এই দেওয়াল লিখন ঘিরেই গোলমালের সূত্রপাত। (ইনসেট) গুলিতে আহত মহম্মদ আবু বক্কর। রবিবার, হাওড়ার লিচুবাগানে —নিজস্ব চিত্র
দেওয়াল লিখনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে গোলমালে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল একদল সশস্ত্র দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। রবিবার বিকেলের এই ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা ছড়াল হাওড়ার নাজিরগঞ্জ এলাকার লিচুবাগানে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন লিচুবাগান বস্তির এক বাসিন্দা। তাঁকে দক্ষিণ হাওড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ওই ঘটনার পরেই এলাকার উত্তেজিত বাসিন্দারা মোটরবাইকে করে আসা তিন দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলে গণধোলাই দেয়। বাকিরা পালিয়ে যায়। উদ্ধার হয়েছে দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং চারটি মোটরবাইক। তৃণমূলের অভিযোগ, সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দেওয়া হাওড়ার এক মেয়র পারিষদের স্বামী মাসুদ আলম খান ওরফে গুড্ডুর লোকজন এই গুলি চালিয়েছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গুড্ডু।
স্থানীয় সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর থেকে দলীয় প্রার্থী নন্দিতা চৌধুরীর সমর্থনে
লিচুবাগান এলাকার বেগম রোকেয়া সরণিতে দেওয়াল লিখছিলেন তৃণমূলের কর্মীরা। ঘন বসতিপূর্ণ এলাকা বলে পরিচিত লিচুবাগান বস্তির লোকজন ভিড় করে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন সেই কাজ। বাসিন্দা মহম্মদ আনোয়ার জানান, ওই সময়ে চারটি মোটরবাইকে করে
এলাকার পরিচিত ছ’জন দুষ্কৃতী ওই জায়গায় আসে। প্রত্যেকটি মোটরবাইকে বিজেপির পতাকা লাগানো ছিল। অভিযোগ, ওই দলটি এসেই তৃণমূলের পতাকা ছিঁড়ে ফেলে, দেওয়াল লিখতে বাধা দেয়। এই নিয়ে উপস্থিত তৃণমূলের কর্মীদের সঙ্গে বচসা বেঁধে যায়। ওই সময়ে এক দুষ্কৃতী কোমর থেকে একটি ওয়ান শটার বার করে গুলি চালিয়ে বসে। সেই গুলি গিয়ে লাগে মহম্মদ আবু বক্কর নামে বস্তিরই এক বাসিন্দার হাতে। তাঁকে আন্দুল রোডের দক্ষিণ হাওড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, আবু অন্যান্য বাসিন্দার সঙ্গে সেখানেই দাঁড়িয়ে দেওয়াল লেখা দেখছিলেন। এক জন নিরীহ মানুষকে গুলিবিদ্ধ হতে দেখে বাসিন্দারা উত্তেজিত হয়ে যান। সকলে মিলে মোটরবাইকে চড়ে আসা দুষ্কৃতীদের তাড়া করেন। ছ’জনে দৌড়ে পালাতে গেলে তিন জনকে ধরে ফেলে জনতা। গণধোলাই দিয়ে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের কাছ থেকে দু’টি ওয়ান শটার উদ্ধার হয়েছে।
এ দিকে এ দিনই বিজেপির প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হয়েছে। দক্ষিণ হাওড়া কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী মনোনীত হয়েছেন গত লোকসভা নির্বাচনে দলের পরাজিত প্রার্থী রন্তিদেব সেনগুপ্ত। তৃণমূলের অভিযোগ, সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া গুড্ডু ওই কেন্দ্রে প্রার্থী হতে না পেরে এলাকার বাইরে থাকা দুষ্কৃতীদের ডাকিয়ে এনে গোলমাল করিয়েছে। এক তৃণমূল কর্মী বলেন, ‘‘গুড্ডু তৃণমূলে থাকাকালীন এই দুষ্কৃতীদের এলাকা ছাড়া করেছিল। বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পরে ওদের এলাকায় ঢোকার অনুমতি দিয়েছে। গুড্ডুর মদতে এই আক্রমণ হয়েছে।’’ একই দাবি হাওড়ার তৃণমূলের চেয়ারম্যান অরূপ রায়ের। তিনি বলেন, ‘‘এই সব দুষ্কৃতীকে গুড্ডু এলাকায় ঢুকিয়ে গোলমাল করেছে বলে শুনছি। পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।’’
গুড্ডু অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ওই দুষ্কৃতীদের আমিই তাড়িয়ে ছিলাম। ওরা এখন তৃণমূলের হাত ধরে এলাকায় ঢুকেছে। এটা তৃণমূলের দলীয় কোন্দল।’’
হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, “তিন পলাতকের খোঁজে এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার সত্যাসত্য তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy