ফাইল চিত্র।
দলের শীর্ষ স্থানীয় নেতা বলে গিয়েছেন, করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শেষ হলে নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগের কাজ শুরু হবে। স্বাস্থ্য দফতরের মতে, যে গতিতে ভ্যাকসিনের কাজ চলছে, তাতে শেষ হতে হতে বছর তিনেক কেটে যাবে। এই পরিস্থিতিতে গাইঘাটার সভায় এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তৃতা সন্তুষ্ট করতে পারেনি মতুয়া ভোটারদের বড় অংশকে। তবে বিজেপি নেতা তথা হাবড়ার প্রার্থী রাহুল সিংহের মতে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘ব্যাগড়া’ না দিলে এত দিনে এ রাজ্যে নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগ হয়েই যেত। তাঁর আরও দাবি, উদ্বাস্তুরা নাগরিকত্ব পেয়েই গিয়েছেন। শুধু নাগরিকত্ব কার্ডটুকু হাতে পাওয়া বাকি। বিজেপি এ রাজ্যে ক্ষমতায় এলে তা-ও এক মাসের মধ্যে হয়ে যাবে।’’ রাহুল বিজেপির জাতীয় কর্ম সমিতির সদস্য। কিন্তু এ হেন মন্তব্য খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্যের উল্টো সুরে বলেই ব্যাখ্যা করছে তৃণমূল। তাদের মতে, ক্রমশ মতুয়া অধ্যুষিত কেন্দ্রগুলির ভোট সামনে আসছে বলে এ সব আজগুবি কথা বলতে হচ্ছে বিজেপিকে। জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘রাহুলবাবু ভাল করে লেখাপড়া করুন। কারণ, নাগরিকত্ব আইন করতে হলে প্রথমে এনপিআর করতে হয়। তারপরে এনআরসি। তারপরে সিএএ।’’ এ বিষয়ে তৃণমূলের ঘোষিত অবস্থান মতোই তিনি বলেন, ‘‘যাঁদের ভোটার কার্ড আছে, যাঁরা ভোট দেন— তাঁরা সকলেই ইতিমধ্যে এ দেশের নাগরিক।’’
এক সময়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি ছিলেন রাহুল। এ বার ভোটে দাঁড়িয়েছে হাবড়া থেকে। শুক্রবার ঠাকুরনগরে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে আসেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি বিপ্লব হালদার। বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে মিনিট চল্লিশ রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন রাহুল। পরে শান্তনুকে সঙ্গে নিয়ে হরিচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে নিয়ে প্রণাম করেন। শান্তনুকে পাশে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে রাহুল বলেন, ‘‘কেন্দ্র আইন তৈরি দিয়েছে (নয়া নাগরিকত্ব আইন)। কিন্তু তৃণমূল ব্যাগড়া দিয়েছে। যদি ওরা চাইত, নাগরিকত্ব কার্ড বিলি-বণ্টন এত দিনে হয়ে যেত। মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূলের নেতারা তা করতে দেননি।’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূল মতুয়া উদ্বাস্তুদের কাছে ভোট চায় কোন হিসেবে?’’
রাহুল বলেন, ‘‘নাগরিকত্ব অধিকার, নাগরিকত্ব কার্ড যদি করতে পারে, তা একমাত্র বিজেপি। আজকে শরণার্থীদের কোনও শক্তি জোর করে তাড়িয়ে দিতে পারবে না। কারণ, কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের নাগরিকত্ব দিয়ে দিয়েছে। এ বার কেবল নাগরিকত্বের কার্ড দেওয়া বাকি।’’ বিজেপি নেতার দাবি, এক সময়ে কেন্দ্র সরকার চিন্তা করেছিল, রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাত করে কার্ড দেবে। আমরা অনেকেই বলেছি, অপবিত্র হাত দিয়ে পবিত্র নাগরিকত্ব কার্ড বিলি না করতে। দু’দিন বাদে আমাদের সরকার আসছে। আমরাই বিলি করব। সরকার গঠনের এক মাসের মধ্যে নাগরিকত্ব কার্ড দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে।’’ প্রশ্ন উঠছে, যে আইন এখনও কার্যকর হয়নি, সেই আইনে এখনই শরণার্থীরা কী ভাবে নাগরিক হয়ে গেলেন? বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুর বলেন, ‘‘বিজেপি নেতারা ভোটের স্বার্থে মিথ্যা কথা বলছেন। আরও একবার ভাঁওতা দিচ্ছেন।’’ শান্তনুর বক্তব্য, ‘‘আগামী দিনে সিএএ কার্যকর হবে। তৃণমূল চেয়ে চেয়ে দেখবে, কী ভাবে আইন কার্যকর হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy