হামলা: আয়াষ পঞ্চায়েতের বেলেবাড়ি গ্রামে নলকূপ ভেঙে । নিজস্ব চিত্র।
ভোটের দিন থেকেই তেতে রয়েছে বীরভূমের ইলামবাজার। গণনার দিন এক বিজেপি সমর্থককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগও উঠেছে। এ বার ইলামবাজার থানার নহনা গ্রামে বিজেপিকে ভোট দেওয়ায় কিছু পরিবারের রেশন বন্ধ করে দেওয়ায় অভিযোগ উঠল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে , ঘুড়িষা পঞ্চায়েতের নহনা গ্রামের আদিবাসীপাড়ায় প্রায় ৫০ টি পরিবার রয়েছে। তাদের মধ্যে কিছু ঘর বাদে বেশির ভাগ পরিবারই তাদের সমর্থক বলে বিজেপি-র দাবি। ওই পরিবারগুলির অভিযোগ, মঙ্গলবার স্থানীয় রেশন দোকানে পাড়ার বেশ কয়েক জন মহিলা রেশন সামগ্রী নিতে গেলে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা তাঁদের বাধা দেন। রেশন ডিলারকে রেশন সামগ্রী দিতে নিষেধও করা হয়। এর পরে ওই মহিলাদের রেশন না দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, ওই পাড়ার একটি সাবমার্সিবল কল ও টিউবওয়েল ভেঙে দেয়া হয় বলেও বিজেপি-র অভিযোগ।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় গ্রামে। গ্রামবাসী আশা কিস্কু ,সুমিতা টুডু, সুমাই সরেনরা বলেন, ‘‘আমরা বিজেপি করি বলে ভোট শেষ হতেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আমাদের নানা ভাবে শাসিয়েছে। এ দিন থেকে আমাদের রেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, পানীয় জলের কলও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই প্রশাসন যেন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখে।’’ বিজেপি-র ইলামবাজার মণ্ডল সভাপতি চিত্তরঞ্জন সিংহের অভিযোগ, ‘‘ভোট মিটতে হিংসা শুরু করেছে তৃণমূল। বিজেপি কর্মীদের মারধর থেকে শুরু করে নানা ভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে।’’
যদিও এই প্রসঙ্গে ইলামবাজার ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ফজলুর রহমানের দাবি, ‘‘সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা। এমন সব সাজানো অভিযোগ তুলে বিজেপি কর্মীরা সহানুভূতি পেতে চাইছে এবং তৃণমূলকে বদনাম করতে চাইছে।’’ তবে, বিডিও (ইলামবাজার) মহম্মদ জসিমউদ্দিন মণ্ডল বলেন, ‘‘এ রকম একটি অভিযোগ আমার কাছেও এসেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং ওই গ্রামবাসীরা যাতে দু-এক দিনের মধ্যে রেশন পান, তার ব্যবস্থা করা হবে।’’
জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ভোট পরবর্তী হিংসা রোখার আর্জি জানিয়ে মঙ্গলবারই জেলাশাসক দেবীপ্রসাদ করণমের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি নেতারা। তার আগে জেলা পুলিশ সুপারের কাছেও একই আর্জি জানানো হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে। প্রশাসন বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছে।
এ দিন পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠী সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান, ছোটখাটো একাধিক ঘটনার খবর এসেছে। প্রতিটি থানা এলাকায় বাহিনী-সহ চারটি করে করে গাড়ি রাখা হয়েছে। সিনিয়ার অফিসার-সহ ওই গাড়িগুলি ঘুরছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমার ফোন খোলা ২৪ ঘণ্টা। খবর পেলেই সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ তৎপর।’’ উত্তজনা প্রশমনে রাজনৈতিক নেতাদের ডেকে বিভিন্ন থানায় শান্তি বৈঠক করা হচ্ছে বলেও এসপি জানিয়েছেন। দুবরাজপুর থানায় এ দিনই এমন বৈঠক হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy