প্রতীকী ছবি।
এক কাপ চায়ে কি বরফ গলল!
রবিবার বিকেল সওয়া ৩ টে। মামার বাড়িতে হাজির হলেন ভাগ্নী। মামাকে ঢিপ করে প্রণামের পর শুরু হল কুশল বিনিময়। মামি নিয়ে এলেন এক কাপ লাল চা। চা-পান পর্ব মিটতেই ভাগ্নী রওনা হলেন কর্মি বৈঠকে। কিছুক্ষণ পর সেখানে পৌঁছলেন মামা। বললেন, ভাগ্নীকে জেতাতে সর্বশক্তি দিয়ে মাঠে নামতে হবে।
মামা-ভাগ্নী কেউই যেমন তেমন নন। দু’জনেই তারকা। ভাগ্নী সাঁওতালি সিনেমার মহানায়িকা বিরবাহা হাঁসদা। এ বার ঝাড়গ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী। মামা ছত্রধর মাহাতো। জনসাধারণের কমিটির প্রাক্তন নেতা তথা তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক। রক্তের সম্পর্কে মামা-ভাগ্নী না হলে কী হবে গ্রামতুতো সম্পর্কইবা কম কীসের। বিরবাহার মা চুনিবালা হাঁসদার বাপের বাড়ি বিনপুরের তেঁতুলডাঙা গ্রামে। ওই গ্রামে ছত্রধরের জেঠতুতো দিদির শ্বশুরবাড়ি। গ্রামতুতো দিদি-ভাইয়ের সম্পর্ক ছত্রধর ও চুনিবালার।
রবিবার দুপুরে আমলিয়ায় ছত্রধরের বাড়িতে মামা-ভাগ্নীর ‘কুশল বিনিময়ে’র নেপথ্যে রয়েছে অন্য সমীকরণ। এ দিন দুপুরেই বিপদের আঁচ পেয়েছিলেন বিরবাহা। জেলা কমিটির নির্বাচনী বৈঠক ডেকেছিলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু। সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন জঙ্গলমহলে তৃণমূলের নির্বাচনী সেনাপতি ছত্রধর। এরপরই ছত্রধরের বাড়িতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বিরবাহা। তিনি বলেন, ‘‘মামা আমার জন্য প্রচারে বেরোতে হবে।’’ ছত্রধর বলেন, ‘‘আমি তো সবসময় প্রস্তুত হয়েই আছি।’’ ছত্রধরকে বিরবাহা বলেন, ‘‘মামা আপনি না থাকলে কর্মী বৈঠক হবে কী করে?’’ ছত্রধর জানান, তাঁর সর্বক্ষণের ব্যবহারের জন্য ভাড়ার গাড়ি ভোটের কাজে টেনে নিয়েছে প্রশাসন। সেই কারণে এ দিন তিনি ঝাড়গ্রামের বৈঠকে যেতে পারেননি। তবে ভাগ্নীর ডাকে কর্মিবৈঠকে যাবেন বলে আশ্বস্ত করেন ছত্রধর। লালগড়ে ভাগ্নীর কর্মি-বৈঠকে ছত্রধর পৌঁছন নিরাপত্তারক্ষীর স্কুটির পিছনে চেপে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, ইউএপিএ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ছত্রধরের ভোটে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সমস্যা ছিল। ছত্রধর চেয়েছিলেন, তাঁর স্ত্রী নিয়তিকে ঝাড়গ্রাম অথবা গোপীবল্লভপুর আসনে প্রার্থী করা হোক। আশা পূরণ হয়নি। প্রার্থিতালিকা প্রকাশের পর আর আমলিয়া গ্রামের বাড়ি থেকে বেরোননি তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক। জেলা সভাপতি দুলাল অবশ্য বলছেন, ‘‘ছত্রধরদা ব্যক্তিগত কিছু সমস্যার জন্য এ দিন বৈঠকে আসতে পারবেন না বলে জানিয়েছিলেন।’’ শনিবার কলকাতায় রাজ্য নেতৃত্ব জেলার প্রার্থীদের তলব করেছিল। বিরবাহাও কলকাতায় গিয়েছিলেন। বিকেলে ফিরেই ঝাড়গ্রাম গ্রামীণের সাপধরায় কর্মিবৈঠক করেন বিরবাহা। পরে সন্ধ্যায় শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়েও কর্মীদের সঙ্গে একপ্রস্থ আলোচনা সারেন।
রবিবার দুপুরে অশনি সংকেত। বিকেলে মামার দুয়ারে ভাগ্নী। এক কাপ চায়ের মাঝে ভাগ্নীর আব্দার, ‘‘মামা, প্রচারে তোমাকে চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy