পথে প্রভাত দাস। নিজস্ব চিত্র।
গ্রাম থেকে নিতান্তই পাড়া-গাঁ। দলীয় প্রার্থী পৌঁছতে না পারলেও পৌঁছে যান তিনি। পাকা চুল-দাড়ির ৭০ বছরের ‘তরুণের’ দাবি, ‘‘জেতা-হারা পরের কথা, দলকে ভালবাসলে মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়াটা জরুরি।’’
ভোট-প্রচারে ইতিমধ্যেই কালনা ২ ব্লকের প্রায় ৫০টি গ্রাম ঘুরে ফেলেছেন প্রভাত দাস। ঠা-ঠা রোদে মাইলের পর মাইল চলেছেন সাইকেলে। বাহনের হাতলে কংগ্রেস, সিপিএম, আইএসএফের পতাকা বাঁধা। নীচে পোস্টারে লাল কালিতে হাতে লেখা, ‘পূর্বস্থলী দক্ষিণ কেন্দ্রের সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী অভিজিৎ ভট্টাচার্যকে জয়যুক্ত করুন’।
অকৃতদার কংগ্রেসকর্মী প্রভাতবাবু দীর্ঘদিন ধরে কালনার আটঘোরিয়া-সিমলন পঞ্চায়েতের দলীয় সভাপতি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দলঅন্ত প্রাণ প্রভাতবাবুকে এলাকার নানা কর্মসূচিতে দেখা যায়। দল প্রার্থী দেওয়ার বহু আগে, মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে ওই বিধানসভা কেন্দ্রে প্রচার শুরু করেছেন তিনি। প্রার্থীর নাম ঘোষণার পরে, জুড়েছে পোস্টারটি। প্রভাতবাবু জানান, সকাল সাড়ে ৭টায় বাড়ি থেকে বেরোন তিনি। ফিরতে শেষ বিকেল। চৈত্রের দুপুরে দরদর করে ঘাম হলেও সাদা পাঞ্জাবি-ধুতি পরে তিনি অক্লান্ত। পথের খোরাক সঙ্গের ঝোলায় রাখা মুড়ি, শসা, নকুলদানা, কাঁচালঙ্কা।
অনেকেই তাঁকে দেখে চায়ের দোকানে গলা ভেজানোর ডাক দেন। দু’দণ্ড বসার ফাঁকে অনর্গল কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের ক্ষতিকারক দিক, বেকারদের এ রাজ্যে দুর্দশার কথা তুলে ধরে সংযুক্ত মোর্চাকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানান তিনি। বুধবার সুলতানপুর পঞ্চায়েতের গোপালপুর, ইসবপুর, তেঁতুলপুকুর, বেলেরহাটা গ্রামে ঘুরতে দেখা যায় এই নেতাকে। প্রভাতবাবুর দাবি, বেগপুর, নাদনঘাট, সিমলন-আটঘোরিয়া, ইসলামপুর, কাদপুর, কাঁকুরিয়া, সহজপুর, ন’পাড়া-সহ ৫০টির বেশি গ্রাম ঘোরা হয়ে গিয়েছে। সাইকেলে যেতে যেতে যে এলাকায় সংযুক্ত মোর্চার প্রচার চোখে পড়ে না, সেখানে ব্যাগ থেকে কঞ্চি আর তিন দলের পতাকা বার করে সাঁটাতে শুরু করেন তিনি। কংগ্রেস কর্মীদের দাবি, শুধু নিজের প্রচার নয়, দলের প্রার্থী কোথায় প্রচারে যাচ্ছেন প্রতিদিন তার খোঁজখবর রাখেন প্রভাতবাবু। দিনে কোনও না কোনও সময় প্রার্থীর সঙ্গে প্রচারেও কিছুক্ষণ সময় কাটান তিনি।
এমন উদ্যমের কারণ? প্রভাতবাবু বলেন, ‘‘সংযুক্ত মোর্চার তরফে প্রার্থীকে জেতানোর ব্যাপারে প্রচারে চলছে। তবে সময় কম। প্রচারের গাড়ি যেখানে যেতে পারছে না, আমি চেষ্টা করছি, সেখানে পৌঁছতে।’’ ওই কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী অভিজিৎ ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘দলের প্রতি গভীর ভালবাসা না থাকলে কেউ এ ভাবে এগিয়ে আসেন না। এই বয়সে উনি যে ভাবে পরিশ্রম করছেন তাতে আমরা কৃতজ্ঞ। উনি কংগ্রেসের সম্পদ।’’
প্রচারের মাঝে বিরোধীদের টিপ্পনীও শুনতে হয়। তবে কাউকে ‘জয় সীতা-রাম, কাউকে ‘বন্দেমাতরম’ বলে এগিয়ে চলেন, একরোখা প্রভাতবাবু। ‘‘একলা চলতে ভয় পাই না’’, সপাট জবাব তাঁর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy