রীর অফিসের নিয়ম মেনেই সভার আয়োজন করা হচ্ছে। মালদহ বিএড কলেজের মাঠে মোদী'জি সভা করবেন। তবে কর্মী, সমর্থকদের উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। দূরত্ববিধি মেনে থাকবে দর্শকাসন। সেখানে সকলের জন্য মাস্ক পরাও বাধ্যতামূলক থাকবে। ঠিক হয়েছে জেলার অন্যান্য কেন্দ্র থেকে কর্মী, সমর্থকদের আসতে দেওয়া হবে না। তার পরিবর্তে জেলার ১২টি আসন এলাকাতেই জায়ান্ট স্ক্রিনের ব্যবস্থা থাকবে। মালদহ শহরেও একাধিক জায়গায় জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়ে ছোট ছোট সভা করা হবে।"
রাজ্য বিজেপি-র পক্ষে এই প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলন করে সবিস্তার পরিকল্পনা জানানো হবে। তবে গেরুয়া শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহের মতো বহরমপুর ও সিউড়ির সভা হবে। মোদী ওই দুই শহরে বক্তব্য রাখলেও সেটা শোনার ব্যবস্থা থাকবে মুর্শিদাবাদের ২২ এবং বীরভূমের ১১ বিধানসভা এলাকাতেই।
কলকাতার ক্ষেত্রে আরও বড় বদল হতে পারে নতুন পরিকল্পনায়। কলকাতায় সপ্তম দফায় ভোট রয়েছে দক্ষিণের কলকাতা বন্দর, ভবানীপুর, রাসবিহারী ও বালিগঞ্জ আসনে। ঠিক ছিল ভবানীপুরের নর্দার্ন পার্কে হবে মোদীর সমাবেশ। কিন্তু এখন যে পরিকল্পনা করা হয়েছে, তাতে মোদীর সভার জন্য মূল মঞ্চ বাঁধা হবে শহিদ মিনার ময়দানে। সেখানে তিনি বক্তব্য রাখলেও ভার্চুয়ালি তা শোনার ব্যবস্থা থাকবে দক্ষিণের পাশাপাশি উত্তর কলকাতার সব বিধানসভা এলাকায়। উত্তরের ৭ আসন চৌরঙ্গি, এন্টালি, বেলেঘাটা, জোড়াসাঁকো, শ্যামপুকুর, মানিকতলা, ও কাশীপুর-বেলগাছিয়ায় ভোটগ্রহণ অষ্টম দফায়।
পশ্চিমবঙ্গে হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। সোমবার রাতে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৮ হাজার ৪২৬ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৩৮ জনের। কলকাতার পরিসংখ্যানও উদ্বেগজনক। গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ২১১ জন। রাজ্য বিজেপি-র নেতাদের বক্তব্য, এই পরিস্থিতিতে বড় আকারে মোদীর সমাবেশ হলে রাজনৈতিক আক্রমণের মুখে পড়তে হতে পারে ভেবেই এই নতুন ভাবনা। কারণ, করোনা পরিস্থিতি মাথায় রেখে বামেরা আগেই সব বড় সভা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী রাজ্যের সব সফর বাতিল করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানিয়েছেন, কলকাতায় আর কোনও বড় সভা বা কর্মসূচি করবেন না। সর্বত্র বক্তৃতাও হবে ছোট। এই পরিস্থিতিতে মোদীর সমাবেশ বন্ধ করা নিয়ে গেরুয়া শিবিরের এক রাজ্য নেতার দাবি, "কারও আক্রমণের ভয়ে নয়। পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত। এমন পরিকল্পনা করা হয়েছে যাতে সাপও মরবে, লাঠিও ভাঙবে না। মোদী'জির বক্তব্য সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া গেলেও বড় সমাবেশের উদ্বেগ এড়ানো যাবে।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy